আজকাল প্রায়ই অনলাইন প্রতারণার খবর শিরোনামে উঠে আসে। প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে অনেকেই বিশাল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন। আর এবার সাইবার অপরাধের দুনিয়ায় নয়া চক্রের খোঁজ মিলল।অনলাইন প্রতারণার যে ঘটনা সামনে এসেছে তা রীতিমতো অবাক করেছে সকলকে। ঘটনাটি মহারাষ্ট্রের পুণের।  সন্তানধারণে সাহায্য করলেই মোটা টাকা দেওয়া হবে। এমন বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পা দিয়ে ১১ লক্ষ টাকা খোয়া গিয়েছে এক যুবকের। 

ইন্টারনেটে মেক মি প্রেগন্যান্ট বা ‘আমাকে গর্ভবতী করুন’ শিরোনামের একটি বিজ্ঞাপন দেখে যোগাযোগ করেন পুণের ওই যুবক। ফলস্বরূপ, একের পর এক ধাপে প্রতারণার শিকার হয়ে তিনি হারান মোট ১১ লক্ষ টাকা। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পুণের বানার এলাকার ওই ব্যক্তি কিছুদিন আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজ্ঞাপনটি দেখেন। বিজ্ঞাপনে দাবি করা হয়েছিল, এক মহিলা আর্থিক পুরস্কারের বিনিময়ে একজন পুরুষের সঙ্গে ‘বিশেষ চুক্তি’ করতে চান, যার উদ্দেশ্য নাকি সন্তানধারণ। বিষয়টি কৌতূহলজনক মনে হওয়ায় ওই ব্যক্তি বিজ্ঞাপনে দেওয়া নম্বরে যোগাযোগ করেন। এরপর থেকেই শুরু হয় প্রতারণার জাল।

প্রথমে অভিযুক্তরা নিজেদের “ফার্টিলিটি সার্ভিস এজেন্সি”র প্রতিনিধি বলে পরিচয় দেয়। তারা ভুক্তভোগীর কাছ থেকে নানা অজুহাতে টাকা নিতে শুরু করে।কখনও রেজিস্ট্রেশন ফি, কখনও গোপনীয়তা রক্ষা বাবদ চার্জ, আবার কখনও মেডিক্যাল টেস্ট ও সিকিউরিটি ডিপোজিটের কথা বলে টাকা দাবি করে। ধাপে ধাপে মোট ১১ লক্ষ টাকা ট্রান্সফার করে দেন যুবক। 

কিছুদিন পর তিনি বুঝতে পারেন,পুরো ঘটনাই একটি সুপরিকল্পিত অনলাইন প্রতারণা। এরপর তিনি বানার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ জানিয়েছে, এই কাণ্ডটি সম্ভবত দেশের বিভিন্ন জায়গায় সক্রিয় একটি সাইবার র‌্যাকেটের কাজ, যারা 'প্লে বয় সার্ভিস' বা 'প্রেগন্যান্সি কনট্রাক্ট'-এর মতো বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন দিয়ে পুরুষদের ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

তদন্তে জানা গেছে, প্রতারক চক্রটি মূলত হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম ও ফেসবুকের মতো প্ল্যাটফর্মে সক্রিয়। তারা টার্গেটদের ব্যক্তিগত তথ্য, যেমন আধার, প্যান নম্বর ও ছবি সংগ্রহ করে, তারপর ভয় দেখিয়ে বা লোভ দেখিয়ে ক্রমাগত অর্থ আদায় করে।

পুণে পুলিশ ইতিমধ্যেই মামলার তদন্ত শুরু করেছে এবং জনগণকে সতর্ক থাকতে আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলছে, “যে কোনও অচেনা বা অতিরঞ্জিত অফার দেখলে তার সত্যতা যাচাই না করে অর্থ লেনদেন করা বিপজ্জনক।”

এই ঘটনা আবারও মনে করিয়ে দিল,ইন্টারনেটের ‘আকর্ষণীয় বিজ্ঞাপন’ যতই প্রলোভন দেখাক না কেন, তাতে ক্লিক করার আগে দু’বার ভাবা জরুরি। এক মুহূর্তের কৌতূহল কখনও কখনও কাড়তে পারে বছরের পর বছরের সঞ্চয়!