অনেকের শরীরে ছোট–বড় জন্মচিহ্ন থাকে। কপালে, হাতে বা কারও পায়ে কিংবা পিঠে জন্মদাগ দেখা যায়। সাধারণভাবে আমরা এগুলোকে ত্বকের স্বাভাবিক দাগ হিসেবেই জানি। কিন্তু ধর্মীয় বিশ্বাস ও আধ্যাত্মিক ধারণায় বলা হয়, এই জন্মচিহ্নের সঙ্গে নাকি পূর্বজন্মের নানা রহস্য জড়িয়ে থাকে। অনেকেই মনে করেন, জন্মচিহ্ন অতীত জীবনের কর্ম, অভিজ্ঞতা বা অসমাপ্ত গল্পের ইঙ্গিত দেয়।

প্রচলিত বিশ্বাস, জন্মচিহ্ন কোথায় রয়েছে তা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, মাথা বা কপালে জন্মচিহ্ন থাকলে বলা হয় সেই ব্যক্তি পূর্বজন্মে জ্ঞানী বা নেতৃত্বের ভূমিকায় ছিলেন। এই ধরনের মানুষ বর্তমান জীবনেও বুদ্ধিমান, আত্মবিশ্বাসী এবং সিদ্ধান্ত নিতে পারদর্শী হন বলে বিশ্বাস করা হয়।

বুকে জন্মচিহ্ন থাকলে তা আবেগ ও সম্পর্কের সঙ্গে যুক্ত। বলা হয়, পূর্বজন্মে ভালবাসা, বিচ্ছেদ বা গভীর আবেগের অভিজ্ঞতা ছিল। তাই এই জীবনে এমন মানুষ খুব সহজে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন বা সম্পর্ককে খুব গুরুত্ব দেন।

হাতে জন্মচিহ্ন থাকলে তা কর্ম ও দক্ষতার প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। বিশ্বাস অনুযায়ী, এই মানুষরা পূর্বজন্মে শিল্পী, কারিগর, চিকিৎসক বা সেবামূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ফলে বর্তমান জীবনেও তাঁদের মধ্যে কাজ শেখার আগ্রহ, সৃজনশীলতা বা পরিশ্রমী মনোভাব দেখা যায়।

পায়ে জন্মচিহ্ন থাকলে তা যাত্রা বা ঘোরাঘুরির ইঙ্গিত বলে মনে করা হয়। বলা হয়, পূর্বজন্মে এই মানুষরা অনেক ভ্রমণ করেছেন বা এক জায়গায় বেশিদিন ছিলেন না। তাই বর্তমান জীবনেও তাঁদের ঘুরে বেড়ানোর নেশা বা নতুন জায়গা দেখার ইচ্ছা প্রবল হয়।

পিঠে জন্মচিহ্ন থাকলে আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যায় বলা হয়, এটি পূর্বজন্মের কষ্ট, দায়িত্ব বা বিশ্বাসঘাতকতার স্মৃতি বহন করে। এমন মানুষ জীবনে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলেও মানসিকভাবে শক্ত হন।

গলা বা ঘাড়ে জন্মচিহ্ন থাকলে তা কথা বলা, সত্য প্রকাশ বা নিজের অনুভূতি চাপা দেওয়ার পূর্বজন্মের অভিজ্ঞতার সঙ্গে যুক্ত বলে ধরা হয়।

তবে বিজ্ঞান অনুযায়ী জন্মচিহ্ন তৈরি হয় ত্বকের রঙের কোষ বা রক্তনালীর কারণে। এর সঙ্গে পূর্বজন্মের কোনও প্রমাণ নেই। তবুও বিশ্বাসের দিক থেকে অনেকেই মনে করেন, জন্মচিহ্ন মানুষের জীবনের গভীর কোনও গল্পের ইঙ্গিত দেয়। সবশেষে বলা যায়, জন্মচিহ্নের এই ব্যাখ্যাগুলি পুরোপুরি বিশ্বাস ও ধারণার উপর নির্ভরশীল। কেউ এগুলোকে কৌতূহল হিসেবে দেখেন, কেউ আবার জীবনের অর্থ খোঁজার এক অন্য দৃষ্টিভঙ্গি হিসেবে গ্রহণ করেন।