প্রযুক্তির জগতে এল চমকে দেওয়া এক নতুন আবিষ্কার! চীনের ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি-এর গবেষকরা তৈরি করেছেন এমন এক অতি পতলা কনট্যাক্ট লেন্স যা চোখে পরলে সম্পূর্ণ অন্ধকারেও আপনি পরিষ্কার দেখতে পারবেন। এই লেন্সগুলোতে ব্যবহৃত হয়েছে বিশেষ ন্যানোফোটোনিক পদার্থ যা ইনফ্রারেড বা তাপ বিকিরণ শনাক্ত করতে সক্ষম। সাধারণ চোখে অদৃশ্য এই আলোকে লেন্সটি দৃশ্যমান সংকেতে রূপান্তর করে। ফলে ব্যবহারকারী সম্পূর্ণ অন্ধকারেও স্পষ্ট দেখতে পান।
আরও অবাক করা বিষয় হল, এই লেন্সগুলো চোখ বন্ধ অবস্থাতেও কাজ করতে পারে! ইনফ্রারেড রশ্মি বা শরীরের তাপ বিকিরণ শনাক্ত করে সেটি সরাসরি রেটিনায় বা একটি সংযুক্ত ডিভাইসে ছবি আকারে প্রেরণ করতে পারে।
আরও পড়ুনঃ চুপিসারে শরীরে বিষ ছড়াচ্ছে ইউরিক অ্যাসিড! ঘরোয়া সহজ কৌশলই হতে পারে মোক্ষম ওষুধ, রইল টিপস
গবেষক দল জানাচ্ছেন, প্রথমে এই প্রযুক্তির অনুপ্রেরণা এসেছিল সামরিক ও চিকিৎসা কাজে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে। তবে ভবিষ্যতে এটি বিপদজনক পরিস্থিতিতে উদ্ধারকর্মীদের সহায়তা, নিরাপত্তা বাহিনীর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি, এমনকী দৃষ্টিহীন জন্য রাতের আলোয় পথচলার সুবিধা এনে দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি এই লেন্স বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করা যায়, তাহলে তা বদলে দিতে পারে রাতের দৃষ্টি ও সুরক্ষা প্রযুক্তির পুরো ভবিষ্যৎ।

গবেষক দলের মতে, লেন্সটি এতটাই সংবেদনশীল যে এটি মানুষের দেহের তাপমাত্রা বা চারপাশের ক্ষীণ আলোতেও কাজ করতে পারে। ভবিষ্যতে এটি উদ্ধারকর্মী, দমকল বাহিনী কিংবা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত কর্মীদের জন্যও আশীর্বাদ হয়ে উঠতে পারে।
বর্তমানে বিজ্ঞানীরা এর নিরাপত্তা, স্থায়িত্ব এবং দীর্ঘসময় ব্যবহারে চোখের ওপর প্রভাব নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন। তবে তাঁরা আশাবাদী, খুব শিগগিরই এই প্রযুক্তি পরীক্ষাগার থেকে বেরিয়ে বাস্তব জীবনে ব্যবহারের উপযোগী হয়ে উঠবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রযুক্তি শুধু চিকিৎসাশাস্ত্রেই নয়, মানব সভ্যতার অগ্রগতির ইতিহাসেও মাইলফলক হয়ে থাকবে।অন্ধকার থেকে রঙিন আলোকিত জগতে ফেরার এই যাত্রা নিঃসন্দেহে মানবজাতির জন্য এক অভূতপূর্ব সাফল্য। বিজ্ঞানীরা ফের একবার দেখিয়ে দিলেন, অসম্ভবকে সম্ভব করার ক্ষমতা প্রযুক্তির হাতেই নিহিত।
