সুস্থ থাকতে গেলে সঠিকভাবে খাওয়া-দাওয়া করা জরুরি। নাহলে শরীরে দেখা দিতে পারে পুষ্টির অভাব। সামান্য পরিশ্রমেই গ্রাস করতে পারে ক্লান্তি, অবসাদ। সঙ্গে হানা দেবে একাধিক অসুখও। তবে শুধু খেলেই চলবে না। কী খাচ্ছেন, কতটা খাচ্ছেন, কীভাবে খাচ্ছেন-এই সব কিছুর উপরই সচেতন থাকা জরুরি। হাতের সামনে যা রয়েছে তাই খেয়ে নিচ্ছেন কিংবা খিদে না পেলেও খেয়ে ফেলছেন– এমনটা মোটেও স্বাস্থ্যকর অভ্যাস নয়।
অনেকেরই অভিযোগ রয়েছে পেট ভরলেও খাওয়া থামাতে পারেন না। কখনও অভ্যাস, কখনও সামাজিক চাপ, আবার কখনও শুধুই চোখের লোভে প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি খেয়ে ফেলেন। আর এর ফলেই বাড়ে ওজন, হজমের সমস্যা, এমনকি নানা রোগের ঝুঁকিও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাওয়ার সময় শরীর নিজেই কিছু ইঙ্গিত দেয়, যা বুঝিয়ে দেয়—পেট ভরে গেছে, এখন আর খাওয়ার দরকার নেই। এই সংকেতগুলো চিনতে পারলে সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় খাওয়ার পরিমাণ।
আরও পড়ুনঃ মেনোপজের পর বাড়ে হৃদরোগের ঝুঁকি! হার্ট অ্যাটাকের বিপদ এড়াতে মহিলাদের কোন কোন লক্ষণ নজরে রাখা জরুরি?
১. নাক প্রথম সঙ্কেত দেয়: খাওয়ার সময়ে হঠাৎ নাক দিয়ে জল ঝরা শুরু হলে বুঝতে হবে শরীর 'রেস্ট আন্ড ডাইজেস্ট' মোডে চলে গেছে। অর্থাৎ খাবার হজমের প্রক্রিয়া সক্রিয় হয়েছে, শরীর ইঙ্গিত দিচ্ছে—এখন যথেষ্ট খাওয়া হয়েছে।
২. খাবারের প্রতি মনোযোগ কমে যাওয়া: শুরুর দিকে খাবারে যতটা মনোযোগ থাকে, পেট ভরতে শুরু করলেই সেটা কমতে শুরু হয়। তখন খাবারের বদলে আশেপাশে কী হচ্ছে, কথোপকথন কিংবা অন্য বিষয়ে মন চলে যায়।
৩. অস্থিরতা বা শরীর নাড়াচাড়া করা: খাওয়ার মাঝেই চেয়ার সরানো, সিটে নড়াচড়া করা বা অজান্তে ভঙ্গি পাল্টানো আসলে শরীরের সংকেত যে পেট ভরতে শুরু করেছে।
৪. কাঁটা-চামচ নিচে রাখা: খাওয়ার গতি হঠাৎ ধীর হয়ে যায়। অনিচ্ছাকৃতভাবে কাঁটা-চামচ নামিয়ে রাখা বা হাত পিছনে টেনে নেওয়া আসলে বোঝায় শরীর থামতে চাইছে।
৫. খাবারের স্বাদ কমে যাওয়া: যে খাবার শুরুতে সুস্বাদু মনে হচ্ছিল, সেটি আর আগের মতো লাগছে না। মুখের স্বাদ কমে আসা মানেই শরীর বলছে—‘এখন যথেষ্ট হয়েছে।’

৬. মন অন্যদিকে চলে যাওয়া: খাওয়ার মাঝে হঠাৎ ভবিষ্যতের পরিকল্পনা বা টু-ডু লিস্ট নিয়ে ভাবতে শুরু করলে সেটিও একটি সংকেত যে পেট প্রায় ভরে গেছে।
৭. আর বাড়তি খাবারের দিকে নজর না দেওয়া: খাওয়ার সময় টেবিলে অন্য খাবারের দিকে লোভী দৃষ্টি না দেওয়া বা নতুন করে খাবার নেওয়ার ইচ্ছা না হওয়া শরীরের একপ্রকার 'স্টপ সাইন'।
৮. অনিচ্ছাকৃতভাবে গভীর শ্বাস নেওয়া: খাওয়ার সময় হঠাৎ গভীর শ্বাস নেওয়া সবচেয়ে পরিষ্কার সংকেত—পেট ভরে গেছে, আর খাবার প্রয়োজন নেই।
কেন এই ইঙ্গিতগুলো জানা জরুরি
খাবার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার প্রধান কারণ হল—শরীরের দেওয়া সংকেতকে উপেক্ষা করা। আমরা অনেকেই ‘প্লেট খালি না হওয়া পর্যন্ত’ খেয়ে যাই। কিন্তু এই অভ্যাস ধীরে ধীরে শরীরের ক্ষতি করে। তাই খাওয়ার সময় শরীরের প্রতিটি ইঙ্গিতকে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি।
