আজকাল ওয়েবডেস্ক: পৃথিবীর সবথেকে বড় জঙ্গল বলতে আমাদের মনে সবার আগে আসে আমাজনের নাম। এখান থেকে যে হারে অক্সিজেন পায় পৃথিবী তাতে বেঁচে রয়েছে গোটা পৃথিবীর প্রাণীকুল। তবে এবার এখান থেকেই চিন্তার কারণ শুরু হয়েছে। যে হারে পরিবেশের তাপমাত্রার বাড়ছে সেখান থেকে আমাজনের জঙ্গল সবথেকে বেশি সমস্যায় পড়েছে। এই বদলে যাওয়া পরিবেশের সঙ্গে সে মানিয়ে নিতে পারছে না। এমনকি সেখানকার প্রাণীরাও নিজেদের মানিয়ে নিতে পারছে না।
পরিবেশবিদরা এখানে অশনি সঙ্কেত দেখছেন। তারা মনে করছেন আমাজন জঙ্গলের ইকোসিস্টেম ব্যহত হচ্ছে। ফলে সেখান থেকে পরিবেশে একটি বড় বদল হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। যদি এই জঙ্গলের পরিবেশ থেকে অক্সিজেন তৈরি বন্ধ হয়ে যায় বা কমে যায় তাহলে সেখান থেকে গোটা পৃথিবীর মানুষকে হাতে করে অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে ঘুরতে হবে।
আরও পড়ুন: উদ্ধার হল বিখ্যাত সাঁতারু বুলা চৌধুরীর চুরি যাওয়া পদ্মশ্রী
যে সমীক্ষা এখানে করা হয়েছিল সেটি শুরু হয়েছিল আজ থেকে প্রায় ৪০ বছর আগে। পেরু এবং বলিভিয়ার একদল গবেষক এই সমীক্ষা করেছিলেন। তারা জানিয়েছেন প্রায় ৪০ বছর আগে আমাজনের জঙ্গলে গাছ ছিল প্রায় ৬৬ হাজার। বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী ছিল ২৫০০। এছাড়া এখানকার জলের নিচে ছিল ১২ হাজারের বেশি প্রাণী। তবে বিগত ৪০ বছরে এই পরিবেশে বিরাট বদল হয়েছে। সেখান থেকে বিপন্নের পথে এই প্রাণীরাও।
এর প্রধান কারণ হিসেবে গবেষকরা দেখেছেন পৃথিবীর গড় উষ্ণতা বৃদ্ধি। এই এলাকা এতদিন ধরে যেভাবে শীতল পরিবেশ বজায় ছিল সেখান থেকে এখানকার পরিবেশে বিরাট বদল ঘটেছে। নতুন পরিবেশের সঙ্গে একেবারে মানিয়ে নিতে চাইছে না আমাজনের জঙ্গল। এখানকার গাছগুলি এতদিন পর্যন্ত যে হারে অক্সিজেন তৈরি করত সেখান থেকে সেগুলি অনেকটা পিছিয়ে পড়ছে।

যত দিন অতিবাহিত হয়ে চলেছে ততই আমাজনের জঙ্গল নিজের আসল পরিবেশকে পিছনে ফেলছে। এরফলে এখানকার প্রাণীরা বিরাট সমস্যার সামনে পড়ছে। পাশাপাশি গাছগুলি অক্সিজেন তৈরিতে বাধা পাচ্ছে। আমাজনের জঙ্গল পৃথিবী থেকে কার্বনকে শুষে নিতে দক্ষ। ফলে সেখান থেকে যদি এই প্রক্রিয়া বাধাপ্রাপ্ত হয় তাহলে তাহলে পৃথিবীতে কার্বণের পরিমান বাড়বে। তখন অক্সিজেনের যে ঘাটতে হবে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
পরিবেশবিদরা মনে করছেন আমাজনের জঙ্গল থেকে যে প্রাণীরা পরিবেশের ইকোসিস্টেম ধরে রাখে তাদেরও প্রাণ বিপন্ন হতে পারে। এই বদলে যাওয়া পরিবেশের সঙ্গে তারাও মানিয়ে নিতে পারছে না। তাদের চেনা জঙ্গল এখন তাদের কাছে অনেকটা অজানা।
বছরের একটি বিরাট সময় এখানে বৃষ্টিপাত হয়ে থাকে। এর সঙ্গেই সকলেই অভ্যস্ত। তবে ধীরে ধীরে সেই বৃষ্টিতেও পড়ছে পরিবেশের কালো ছায়া। ফলে সেখান থেকে এখানকার গাছগুলি নিজের মতো করে অক্সিজেন তৈরি করতে পারছে না। আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই পৃথিবীর বাতাসে অক্সিজেনের যে ঘাটতি নজরে আসবে তার সূচনা ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। এবার রয়েছে হাতে গোনা সময়। তার মধ্যে যদি আমাজনকে না বাঁচানো যায় তাহলে গোটা পৃথিবীর মানুষ যে অক্সিজেনের অভাব বোধ করবেন তার মোকাবিলা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। কারণ পৃথিবীতে আর একটা আমাজন ফরেস্ট তৈরি করা যাবে না।

