আজকাল ওয়েবডেস্ক: ২০২৫ সালের গ্লোবাল কার্বন বাজেট রিপোর্ট বিশ্বকে আবারও সতর্ক করে দিয়েছে। চলতি বছর ফসিল জ্বালানি থেকে কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ পৌঁছাবে ৩৮.১ বিলিয়ন টনে, যা গত বছরের তুলনায় ১.১% বেশি এবং ইতিহাসের সর্বোচ্চ। বিশ্বের জ্বালানি ব্যবস্থায় ডিকার্বনাইজেশনের কিছু অগ্রগতি দেখা গেলেও দ্রুত বাড়তে থাকা জ্বালানি চাহিদা সেই অগ্রগতি পুরোপুরি ক্ষতিপূরণ করতে পারছে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, CO₂ নিঃসরণের এই ধারাবাহিক বৃদ্ধি ইঙ্গিত দিচ্ছে যে বায়ুমণ্ডলে গ্রিনহাউস গ্যাসের পরিমাণ আরেক ধাপ বাড়বে, আর তার সঙ্গে বাড়বে বিশ্ব উষ্ণায়নের ঝুঁকি ও প্রকৃতিতে বিপর্যয়কর প্রভাব।
বন কেটে ফেলার জন্য ২০২৫ সালে নিঃসরণ কমে ৪.১ বিলিয়ন টন হবে বলে পূর্বাভাস রয়েছে। এর ফলে মোট CO₂ নিঃসরণ ২০২৪ সালের তুলনায় সামান্য কম হলেও বড় কোনো স্বস্তি নেই। কারণ, পরিবেশবিজ্ঞানীরা বলছেন ১.৫°C তাপমাত্রা সীমা রক্ষার বাকি কার্বন বাজেট এখন কার্যত শেষের পথে।
বর্তমান নিঃসরণ হারে ১.৫°C সীমা ধরে রাখা আর বাস্তবসম্মত নয়। প্রায় ১৭০ বিলিয়ন টনের বাকি কার্বন বাজেট ২০৩০ সালের আগেই শেষ হয়ে যাবে। জলবায়ু পরিবর্তন এখন স্থল ও মহাসাগরের কার্বন শোষণ ক্ষমতা দুর্বল করে দিচ্ছে, যা পৃথিবীর পরিবেশগত ভারসাম্যের জন্য বড় সতর্কবার্তা।
নেচার জার্নালে প্রকাশিত নতুন গবেষণার সঙ্গে প্রকাশিত এই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ১৯৬০ সাল থেকে বায়ুমণ্ডলে CO₂ ঘনত্ব বৃদ্ধির ৮% দায়ী জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সিঙ্ক দুর্বলতা।
২০২৩-২৪ সালের এল নিনো পরবর্তী সময়ে বনভূমির শোষণ ক্ষমতা কিছুটা ফিরে এলেও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং দক্ষিণ আমেরিকার বিশাল অংশে বনভূমি এখন সিঙ্ক থেকে সোর্সে রূপান্তরিত হয়েছে—অর্থাৎ শোষণের বদলে CO₂ বাতাসে ছাড়ছে।
২০২৫ সালে:
চীনের নিঃসরণ বাড়বে ০.৪%, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোর তুলনায় কম। নবায়নযোগ্য জ্বালানির তীব্র বৃদ্ধিই এর প্রধান কারণ।
ভারতের নিঃসরণ বাড়বে ১.৪%, যা আগের প্রবণতার তুলনায় কম। বছরের শুরুতে আগাম বর্ষা গ্রীষ্মকালীন শীতলীকরণ চাহিদা কমিয়ে দেয়, ফলে জ্বালানি ব্যবহারের চাপ কম থাকে।
বিশ্ব উষ্ণায়ন থামাতে এখনো কার্যকর পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়। কার্বন সিঙ্ক দুর্বল হওয়া ও লাগামহীন CO₂ নিঃসরণ দেখিয়ে দিচ্ছে যে এখনই নাটকীয় হারে নিঃসরণ কমানো ছাড়া বিকল্প নেই।
