আজকাল ওয়েবডেস্ক: পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক তলানিতে যেতেই, আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের বড় পদক্ষেপ। বিদেশমন্ত্রী ভারতে এসে যা বললেন, তাতে মাথায় হাত পাক-প্রশাসনের।
জল্পনা ছিল, মুত্তাকি ভারতে আসার পর থেকেই। ২০২১ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর ভারত এবং তালিবান সরকারের মধ্যে প্রথম উচ্চ-স্তরের কূটনৈতিক যোগাযোগ এবার। স্বাভাবিকাভবেই মুত্তাকির বক্তব্যের দিকে নজর ছিল। ভারতকে কাবুলের অবস্থান সম্পর্কে স্পষ্ট বার্তা দিয়ে মুত্তাকি বলেন, আফগানিস্তান কোনও গোষ্ঠীকে অন্য কোনও দেশের বিরুদ্ধে তাদের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেবে না।
শুধু এটুকুই নয়। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক প্রসঙ্গে কী ভাবছেন তিনি? কী ভাবছে সে দেশ? জানান তাও। তিনি বলেন, 'আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে, ভারতই প্রথম সাড়া দিয়েছিল। আফগানিস্তান ভারতকে ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে দেখে। আমরা পারস্পরিক শ্রদ্ধা, বাণিজ্য এবং জনগণের সঙ্গে মানুষের সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে সম্পর্ক বজায় রাখতে চাই। আমাদের সম্পর্ক জোরদার করার জন্য আমরা একটি পরামর্শমূলক ব্যবস্থা তৈরি করতে প্রস্তুত।'
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের হামলার মাঝেই ভারত-আফগানিস্তান সম্পর্কে নয়া মোড়, কাবুলে ফের চালু হচ্ছে ভারতীয় দূতাবাস
একইসঙ্গে তিনি জানান, 'দিল্লিতে এসে আমি খুশি, এবং এই সফর দুই দেশের মধ্যে বোঝাপড়া বাড়াবে। ভারত ও আফগানিস্তানের উচিত তাদের সম্পৃক্ততা এবং বিনিময় বৃদ্ধি করা।'
একইসঙ্গে উল্লেখ্য আরও একটি বিষয়। কাবুলে ভারতের টেকনিক্যাল মিশন এবার পূর্ণাঙ্গ দূতাবাসে পরিণত হতে চলেছে। সফররত তালিবান প্রশাসনের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে বৈঠকে এই কথা জানিয়েছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর। পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কে যখন একদিকে উত্তাপ বাড়ছে সেই পরিস্থিতিতেই আফগানিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করছে নয়াদিল্লি। যদিও তালিবান সরকারের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি এখনও দেয়নি ভারত।
এস. জয়শঙ্কর বলেন, ‘আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে কাবুলে ভারতের টেকনিক্যাল মিশনকে ভারতীয় দূতাবাসের মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে। আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্ব, ভৌগোলিক অখণ্ডতা এবং স্বাধীনতার প্রতি ভারত সম্পূর্ণভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ ২০২১ সালে তালিবান কাবুল দখল করার পর ভারত তার দূতাবাস ও কনস্যুলেট বন্ধ করে দেয়। চার বছর পর এই দূতাবাস পুনরুদ্ধার ভারতের প্রতিবেশী কূটনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় তৈরি করল।
এর আগে ২০২২ সালে ভারত কাবুলে একটি টেকনিক্যাল টিম পাঠিয়েছিল। সেই টিমের সদস্যরা সেই সময় থেকেই দূতাবাসে অবস্থান করছিলেন। মুত্তাকির সঙ্গে জয়শঙ্করের এই সাক্ষাৎ ২০২১ সালের পর থেকে ভারতের সঙ্গে তালিবান সরকারের সবচেয়ে উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগ হিসেবে ধরা হচ্ছে। পাকিস্তান ও তালিবান সরকারের মধ্যে সীমান্তবর্তী সন্ত্রাস ও আফগান শরণার্থীদের প্রত্যাবাসন নিয়ে সম্পর্কের টানাপোড়েন ভারতের জন্য কাবুলের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর নতুন সুযোগ তৈরি করেছে।
