আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রেম বা দাম্পত্যে বয়স যে সত্যিই কোনও বাধা নয়, তা যেন আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে প্রমাণ করলেন জন লিউইন। তিনি নিজে বার্ধক্য রোধ বা ‘অ্যান্টি-এজিং’ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ। আর তাঁর নিজের জীবনের গল্পই যেন বার্ধক্যের সমস্ত প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। সম্প্রতি ৯৩ বছর বয়সে তিনি ফের বাবা হয়েছেন। তাঁর ৩৭ বছর বয়সি স্ত্রী জেনিন লু জন্ম দিয়েছেন এক ফুটফুটে শিশুর। এই শিশু লিউইনের তৃতীয় সন্তান।
আরও পড়ুন: গাড়ির মধ্যেই ‘অপারেশন থিয়েটার’! লিঙ্গবৃদ্ধির নামে ইন্টারনেট দেখে এ কী করতেন হাতুড়ে ডাক্তার? চোখ কপালে পুলিশের
দম্পতির ফের বাবা-মা হওয়ার সুখবর প্রকাশ্যে আসতেই ফের এক বার চর্চায় উঠে এসেছে তাঁদের এই ‘অসমবয়সি’ প্রেমের কাহিনি। যখন তাঁরা প্রথম বার গাঁটছড়া বাঁধেন, তখন জেনিনের বয়স ছিল মাত্র ২৬, আর ডঃ লিউইনের বয়স ছিল ৮২। বয়সের ব্যবধান ৫৬ বছরের। স্বাভাবিকভাবেই, এক দশকেরও বেশি সময় আগে নেওয়া তাঁদের সেই সিদ্ধান্তকে অনেকেই পাগলামি বলে দাগিয়ে দিয়েছিলেন। ৮২ বছরের এক প্রবীণ যখন ২৬ বছরের এক তরুণীকে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন, তখন সমাজ স্বাভাবিকভাবেই চোখ কপালে তুলেছিল। অনেকেই ভেবেছিলেন, এই সম্পর্ক হয়তো ক্ষণস্থায়ী। কেউ কেউ এর নেপথ্যে অন্য সমীকরণও খুঁজেছিলেন। কিন্তু সমস্ত জল্পনা এবং সমালোচনাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ডঃ লিউইন এবং জেনিন এক দশকেরও বেশি সময় ধরে একসঙ্গেই রয়েছেন। শুধু একসঙ্গেই নেই, তাঁরা তিন সন্তানের পিতামাতা।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হল ডঃ লিউইনের পেশা। তিনি নিজে একজন ‘অ্যান্টি-এজিং’ বিশেষজ্ঞ। অর্থাৎ, কীভাবে বয়স বাড়ার গতিকে শ্লথ করা যায়, কীভাবে বার্ধক্যের ছাপ এড়িয়ে তারুণ্য ধরে রাখা যায়, সেই বিষয়েই তিনি পরামর্শ দেন। তাঁর ব্যক্তিগত জীবন দেখলেই স্পষ্ট যে, বয়স তাঁর কাছে স্রেফ একটি সংখ্যা। ৮২ বছর বয়সে বিয়ে করা বা ৯৩ বছর বয়সে এসেও নতুন সন্তানের মুখ দেখা- দুটোই যেন তাঁর পেশার প্রতি সুবিচার। তিনি শুধু তত্ত্বে নয়, বাস্তবেও প্রমাণ করেছেন যে, বয়স জীবনের উদ্দীপনাকে থামিয়ে রাখতে পারে না।
আরও পড়ুন: নারী-পুরুষ সকলেই নগ্ন হয়ে ঘোরেন! একটি সুতোও থাকে না গায়ে! দেখুন বিখ্যাত সব ‘নগ্ন সৈকত’-এর ছবি
তবে এই অসম বয়সের দাম্পত্যের এক অদ্ভুত বিড়ম্বনাও রয়েছে। সম্প্রতি তৃতীয় সন্তানের জন্মের পর সেই বিষয়টি আরও প্রকট হয়েছে। ৯৩ বছর বয়সি ডঃ লিউইন যখন তাঁর সদ্যোজাত সন্তানকে কোলে নেন, তখন অনেকেই তাঁকে শিশুটির বাবা বলে ভাবতেই পারেননি। রাস্তাঘাটে বা পরিচিত মহলে অনেকেই তাঁকে শিশুটির ‘প্রপিতামহ’ বলে ভুল করেন।
যদিও এই ভুল বোঝাবুঝি বা লোকজনের অবাক চাহনিকে বিশেষ পাত্তা দিতে নারাজ এই দম্পতি। একটি সাক্ষাৎকারে তাঁরা জানিয়েছেন, সন্তানের জন্মের মুহূর্ত তাঁরা একসঙ্গেই উদযাপন করেছেন। যে বিবাহকে একসময় সমাজ পাগলামি বলে মনে করেছিল, সেই বিবাহই আজ এক দশক পার করে তিন সন্তানের হাসিখুশিতে ভরা এক সুখী গৃহকোণ। নিন্দকদের সমস্ত ভবিষ্যদ্বাণী মিথ্যা প্রমাণ করে জেনিন এবং জন লিউইন বুঝিয়ে দিয়েছেন, সম্পর্কে বয়স নয়, পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং ভালবাসাই আসল। ৯৩ বছর বয়সে ফের বাবা হয়ে ‘অ্যান্টি-এজিং’ বিশেষজ্ঞ ডঃ লিউইন হয়তো বার্ধক্যকে জয় করার এক নতুন উদাহরণ তৈরি করলেন।
