আজকাল ওয়েবডেস্ক: গ্রেটার ম্যানচেস্টারের জনপ্রিয় ভারতীয় রেস্টুরেন্ট ‘সাই সুরভি’-তে এক সন্ধ্যায় সাধারণ খাওয়া-দাওয়া ভয়াবহ অভিজ্ঞতায় রূপ নিল। দুই পরিবার—চারজন প্রাপ্তবয়স্ক ও চার শিশু মিলে প্রায় £২০০ (প্রায় ২৩,৫০০ টাকা)-এর খাবার উপভোগ করলেও শেষে বিল না মিটিয়েই সটকে পড়েন বলে অভিযোগ।
রেস্টুরেন্টের মালিক রমন কৌর ও নরিন্দর সিং আঠওয়া জানিয়েছেন, ৩০শে আগস্ট রাতে দুই পরিবার রেস্টুরেন্টে আসেন। তারা খাবার, সেবা ও সাজসজ্জা সবকিছু নিয়ে প্রশংসা করেন। শিশুদের স্বাভাবিক দুষ্টুমি ছাড়া কোনো সমস্যাও দেখা দেয়নি। কিন্তু যখন বিল মেটানোর পালা এল, তখনই বিপত্তি। মালিকদের বক্তব্য অনুযায়ী, পরিবারগুলি পাঁচটি ভিন্ন কার্ড দিয়ে চেষ্টা করেন, বন্ধুবান্ধবকে ফোন করে টাকা পাঠাতে বলেন, কিন্তু এক পয়সাও পরিশোধ হয়নি। শেষমেশ তারা জানান, “আমাদের কোনো উপায় নেই, আমরা টাকা দিতে পারব না।” এমনকি পরিচয়পত্র চাইলে সেটিও দেখাতে ব্যর্থ হন।
পরিবারের পক্ষ থেকে একটি নাম ও ফোন নম্বর দিয়ে বলা হয়, পরের দিন টাকা পরিশোধ করা হবে। সেইসঙ্গে অনুমতি দেন, যদি টাকা না দেওয়া হয় তবে মালিকরা যেন সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করেন। মালিক দম্পতি ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন,
 
 “আমরা এভাবে প্রকাশ্যে আনতে চাই না, কিন্তু আমাদের আর কোনো উপায় নেই। স্বাধীনভাবে চলা একটি পারিবারিক ব্যবসা হিসেবে এখনকার সময় অত্যন্ত কঠিন। এই £২০০-ই আমাদের কর্মীদের বেতন, বিদ্যুৎ বিল বা নতুন মাল কেনার কাজে লাগতে পারত।”
আরও পড়ুন: এবার সরাসরি ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা আমেরিকার! বন্ধ হতে চলেছে ভারতীয়দের ভিসা?
ঘটনার পর রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ ফেসবুকে বিলের ছবি ও ঘটনার বর্ণনা পোস্ট করলে বিপুল সাড়া মেলে। বহু গ্রাহক ও শুভানুধ্যায়ী সহমর্মিতা জানিয়ে পরামর্শ দেন পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করতে বা অবিলম্বে সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করতে। একজন মন্তব্য করেন, “আমরা যখন হোটেলে যাই, আগে থেকেই ক্রেডিট কার্ড দিতে হয়। আপনাদেরও সেটি চালু করা উচিত।” আরেকজন লেখেন, “ফুটেজ প্রকাশ করুন, যাতে সবাই জানে চোরেরা দেখতে কেমন।” অনেকে সরাসরি পুলিশের শরণাপন্ন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
‘সাই সুরভি’-র ঘটনাটি বিচ্ছিন্ন নয়। কয়েক সপ্তাহ আগেই নর্থ্যাম্পটনের আরেক ভারতীয় রেস্টুরেন্ট ‘স্যাফরন’-এ একদল মানুষ খাওয়া শেষে বিল না দিয়ে পালিয়ে যান। ফলে ছোটখাটো রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীদের মধ্যে ভয় ও ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। স্বাধীন রেস্টুরেন্ট ব্যবসাগুলি ব্রিটেনে এমনিতেই অর্থনৈতিক চাপে ভুগছে। এরকম প্রতারণা কেবল আর্থিক ক্ষতি নয়, মনোবলকেও আঘাত করে। স্থানীয় গ্রাহকরা এখন মালিকদের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং সবার দাবি—এই ধরনের ঘটনার কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
