জয়ন্ত আচার্য, ঢাকা : কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের উদ্বোধন ও নামফলক উন্মোচন করলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। সুড়ঙ্গপথে মিলন ঘটল কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়ের; চট্টগ্রামবাসীর সঙ্গে ইতিহাসের সাক্ষী হল বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার সকালে পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর পশ্চিম তীরে ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী ফলক উন্মোচনের পর পরই আতশবাজি ফোটানো হয়। এই টানেলের মাধ্যমে শিল্পঘেরা কর্ণফুলীর দুই পাড়ের মধ্যে যোগাযোগ সহজ হয়, সংযোগ হয় ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের। তাতে গতি পাবে দেশের রপ্তানি বাণিজ্য। কর্ণফুলী নদীর একপাড়ে বন্দর নগরী, অন্যপাড়ে আনোয়ারা উপজেলার শিল্প এলাকা। ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ গড়ার উচ্চাভিলাসী লক্ষ্য নিয়ে বানানো এই টানেলের মাধ্যমে এই দুই পাড় যুক্ত হয়। পথ খুলে গেল বিশ্বমানের যোগাযোগের। চট্টগ্রাম বন্দর নগরীকে চীনের সাংহাইয়ের আদলে গড়ে তোলার যে লক্ষ্য সরকারের ছিল, তার একটি বড় পদক্ষেপের বাস্তবায়ন হল নদী তলদেশে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম টানেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানেল উদ্বোধন উপলক্ষ্যে বলেন, “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ায় নদীর নিচে প্রথম সড়ক টানেল। দেশপ্রেমিক জনগণের আস্থা ও অকুণ্ঠ সমর্থনের ফলেই উন্নয়নের এই নতুন অধ্যায় উন্মোচিত হয়েছে। “আগামী দিনেও মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্নপূরণে আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করে যাব।” প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে বন্দর নগরীকে সাজানো হয় মনোরম সাজে। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে যায় নগরী ও আনোয়ারা প্রান্তের রাস্তাঘাট। উল্লেখ্য লুসাই পাহাড় থেকে নেমে আসা নদী কর্ণফুলীর দুই প্রান্তকে যুক্ত করতে টানেল নির্মাণে প্রথম প্রস্তাব দিয়েছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রয়াত মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। কর্নফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের জন্য ২০১৪ সালের ১০ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে বেইজিংয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছিল। সেই শুরু, তারপর প্রায় ৯ বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ হয় টানেলের নির্মাণ কাজ।