বর্তমানে সকলেই ওজন কমাতে এবং সুস্থ-সুন্দর ত্বক পেতে তৎপর। নানা ডায়েট, ব্যায়াম, ওষুধের চেষ্টা করেও কাঙ্ক্ষিত ফল মেলে না অনেক সময়। অথচ রান্নাঘরের একটি সাধারণ মশলাই হতে পারে এর প্রাকৃতিক সমাধান—দারচিনি। এটি শুধু খাবারের স্বাদ বাড়ায় না, বরং ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং ঝকঝকে ত্বকের জন্যও এক অসাধারণ উপাদান।

মেটাবলিজম বাড়ায়
দারচিনিতে থাকা সিনাম্যাল্ডেহাইড এবং পলিফেনল শরীরের ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বাড়ায়। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং শরীরে জমে থাকা চর্বি দ্রুত পোড়ে।

ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে
দারচিনি রক্তে গ্লুকোজ স্থিতিশীল রাখে, ফলে বারবার খিদে পায় না। এতে ক্যালোরি গ্রহণ স্বাভাবিকভাবেই কমে যায়।

ফ্যাট বার্নিং-এ সহায়ক
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্রতিদিন ১.৫ গ্রাম দারচিনি খেলে তা কোমরের মাপ এবং বিএমআই কমাতে সাহায্য করে।

দারচিনি কীভাবে ত্বককে উজ্জ্বল করে?
রক্ত পরিষ্কার করে
দারচিনির জল শরীরকে ডিটক্সিফাই করে। রক্ত বিশুদ্ধ হলে ত্বকে আসে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা।

অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণ
দারচিনির অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান ব্রণ, ফুসকুড়ি ও ত্বকের অন্যান্য সংক্রমণ কমায়।

হজমশক্তি উন্নত করে
ভাল হজমের ফলে শরীরে টক্সিন জমে না, ফলে ত্বক থাকে স্বাস্থ্যকর এবং দীপ্তিময়।

দারচিনি খাওয়ার উপায়
 দারচিনির জল
১.৫ কাপ জলে এক টুকরো ছোট দারচিনি স্টিক, কিছু কেশর এবং শুকনো গোলাপের পাপড়ি দিন।
১০ মিনিট ফুটিয়ে ছেঁকে নিন।
সকালে খালি পেটে পান করুন।

দারচিনি- মধু ড্রিঙ্ক
১/৪ চা চামচ দারচিনি গুঁড়ো গরম জলে মিশিয়ে নিন।
এর সঙ্গে ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে পান করুন।
এটি মেটাবলিজম বাড়ায়। ত্বককে রাখে আর্দ্র এবং সতেজ।
দারচিনি খাওয়ার সময় যা খেয়াল রাখবেন
বেশি পরিমাণে দারচিনি খাওয়া লিভারের ক্ষতি করতে পারে। তাই দিনে সর্বোচ্চ ১-১.৫ গ্রাম এর বেশি খাবেন না।
গর্ভবতী মহিলা বা যাঁরা বিশেষ কোনও ওষুধ খান, তাঁরা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে দারচিনি খাবেন।

দারচিনি একটি প্রাচীন ভেষজ, যা আজও সমান কার্যকর। এটি শুধু ওজন কমায় না, বরং রক্ত পরিষ্কার করে, হজমশক্তি বাড়ায় এবং ত্বককে ভিতর থেকে পুষ্টি জোগায়। তবে সব সময় সীমিত পরিমাণে এটি খাওয়া উচিত। নিয়মিত এবং সঠিকভাবে গ্রহণ করলে দারচিনি হতে পারে মেদহীন চেহারা এবং ঝকঝকে ত্বকের প্রাকৃতিক সিক্রেট।

এছাড়াও দারচিনি খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে ভাল কোলেস্টেরল বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায়, যা টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। দারচিনি রক্ত পাতলা করে এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, যা শরীরের শক্তি বৃদ্ধি, মানসিক সতেজতা দেয়। এর অ্যান্টিভাইরাল এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ, সর্দি-কাশি এবং গলা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।