আজকাল ওয়েবডেস্ক: মার্কিন শুল্ক-বোমার জেরে এক সময়ের ' বন্ধু' মোদি-ট্রাম্প সম্পর্ক তলানীতে। এই ঘটনাই প্রমাণ করে যে, মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠতা কোনও দেশের নেতাকেই বড় বিপর্যয় থেকে রক্ষা করতে পারে না। এমনই পরামর্শ আমেরিকার প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনের। 

ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম এলবিসি পোর্টাল কে দেওয়া এক সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে জন বোল্টন বলেছেন, "আমি মনে করি ট্রাম্প আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে সবসময় নেতাদের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের নিরিখে দেখেন। তাই ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে যদি তাঁর ভাল সম্পর্ক থাকে, তাহলে রাশিয়ার সঙ্গেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাল সম্পর্ক রয়েছে। বলে মনে করেন তিনি। কিন্তু বাস্তবে তা হয় না।"

মোদি-ট্রাম্পের সম্পর্কের এই ঘাত-প্রতিঘাত অন্যান্য বিশ্বনেতাদের কাছে শিক্ষনীয় বলে মনে করেন প্রাক্তন মার্কিন জাতীয় নবিরাপত্তা উপদেষ্টা। তিনি বলেছেন, "মোদির সঙ্গে ট্রাম্পের ব্যক্তিগতভাবে খুব ভাল সম্পর্ক ছিল। আমার মনে হয় এখন সেটা চলে গিয়েছে, এবং এটা সবার জন্য একটা শিক্ষা। উদাহরণস্বরূপ (ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী) কেয়ার স্টারমার, একটি ভাল ব্যক্তিগত সম্পর্ক মাঝে মাঝে সাহায্য করতে পারে, কিন্তু সেই সম্পর্ক আপনাকে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করবে না।"

ট্রাম্পের শুল্ক নীতির জেরে অস্বস্তি বেড়েছে নয়াদিল্লির। ফলে ভারত-মার্কিন সম্পর্কে তীব্র টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে। ভারত-মার্কিন সম্পর্কের সম্ভবত সবচেয়ে খারাপ পর্যায়ের পটভূমিতে জন বোল্টনের মন্তব্য ও পরামর্শ বেশ তাৎপর্যবাহী।

আরও পড়ুন-  ট্রাম্পের 'তুঘলক' নীতিতে দিশাহারা অবস্থা, ২৫০ বছরে এই প্রথম এক বড় সংকটের সামনে আমেরিকা!

বোল্টন ট্রাম্পের নীতির কড়া নিন্দা করেছেন। তাঁর কথায়, "প্রেসিডেন্ডের নীতি মার্কিন-ভারত সম্পর্ককে কয়েক দশক পিছিয়ে দিয়েছে। মোদিকে রাশিয়া ও চীনের কাছাকাছি ঠেলে দিয়েছে। বেজিং নিজেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিকল্প হিসেবে উপস্থাপন করেছে।"

প্রাক্তন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার মতে, গত কয়েক মাস ধরে ভারতের প্রতি ট্রাম্পের আচরণ নয়াদিল্লিকে রাশিয়ার সঙ্গে তার শীতল যুদ্ধের জোট থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার এবং ভারতীয় নীতিনির্ধারকদের চীনকে তাদের প্রধান নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য বছরের পর বছর ধরে দ্বিদলীয় মার্কিন প্রচেষ্টাকে দুর্বল করে দিয়েছে। তিনি বলেন, "এটা উল্টে গেছে। আমি মনে করি এটি আবার উল্টে যেতে পারে, কিন্তু এটি একটি খুব খারাপ মুহূর্ত।" 

এর আগে বোল্টন দাবি করেছিলেন, ট্রাম্প সরকারের শুল্ক আরোপ ও রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্য ভারতের উপর চাপ সৃষ্টি করা ছিল এক ধরনের ‘ভুল সিদ্ধান্ত’, যা দিল্লিকে বেজিং-মস্কো অক্ষের দিকে ঠেলে দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, গোপন তথ্যের অপব্যবহারের অভিযোগে ফৌজদারি তদন্তের অংশ হিসেবে এফবিআই সম্প্রতি বোল্টনের মেরিল্যান্ডের বাড়ি এবং ওয়াশিংটনের অফিসে তল্লাশি চালিয়েছে।

আরও পড়ুন-  জিএসটি নির্ধারণেও সুয়োরানি-দুয়োরানি তরজা! ক্ষোভ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে, পড়ুন বিশ্লেষণ