আজকাল ওয়েবডেস্ক: ‘সিরিয়াল কিলার’ শব্দের অর্থ এখন অনেকেই জানেন। এমন খুনি যাঁরা পরপর খুন করে যান। এমন চরিত্রের কথা শুনলেই মাথায় আসে ভয়ানক চেহারার কোনও বিকৃতমনষ্ক ব্যক্তি। কিন্তু এক সাধারণ গৃহবধূ টাকার লোভে এমন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন সেটা কল্পনা করতে পারেননি অনেকেই। এক দু’জন নন এমন সিরিয়াল কিলার বধূর হাতে প্রাণ হারালেন ১১ জন। ঘটনাটি ঘটেছে ইরানে।

অভিযুক্ত মহিলার নাম কোলসুম আখবারি। কিন্তু তাঁর ভয়ানক কাণ্ডের জন্য তাঁকে ডাকা হচ্ছে ‘ব্ল্যাক উইডো’ নামে। তদন্তকারীদের অভিযোগ, তিনি গত ২২ বছরে নিজের ১১ জন প্রাক্তন স্বামীকে হত্যা করেছেন। দ্বাদশ স্বামীকে হত্যার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হন তিনি। আর তাতেই ধরা পড়েন মহিলা। দেশটির ইতিহাসে অন্যতম জটিল ধারাবাহিক খুনের মামলাগুলির মধ্যে এটি অন্যতম বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
আরও পড়ুন: ‘স্তনদুগ্ধ আইসক্রিম’ খেতে হুড়োহুড়ি বড়দেরও! কত দাম? কোথায় পাওয়া যাবে এই স্বাদ?
পুলিশের অভিযোগপত্রে দাবি করা হয়েছে, ৫৭ বছরের আখবারি ২০০০ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে বয়স্ক পুরুষদের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতেন। বিয়ের কিছুদিন পরে গোপনে তাঁদের হত্যা করতেন, যাতে সম্পত্তি ও যৌতুকের অর্থ হাতিয়ে নেওয়া যায়। অভিযোগ ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তাঁর সর্বশেষ স্বামী আজিজুল্লা বাবায়িকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি। বাবায়ির সন্তানদের বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হয়। কাকতলীয় ভাবে সেই সময়ই এক পারিবারিক বন্ধু তাঁদের জানান এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে অভিযুক্ত মহিলার প্রাক্তন স্বামীদের সঙ্গে। এই খবর পাওয়ার পরেই আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হয়। তাতেই বেরিয়ে আসে কোলসুমের অতীতের এক দীর্ঘ অপরাধের তালিকা।
আরও পড়ুন: ছেলের শুক্রাণুতে সন্তানধারণ করলেন ৭০-এর অভিনেত্রী! সন্তান না নাতি? তুমুল বিতর্ক
কোলসুমের হাতে নিহত এক ব্যক্তির মেয়ে আদালতে জানিয়েছেন, কোলসুম নাকি পানীয়ের সঙ্গে হৃদরোগের ওষুধ মিশিয়ে দিতেন, যাতে মৃত্যুটা স্বাভাবিক দেখায়। তাছাড়া মৃতের স্ত্রীকেই সন্দেহ করা পুলিশের পক্ষে কঠিন হত। ফলে সেই সময় পুলিশও হত্যার প্রমাণ খুঁজে পেত না।
গোটা বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই ভুক্তভোগীদের পরিবার কোলসুমের মৃত্যুদণ্ডের দাবি তুলেছে। এতো কিছুর পরেও অবশ্য নিজের অপরাধ মানতে নারাজ অভিযুক্ত মহিলা। আখবারির আইনজীবী দাবি করেছেন তিনি মানসিক ভাবে অসুস্থ। এমনকী তাঁর মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার আবেদনও করেছেন। তবে এক নিহতের উত্তরাধিকারী এই দাবি মানতে নারাজ। সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেছেন, “এত সূক্ষ্ম পরিকল্পনা করে এত মানুষকে হত্যা করা কোনও মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তির পক্ষে সম্ভব নয়।”

অবশেষে দীর্ঘ তদন্তের শেষে চলতি মাসেই শুরু হয়েছে বিচার। কিন্তু এর মধ্যেই তৈরি হয়েছে অন্য একটি বিতর্ক। যত দেরি হচ্ছে, ততই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির ক্ষোভ বাড়ছে। কারণ সোশ্যাল মিডিয়ায় এই মর্মান্তিক মামলাটি নিয়ে হাসি-ঠাট্টা চলছে।