স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বক চান? রোজ ৩-৪ লিটার জল খান। শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে চান? তাতেও বেশি পরিমাণে জল খান। হজমশক্তি ভাল হোক চাইছেন? তাতেও জল। যেন হাজারো সমস্যার ওয়ানস্টপ সলিউশন হল জল। আর কথাতেই তো বলে, জল মানেই জীবন। কিন্তু যা জীবন দেয়, সেটাই কি অজান্তে জীবন কাড়ছে? 

ভাল স্বাস্থ্যের জন্য যে জল এত প্রয়োজনীয়, সেই জলই কিনা বিষ হয়ে ক্ষতি করছে লিভারের। লিভারকে ভাল রাখতে জল ভীষণই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অপরিষ্কার জল, রাসায়নিক যুক্ত জল, সিসা বা অন্য ভারী ধাতু মেশা জল খেলে সেটা নিশ্চুপে ক্ষতি করে চলেছে লিভারের। বলাই বাহুল্য, এই জিনিসগুলোর একটিও খালি চোখে দেখা যায় না। কিন্তু অজান্তেই এই দূষিত জল পান করলে তা লিভারের উপকারের বদলে অপকার করছে, যা ঘুরে ফিরে স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে। লিভারের ডিটোক্সিফিকেশন ক্ষমতাকে হ্রাস করে দেয় দূষিত জল। 

চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতে জলবাহিত রোগ অপরিচিত, বা নতুন কোনও বিষয় নয়। কিন্তু দিন দিন তা বাড়ছে। বাড়ছে জীবনের ঝুঁকিও। 

জল যেমন শরীরকে আর্দ্র রাখে, তেমনই হজমে সাহায্য করে, টক্সিন দূর করে শরীর থেকে। তবে চিকিৎসকদের মতে, জল খাওয়ার আগে যাচাই করতে হবে আপনি দূষিত জল খাচ্ছেন কিনা। দূষিত, অপরিষ্কার জল খেলে হুহু করে বেড়ে যায় হেপাটাইটিস এ এবং হেপাটাইটিস ই হওয়ার সম্ভাবনা। এই জীবাণু একবার শরীরে ঢুকে পড়ার অর্থ হল লিভারের দফারফা হওয়া। এই রোগ হলেই চোখ হলদে হয়ে যায়, মূত্রের রং বদলে গাঢ় হলুদ বা কালচে হলুদ হয়ে যায়। সঙ্গে পেট ব্যথা, পেটে জল জমার মতো সমস্যা এবং লক্ষণ তো আছেই। 

কিছু ক্ষেত্রে লিভার নিজে থেকে ক্ষতি সারিয়ে ঠিক হয়, কিছু ক্ষেত্রে ইলফেকশন এতটাই ছড়িয়ে পড়ে যে লিভারের কোষ নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে অ্যাকিউট লিভার ফেলিওর পর্যন্ত হতে পারে। এমনকী হতে পারে মৃত্যুও। 

দূষিত হলে থাকা অ্যামিবার কারণে অ্যামিওবাইসিস হতে পারে, যা গিয়ে সেই লিভারের ক্ষতি করে। এছাড়া টাইফয়েড, কলেরা, ইত্যাদি তো আছেই। 

তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, জল হয় সবসময় ফুটিয়ে ছেঁকে খাওয়া উচিত। নয়তো পিউরিফায়ার ব্যবহার করে শুদ্ধ করেই জল পান করা উচিত। ভাল থাকতে কেবল জল খেলেই হবে না, প্রয়োজন পরিষ্কার, বিশুদ্ধ জল খাওয়ার। তবেই কমবে লিভারের বিপদের ঝুঁকি।