আজকাল ওয়েবডেস্ক: গত বছরের ঘটনা। প্রতিবেশীরা পচা মৃতদেহের দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে দমদম ফাড়িকে খবর দেন। পুলিশ এসে গোটা বাড়ি তন্নতন্ন করে খুঁজেও কোনও মৃতদেহ খুঁজে পায়নি। সব ঘর খুঁজে দেখা হয়। একটি ঘর বাইরে থেকে তালা বন্ধ ছিল সেটি আর খোলা হয়নি। তল্লাশি শেষে পুলিশ চলে যাওয়ার আগে বাড়িতে তালা লাগিয়ে দিতে বলে। পুলিশের কথা মতো তালা লাগিয়ে দিয়ে চলে যান সুপর্ণা ধারার পরিবারের লোকেরা। ছয় মাস পর সেই  বাড়িতেই সেই বন্ধ ঘর থেকেই উদ্ধার হল সুপর্ণার পচাগলা দেহ। মাংস খসে কঙ্কাল বেরিয়ে পড়েছে। তদন্তে নেমেছে নাগেরবাজার থানা।

নাগেরবাজার থানা এলাকায় দমদম এম সি গার্ডেন রোডের বাড়িটিতে ২০২৪ সালে ১১ ডিসেম্বর পুলিশ খানাতল্লাশি করে কিছু না পেয়ে চলে যাওয়ার পর কেটে গিয়েছে ছয় মাস। বাড়ির বাসিন্দা ছিলেন সুপর্ণা। দিদিদের সঙ্গে মতের মিল না হওয়ায় একাই থাকতেন বাড়িটিতে। দিদিদের সঙ্গেও তেমন যোগাযোগ ছিল না। গত সপ্তাহে হঠাৎ তাঁদের খেয়াল হয় বোন সুপর্ণার কোনও খবর নেই। অনেক বার যোগাযোগের চেষ্টা বিফল হলে বোনের খোঁজ করতে শুরু করেন দিদিরা। গত মঙ্গলবার তাঁরা স্থানীয় কাউন্সিলরের সঙ্গে যোগাযোগও করেন। কাউন্সিলর পরামর্শে পুলিশের কাছে মিসিং ডায়েরি করার জন্য শনিবার কাগজপত্র আনতে সুপর্ণার বাড়িতে গিয়ে দেখেন গোটা বাড়ি লণ্ডভণ্ড হয়ে রয়েছে। দিদি সুস্মিতার অভিযোগ, বাড়ি দেখে মনে হচ্ছে কেউ চুরি করতে বাড়িতে ঢুকেছিল। আর বাড়িতে ঢুকতেই পূর্বে যে ঘরটি বন্ধ থাকতে দেখেছিলেন সেই ঘর খোলা দেখতে পান। লাইট-পাখা জ্বলছিল। ঘরে ঢুকতেই দেখেন বোন সুপর্ণার পচাগলা মৃতদেহ। এরপর খবর দেওয়া হয় নাগেরবাজার থানায়। মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশের সহযোগিতায় ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে আসা হয়েছে আর জি কর মেডিকেল কলেজে। দেহটিকে যখন হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় তখন তীব্র দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন হাসপাতাল চত্বরে উপস্থিত রোগীদের আত্মীয় পরিজনেরা। 

আরও পড়ুন: মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে ব্রিটেন যাচ্ছেন মোদি, চার দিনের সফরে যেতে পারেন মলদ্বীপেও

মৃতার দিদি সুস্মিতা রায় জানিয়েছেন তাঁর বোনের বয়স ছিল ৫৭ বছর। পেশায় যোগবিদ ছিলেন। 'যোগা' ক্লাস করাতেন এবং নিজে যোগা ও মেডিটেশন করতেন। বাড়িতে সুপর্ণা একাই থাকতেন এলাকায় কারও সঙ্গেই তেমন মেলামেশা করতেন না বলে জানিয়েছেন সুস্মিতা। তিনি অবিবাহিত ছিলেন।  আগে সঙ্গে মা থাকতেন। ২০২২ সালে মা মারা যাওয়ার পর তিনি একাই থাকতেন বাড়িতে। তবে বোন সুপর্ণার কিভাবে এমন মৃত্যু ঘটল তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তাঁর দুই দিদি। সুস্মিতা জানিয়েছেন, শনিবার মিসিং ডায়েরি করার জন্যই কাগজপত্র নিতে বাড়িতে গিয়েছিলেন আর তখনই দেখতে পান বোনের পচাগলা মৃতদেহ। এক প্রকার কঙ্কাল বেরিয়ে পড়েছে।

আরও পড়ুন: পাকিস্তানের বন্ধু তুরস্কও কি পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে সক্ষম? উত্তরটি আপনাকে অবাক করে দেবে

পুলিশ সূত্রে খবর, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরেই বোঝা যাবে মৃত্যু কারণ কী। হত্যা না আত্মহত্যা না কি অন্য কোনও কারণ। পুলিশ তদন্ত করে দেখছে কেনই বা এভাবে এতদিন ধরে দেহ বাড়িতে পরে রইল এবং দেহ পঁচে গিয়ে কঙ্কাল বেরিয়ে এসেছে। প্রাথমিকভাবে অনুমান, বেশ কয়েক মাস আগেই সুপর্ণার মৃত্যু হয়েছে। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।