আজকাল ওয়েবডেস্ক: একতরফা প্রেম। এবার প্রেমঘটিত বিবাদের জেরে ২৩ বছরের এক যুবককে খুন করার অভিযোগ। ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করেছে দিল্লি পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লির গোবিন্দপুরী এলাকায়। রবিবার পুলিশ খবরটি জানিয়েছে।

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে, গত ১৪ নভেম্বর রাত ১০টা নাগাদ পুলিশ কন্ট্রোল রুমে একটি ফোন আসে। জানানো হয়, প্রভাতি একতা ক্যাম্পে এক ব্যক্তিকে ছুরি মারা হয়েছে। তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে আছেন। পুলিশের এক আধিকারিক জানান, সঙ্গে সঙ্গে একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। কিন্তু দেখা যায়, আহত যুবককে ততক্ষণে পুলিশ ভ্যানে করে এইমস ট্রমা সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে সেখানে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃতের নাম রোশন।

তদন্তে নেমে পুলিশ বেশ কয়েকটি দল তৈরি করে। পরীক্ষা করা হয় এলাকার একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ। প্রযুক্তির মাধ্যমে নজরদারি শুরু হয়। ফুটেজে দেখা যায়, মোট পাঁচ জন এই হামলায় জড়িত ছিল।

বিভিন্ন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ প্রথমে প্রধান অভিযুক্ত প্রিন্স বর্মা এবং তার সঙ্গী আমন ওরফে বুদ্ধকে ধরে ফেলে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই বাকি তিন অভিযুক্ত নীরজ (১৮), আশিস (১৮) এবং অঙ্গদকেও (১৯) গ্রেপ্তার করা হয়।

জেরার মুখে প্রিন্স স্বীকার করে যে, রোশন তার প্রেমিকার দিকে নজর দিত। সেই রাগে সে বাকি সঙ্গীদের নিয়ে এই খুনের পরিকল্পনা করে। এর পর তারা রোশনকে ছুরি মেরে খুন করে। পুলিশ খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রটিও উদ্ধার করেছে। পুলিশ আরও জানিয়েছে, অভিযুক্ত প্রিন্স (২০) তার বাবার সঙ্গে ট্রাক চালায়। বাকি চার জনের মধ্যে কেউ ছাত্র, কেউ আবার দিনমজুর। তাদের কারও বিরুদ্ধেই আগে থেকে কোনও অপরাধের রেকর্ড নেই। পুরো ঘটনার তদন্ত এখনও জারি রয়েছে।

অন্যদিকে, গত ৬ নভেম্বর উত্তরপ্রদেশের নয়ডার সেক্টর-৮২-এর কাছে একটি নর্দমা থেকে এক মহিলার মুন্ডুহীন নগ্ন দেহ উদ্ধার হয়। জানা গিয়েছে, তাঁর দুটো হাতও কাটা ছিল৷ শহরের জমকালো এলাকায় এই ঘটনায় হুলুস্থুল পড়ে যায়৷ মৃতদেহ কার, কোথা থেকে এল, এসব নিয়ে তদন্ত চলতে চলতে সপ্তাহ কেটে যায়। পুলিশ সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে, যেই মহিলার দেহ উদ্ধার হয়েছে, তিনি পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। তাঁকে এহেন নৃশংস খুনের অভিযোগ উঠেছে তাঁর প্রেমিকের বিরুদ্ধে। 

নয়ডা পুলিশ সম্প্রতি এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। অভিযোগ, সে তার প্রেমিকা অর্থাৎ ওই মহিলাকে খুন করে দেহটি শহরের একটি পরিচিত এলাকায় ফেলে দেয়। 

তদন্তে উঠে আসে অভিযুক্ত যুবক ওই মহিলার প্রেমিক। সে নয়ডায় বাস চালকের কাজ করত৷ প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে বাসের মধ্যেই অভিযুক্ত তার প্রেমিকা খুন করে। প্রথমে তাঁর মাথা ও হাত কেটে নেওয়া হয়। এর পরেই তাঁর নগ্ন দেহ সেক্টর ৮২ তে ফেলে দিয়ে চম্পট দেয় অভিযুক্ত৷ জানা গেছে, অভিযুক্ত ও নিহত, দু'জনেই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। তবে, পশ্চিমবঙ্গের কোথাকার বাসিন্দা সে বিষয়ে এখনও স্পষ্ট কিছু জানায়নি পুলিশ৷ 

তদন্তে একটি বেসরকারি বাসের হদিশ পায় পুলিশ৷ সেই বাসের মালিক ও চালক অভিযুক্ত মনু সিংহ৷ তাকে জেরা করা হয়। সে জানায় মহিলা তার প্রেমিকা ছিলেন। আড়াই বছর প্রেমের সম্পর্ক। ২০২৩ সালে তিনি স্বামীর সঙ্গে বচসা করে দুই সন্তান নিয়ে নয়ডায় চলে আসেন৷ সেখানেই মনুর সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। মনু জানিয়েছে, ওই মহিলা তাকে বিয়ে করার জন্য চাপ দিতেন৷ এদিকে মনুও বিবাহিত। শুধু তাই নয়, মহিলার কাছ থেকে প্রায় দু'লক্ষ টাকা ধার নেয় মনু। সেই টাকা ফেরত দিতে না পারায় মনুর উপর চাপ দিচ্ছিলেন তিনি। এরপরই প্রেমিকাকে সরিয়ে ফেলার পরিকল্পনা করছিল মনু। তাঁকে বাসে করে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে ডাকে মনু। এরপরই বাসের ভিতরে তাঁকে খুন করে অভিযুক্ত। মাথা ও হাত কেটে নেয়। পরে মৃতদেহ নর্দমায় ফেলে গাজিয়াবাদে পালিয়ে যায়।

জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত স্বীকার করেছে যে, সে খুন করেছে। খুনের পর সে তাঁর হাতও কেটে ফেলে। এরপর মৃতদেহ নয়ডায় ফেলে আসে, আর কাটা মাথা ও হাত নিয়ে গিয়ে ফেলে দনকৌরে। এর আগে, অভিযুক্তজে খুঁজতে পুলিশ নিহত মহিলার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছিল এবং আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখছিল।

প্রসঙ্গত, পুলিশ চৌকি থেকে ২০০ মিটার দূরে মহিলার মৃতদেহ উদ্ধার হয় চলতি মাসের ৬ নভেম্বর। এক সাফাইকর্মী প্রথমে দেহটি নর্দমায় পড়ে থাকতে দেখে তড়িঘড়ি পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়েই তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ।  দ্রুত তরুণীর দেহ অটোপ্সির জন্য পাঠানো হয়। ঘটনায় কে বা কারা জড়িত, তা খতিয়ে দেখা শুরু করে পুলিশ। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হয়। ওই এলাকায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চিরুনি তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। পাশাপাশি খুনের মামলাও রুজু করা হয়।