আমাদের আশেপাশে এমন অনেক ভেষজ রয়েছে যেগুলো শরীর-স্বাস্থ্য ভাল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যার মধ্যে অন্যতম হল ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরা। শরীরে নানা প্রয়োজনীয় পুষ্টির জোগান দিতে হোক কিংবা অসুখ-বিসুখ সারিয়ে তুলতে অ্যালোভেরা অতুলনীয়। এটি খাবার-পানীয় হিসেবে যেমন কার্যকর, তেমনি বাহ্যিকভাবেও ব্যবহারযোগ্য।
অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী নানা ধরনের ভিটামিন ও খনিজের খুব ভাল উৎস। ভিটামিন-এ, সি, ই, ফলিক অ্যাসিড, বি-১, বি-২, বি-৩ (নিয়াসিন) ও ভিটামিন বি-৬ যুক্ত এই ভেষজ। অল্প কিছু উদ্ভিদের মধ্যে ঘৃতকুমারী একটি, যাতে ভিটামিন বি-১২ আছে। এতে ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, জিঙ্ক, ক্রোমিয়াম, সেলেনিয়াম, সোডিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম, কপার ও ম্যাঙ্গানিজও রয়েছে।
*রোগ প্রতিরোধ: অ্যালোভেরা শরীরের প্রাকৃতিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সক্ষম, দেহের ভারসাম্য রক্ষা করে। শারীরিক ও মানসিক চাপ মোকাবিলার পাশাপাশি পরিবেশগত দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব থেকেও দেহকে সুরক্ষা দেয় ঘৃতকুমারী।
আরও পড়ুনঃ ভিটামিন এ-এর খনি! এই সবজি নিয়মিত খেলেই তরতরিয়ে কমবে ওজন, মারণ রোগ নিয়ে থাকবে না চিন্তা
*হজমে সহায়ক: হজমের সমস্যা থেকে শরীরে অনেক রোগ বাসা বাঁধে। তাই সুস্বাস্থ্যের জন্য শরীরের হজম ক্ষমতা ঠিক রাখা জরুরি। পরিপাকযন্ত্রকে পরিষ্কার করে হজম শক্তি বাড়াতে ঘৃতকুমারী অত্যন্ত কার্যকর। নিয়মিত অ্যালোভেরার রস খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়রিয়া দুই ক্ষেত্রেই উপকার পাবেন। এছাড়াও ঘৃতকুমারীর রস কৃমি হওয়ার আশঙ্কা দূর করে।
*দূষণ মুক্তি: ঘৃতকুমারীর রস খুবই আঠালো যা খাদ্যনালীর ভেতরে দিয়ে দেহের ভেতরে প্রবেশের সময় থেকেই পুরো পরিপাকতন্ত্রকে পরিষ্কার করতে শুরু করে। এই রস দেহের আভ্যন্তরীণ নানা দূষিত উপাদান শুষে নিয়ে মলাশয় দিয়ে বের হয়ে যায়। ফলে দেহকে ভেতর থেকে দূষণমুক্ত করতে ঘৃতকুমারীর তুলনা নেই।

*ত্বক ও চুলের মহৌষধ: আজকাল অল্প বয়স থেকেই চুল, ত্বকের হাল খারাপ হতে থাকে। যার জন্য অ্যালোভেরা ব্যবহার করলে উপকার পাবেন। আধুনিক প্রসাধনী সামগ্রীর অন্যতম কাঁচামাল হিসেবে অ্যালোভেরা ব্যবহার করা হয়। নানা ক্ষত সারিয়ে তোলা থেকে ত্বকের নানা সমস্যা প্রতিরোধে সহায়ক অ্যালোভেরা। চুলের পুষ্টি জোগাতে এবং জেল্লা বাড়াতেও কার্যকরী ঘৃতকুমারী।
*প্রদাহ দূর করে: শরীরে নানা ধরনের প্রদাহ দূর করতে কার্যকরী ঘৃতকুমারী। এতে বি-সিসটারোল সহ এমন ১২টি উপাদান আছে যা শরীরে প্রদাহ তৈরি হওয়া আটকায়। ঘৃতকুমারীর এসব গুণ হাত-পায়ের জয়েন্টের জড়তা দূর করে এবং গাঁটের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
*ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে অ্যালোভেরা। নিয়মিত ঘৃতকুমারীর রস খেলে বাড়তি মেদ ঝরনে। এছাড়া শরীর দূষণমুক্ত হওয়ার কারণে কর্মশক্তিও বজায় থাকবে।
