আজকাল ওয়েবডেস্ক: লন্ডনে মাত্র তিন বছরের শিশুকন্যাকে খুনের অভিযোগে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হল এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত দম্পতিকে। প্রায় দু'বছর আগের এই ঘটনায় মেট্রোপলিটন পুলিশের অভিযোগ, ওই দম্পতি তাঁদের শিশুকন্যাকে 'ইচ্ছাকৃতভাবে অনাহারে' রেখেছিলেন, যার জেরেই তার মৃত্যু হয়। ঘটনা ঘিরে তোলপাড়।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ৩৪ বছর বয়সি মনপ্রীত জাটানা এবং ৩৬ বছরের জসকীরত সিংহ কে তাঁদের মেয়ে পেনেলোপি চন্দ্রিকে খুনের অভিযোগে মঙ্গলবার লন্ডনের ওল্ড বেইলি ক্রিমিনাল কোর্টে পেশ করা হয়।
সংবাদমাধ্যম সূত্র অনুসারে, হত্যা ছাড়াও তাঁদের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুন, শিশুমৃত্যুতে মদত দেওয়া এবং সন্তানকে পরিত্যাগ করে অকারণে শারীরিক ও মানসিক কষ্ট দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। জানা গিয়েছে, বিচারক লিন টেটন আগামী ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত অভিযুক্ত দু'জনকেই বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। ওই দিনই তাঁরা নিজেদের দোষ স্বীকার বা অস্বীকার করবেন। তার ভিত্তিতেই স্থির হবে মামলার পরবর্তী গতিপ্রকৃতি- সাজা ঘোষণা হবে, নাকি জুরি বিচার শুরু হবে।
খবর মারফত জানা গিয়েছে, প্রসিকিউশনের দাবি, জাটানা এবং জসকীরত 'দীর্ঘ সময় ধরে' তাঁদের মেয়ের উপর অত্যাচার চালিয়েছেন এবং তাকে 'ইচ্ছাকৃতভাবে অনাহারে' রেখে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছেন। জানা গিয়েছে, পরিবারটি নিরামিষাশী ছিল এবং তাঁদের খাদ্যতালিকায় মূলত দই, ডাল এবং মাখনই থাকত। পশ্চিম লন্ডনে তাঁদের বাড়ির অবস্থাও অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। আদালতকে জানানো হয়, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে পুলিশ পেনেলোপির 'অপুষ্টিতে জীর্ণ শীর্ণ' দেহ একটি চাদরে মোড়া অবস্থায় উদ্ধার করে। পরীক্ষার পর জানা যায়, অপুষ্টির কারণেই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। প্রসিকিউশনের তরফে উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, "দীর্ঘদিনের ফল৷ কার্যত বহু মাস অনাহারে থাকার দরুন মারাত্মক কিটোঅ্যাসিডোসিস-এ আক্রান্ত হয়েই তার মৃত্যু হয়েছে।"
এর আগে মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছিল, ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় হেইসের পেনাইন ওয়ের একটি বাড়িতে লন্ডনের জরুরি পরিষেবা দলকে তলব করা হয়। সেখানেই শিশুটিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। এরপর বেশ কয়েক বছর ধরে শিশুটির মৃত্যুর তদন্ত চলছিল। অবশেষে গত মাসে জাটানা এবং জসকীরতকে গ্রেপ্তার করে তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। তৎকালীন এক বিবৃতিতে পুলিশ জানিয়েছিল, "ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিস (সিপিএস)-এর সঙ্গে আলোচনার পর মেয়েটির মৃত্যুর ঘটনায় দু'জনকেই খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।"
ফৌজদারি আদালতে এই ধরনের মামলার ক্ষেত্রে পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত খবর প্রকাশের উপর আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে।
