আজকাল ওয়েবডেস্ক: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে তেলঙ্গানার এক ইঞ্জিনিয়ারের। রুমমেটের সঙ্গে ঝগড়ার জেরে তাঁকে আমেরিকান পুলিশ গুলি করে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পরিবারের। বর্ণবৈষম্যের অভিযোগ তুলে এখন তাঁর দেহ ফিরিয়ে আনতে চাইছেন পরিবারের সদস্যরা। ইতিমধ্যেই বিদেশ মন্ত্রকের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। 

মৃতের নাম মহম্মদ নিজামুদ্দিন (২৯)। তাঁর বাড়ি তেলঙ্গানার মাহাবুবনগর জেলায়। পড়াশোনার জন্য ২০১৬ সালে ফ্লোরিডা গিয়েছিলেন নিজামুদ্দিন। ফ্লোরিডার একটি কলেজ থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন তিনি। ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা ক্লারার একটি সফটওয়ার প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন ওই যুবক।

ফ্লোরিডা পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তেলঙ্গানার মাহবুবনগরের মোহাম্মদ নিজামুদ্দিনকে ৩ সেপ্টেম্বর সান্তা ক্লারায় তাঁর বাসভবনে ছুরি হাতে দেখা যায়, তার পরই তাঁকে গুলি করা হয়েছে। পুলিশের দাবি এই ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ার রুমমেটকেও পিটিয়ে হত্যা করতে দেখা গিয়েছে। নিজামুদ্দিনকে চারটি গুলি করা হয়েছিল বলে সূত্রের খবর।

বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে যে, "এসসিপিডি অফিসাররা এসে সন্দেহভাজন ব্যক্তির মুখোমুখি হন এবং গুলি চালানোর সঙ্গে জড়িত একজন অফিসার জড়িত হন। সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় যেখানে পরে তাদের মৃত ঘোষণা করা হয়। ভুক্তভোগীকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তাদের আঘাতের জন্য চিকিৎসা করা হচ্ছে। সান্তা ক্লারা কাউন্টি জেলা অ্যাটর্নি অফিস এবং সান্তা ক্লারা পুলিশ বিভাগ যৌথ তদন্ত পরিচালনা করছে। এটি একটি সক্রিয় এবং উন্মুক্ত তদন্ত হিসেবে রয়ে গিয়েছে। তদন্ত এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, আমরা আগামিকাল বিকেলে একটি আপডেট দেওয়ার আশা করছি।"

বৃহস্পতিবার নিজামুদ্দিনের পরিবার জানিয়েছে, সেখানে রুমমেটের সঙ্গে ঝগড়া হয় তাঁর। এর পরেই ক্যালিফোর্নিয়ার তাঁকে গুলি করে খুন করেছে।

নিহত নিজামুদ্দিনের বাবা মহম্মদ হাসনুদ্দিন জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে এক বন্ধুর কাছ থেকে সন্তানের মৃত্যুর খবর জানতে পেরেছেন তিনি। কী পরিস্থিতিতে এই ঘটনা তা ঘটে তা তাঁর কাছে স্পষ্ট নয়। যদিও সামান্য কারণে নিজামুদ্দিনের সঙ্গে তাঁর রুমমেটের কথা কাটাকাটি হয় বলে জানতে পেরেছেন তিনি।


তবে নিজামুদ্দিনের পরিবার জানিয়েছে যে গুলিবিদ্ধ হওয়ার আগেই তিনি পুলিশের সাহায্য চেয়েছিলেন। তাঁর পরিবার তার একটি লিঙ্কডইন পোস্টের দিকেও ইঙ্গিত করেছে, যেখানে বলা হয়েছে- "আমি বর্ণবৈষম্যকে ঘৃণা করি। কিন্তু আমি বর্ণগত বৈষম্য, বর্ণগত হয়রানি, নির্যাতন, বেতন-জালিয়াতি, অন্যায়ভাবে বরখাস্ত এবং ন্যায়বিচারে বাধার শিকার হয়েছি।"

মজলিস বাঁচাও তেহরিকের মুখপাত্র আমজেদ উল্লাহ খান, যিনি নিজামউদ্দিনের বাবা মহম্মদ হাসনুদ্দিনের সঙ্গে দেখা করেছেন। তিনি বলেছেন যে, তিনি বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে চিঠি লিখে ওয়াশিংটন, ডিসিতে ভারতীয় দূতাবাস এবং সান ফ্রান্সিসকোতে কনস্যুলেট জেনারেলকে বিষয়টি সম্পর্কে একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রদান এবং প্রত্যাবাসন এবং সংশ্লিষ্ট আনুষ্ঠানিকতায় সহায়তা করার জন্য অনুরোধ করেছেন।

এই প্রতিবেদন দাখিলের সময় বিদেশমন্ত্রক থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।