আজকাল ওয়েবডেস্ক: চিনে সম্প্রতি একটি অদ্ভুত ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক ঝড় তুলেছে। ভিডিওটিতে দেখা গিয়েছে, এক তরুণী তাঁর নিজেরই শোবার ঘরকে ব্যবহার করছেন সাপ চাষের জন্য। পুরো ঘটনায় সবচেয়ে চমকে দেওয়ার মতো বিষয় হলো তিনি নিজের বিছানার কম্বলের নিচে শত শত সাপ লুকিয়ে রেখেছেন। এই ঘটনা ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়াজুড়ে।
আসল ঘটনা কী? ভিডিওটির শুরুতে দেখা যাচ্ছে, তরুণী খুব স্বাভাবিক ভঙ্গিতে বিছানার কম্বল তুলছেন। এরপর যা দেখা যায় তাতে চোক্ষু চড়কগাছ সবার। দেখা যাচ্ছে কম্বলের নিচ থেকে বেরিয়ে আসছে শ'য়ে শ'য়ে সাপ। এই ভয়াবহ দৃশ্য দেখে প্রথমে দর্শকেরা হতভম্ব হয়ে যান। ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর জানা যায়, ওই তরুণী সবসময় নিজের ঘরের দরজা বন্ধ রাখতেন। এমনকি কাউকে তাঁর ঘরের ভিতরে প্রবেশ করতে দিতেন না। বিছানার উপর সবসময় মোটা কম্বল ঢাকা থাকত আসলে ওইটা সাপদের জন্য এক গোপন আশ্রয়স্থল ছিল বলে অনুমান করা হয়েছে।
পরবর্তীতে যখন তরুণীর ঘর খোলা হয় এবং কম্বল সরিয়ে ফেলা হয়, ঘটনাস্থলে উপস্থিত সকলে বিস্ময়ে প্রায় হতবাক হয়ে যান। দেখা যায়, বিছানার নিচে শত শত সাপ কিলবিল করছে। তরুণী তাঁর শোবার ঘরকে একটি উষ্ণ পরিবেশে রূপান্তর করেছিলেন, যা মূলত সাপ চাষের জন্য উপযোগী। কম্বলের নিচে জমে থাকা উষ্ণতাই ছিল সাপগুলোর বেঁচে থাকার মূল উৎস। অন্যদের কাছে ঘটনাটি গা ছমছমে মনে হলেও তরুণীর কাছে এটি ছিল একেবারেই স্বাভাবিক ও সামান্য দৈনন্দিন চর্চার একটি অংশ।
চিনে সাপ চাষ নতুন কিছু নয়। তরুণদের মধ্যে সাপ, টিকটিকি এবং মাকড়সার মতো অদ্ভুত পোষা প্রাণীর প্রতি আগ্রহ দিন দিন বেড়ে চলেছে। সূত্রে খবর অনুযায়ী, সাংহাইয়ের মতো শহরগুলিতে এখন এমন কিছু ক্যাফেও তৈরী হয়েছে যেখানে গেকো ও সাপের মতো বিভিন্ন সরীসৃপ প্রাণী রাখা হয়। আর দেখা যায় সেখানে মহিলা দর্শনার্থীরা এই ‘কিউট’ প্রাণীদের সঙ্গে সময় কাটাতে আসেন।
তবে শুধু পোষা প্রাণী হিসেবেই নয়, চিনের অনেক ফার্মে সাপ চাষ করা হয় তাদের বিষ সংগ্রহের জন্য। খবর মারফত এটি ঐতিহ্যবাহী ওষুধ এবং অ্যান্টিভেনম তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। ভিয়েতনামের ডং তাম সাপ ফার্মের মতো কিছু প্রতিষ্ঠান বিশাল এলাকাজুড়ে গড়ে উঠেছে। সেখানে শত শত বিষধর সাপ রাখা হয়।
তবে এই তরুণীর ঘটনা একেবারেই ব্যতিক্রম। নিজ শোবার ঘরকে সাপচাষের কেন্দ্রে রূপান্তর করা এবং জীবন্ত সাপ বিছানায় রেখে ঘুমানো নিঃসন্দেহে এক ভিন্নধর্মী ও ঝুঁকিপূর্ণ পদক্ষেপ। তবে তাঁর কাছে এটি প্রতিদিনের এক স্বাভাবিক জীবনযাত্রারই অংশ ছিল বলে তিনি দাবি করেছেন। তিনি জানিয়েছেন সাপচাষ তাঁর কাছে নিছক পেশা নয়, এক রকম ভালোবাসাও বটে।
