আজকাল ওয়েবডেস্ক: সিঙ্গাপুরে ছুটি কাটানোর সময় হোটেল কক্ষে দুই যৌনকর্মীকে লুট ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগে অভিযুক্ত দুই ভারতীয় ব্যক্তিকে শুক্রবার পাঁচ বছর এক মাসের কারাদণ্ড এবং ১২টি বেত্রাঘাতের সাজা দেওয়া হয়েছে। দ্য স্ট্রেইটস টাইমস জানিয়েছে, ২৩ বছর বয়সী আরোক্কিয়াসামি ডেইসন এবং ২৭ বছর বয়সী রাজেন্দ্রন মায়িলারাসন ভুক্তভোগীদের ডাকাতি করার সময় স্বেচ্ছায় আঘাত করার জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।

আদালতে জানানো হয়েছে যে, আরোক্কিয়াসামি এবং রাজেন্দ্রন ২৪ এপ্রিল ভারত থেকে ছুটি কাটাতে সিঙ্গাপুরে এসেছিলেন। দু’দিন পর, লিটল ইন্ডিয়া এলাকায় হাঁটার সময়, একজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি তাঁদের কাছে এসে জিজ্ঞাসা করেন যে তাঁরা যৌন সেবার জন্য এসকর্ট সার্ভিস নিয়োগ করতে আগ্রহী কি না। এরপর লোকটি চলে যাওয়ার আগে তাদের দুই মহিলার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য বিস্তারিত তথ্য দিয়ে যান।

আরও পড়ুন: বছরে আয় দু'কোটিরও বেশি, তবুও ৫৬ বছরের এই ব্যক্তি হাউস-কিপারের কাজ করেন, জানুন রহস্য

আরোক্কিয়া রাজেন্দ্রনকে বলেন যে তাদের টাকার প্রয়োজন এবং তাঁরা মহিলাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি হোটেলের ঘরে ডেকে তাঁদের লুট করার ফন্দি আঁটেন। আরোক্কিয়ার এই পরামর্শ রাজেন্দ্রন মেনে নেন। তাঁরা সেই দিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে একটি হোটেলের ঘরে একজন মহিলার সঙ্গে দেখা করার ব্যবস্থা করেন। ঘরে ঢুকতেই তাঁরা মহিলার হাত-পা কাপড় দিয়ে বেঁধে তাঁকে চড় মারতে থাকেন। তাঁরা ওই মহিলার গয়না, নগদ দুই হাজার সিঙ্গাপুর ডলার, পাসপোর্ট এবং ব্যাঙ্ক কার্ড লুট করে নেন। 

পরে সেই দিন রাত ১১টার দিকে, তাঁরা অন্য একটি হোটেলে দ্বিতীয় মহিলার সঙ্গে একটি বৈঠকের আয়োজন করেন। যখন ওই মহিলা হোটেলে পৌঁছন, তখন তাঁরা তাঁকে ডাকাতি করার জন্য তাঁর হাত ধরে ঘরে টেনে নিয়ে যান এবং ওই মহিলা যাতে চিৎকার করতে না পারেন সে জন্য তাঁর মুখ চেপে ধরেন রাজেন্দ্রন। তাঁরা ওই মহিলার কাছ থেকে ৮০০ সিঙ্গাপুর ডলার, দু’টি মোবাইল ফোন এবং তাঁর পাসপোর্ট কেড়ে নেন। ওই মহিলাকে দু’জন মিলে হুমকিও দেন যে, তাঁরা ফিরে না আসা পর্যন্ত ঘর থেকে বের না হতে।

পরের দিন দ্বিতীয় ভুক্তভোগী অন্য একজনকে তাঁর সঙ্গে ঘটে যাওয়া সব কথা গোপনে জানান, তখন আরোক্কিয়াসামি এবং রাজেন্দ্রনের কার্যকলাপ উন্মোচিত হয়। এর পরেই পুলিশ ডাকা হয়। দু’জনের হয়ে কোনও আইনজীবী প্রতিনিধিত্ব করেননি। আদালতে শুনানির সময় দু’জনেই হালকা শাস্তির জন্য আবেদন করেন।

আরও পড়ুন: পাক অধিকৃত কাশ্মীরে প্রতিবাদ আন্দোলনে নাজেহাল ইসলামাবাদ, এবার প্রেস ক্লাবে ঢুকে মহা-তাণ্ডব পুলিশের

একজন দোভাষীর মাধ্যমে কথা বলতে বলতে আরোক্কিয়াসামি বলেন, “গত বছর আমার বাবা মারা গিয়েছেন। আমার তিন বোন আছে, যাদের মধ্যে একজন বিবাহিত, এবং আমাদের কাছে কোনও টাকা নেই। সেই কারণেই আমরা এটা করেছি।” 

রাজেন্দ্রন বলেন, “আমার স্ত্রী এবং সন্তান ভারতে একা থাকে এবং তাঁরা আর্থিকভাবে কষ্ট পাচ্ছে।” সিঙ্গাপুর দৈনিকের প্রতিবেদন অনুসারে, যাঁরা ডাকাতির সময় স্বেচ্ছায় আহত করে তাঁদের পাঁচ থেকে ২০ বছরের কারাদণ্ড এবং কমপক্ষে ১২টি বেতের বেত্রাঘাত করা যেতে পারে।