আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিমান ভ্রমণে যাত্রীদের ছোট্ট অবহেলা ফ্লাইট অ্যাটেন্ডেন্টদের জন্য বিরাট বিরক্তির কারণ হয়ে উঠছে। নিউইয়র্ক পোস্টের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অনেক যাত্রী বিমান টয়লেটে ঢুকে দরজা সঠিকভাবে লক না করেন বা ব্যবহার শেষে পুরোপুরি বন্ধ করে আসেন না। এর ফলে টয়লেটের বাইরে “occupied” বা ব্যস্ত সাইন জ্বলে না, অন্য যাত্রী ভেবে বসেন টয়লেট খালি আছে। এতে হঠাৎ করে কেউ ঢুকে পড়তে পারেন, যা দুই পক্ষের জন্য বিব্রতকর, আবার টয়লেটের সামনে লাইন তৈরি হয়ে ক্রুদের কাজের জায়গায় ভিড় বাড়িয়ে তোলে।
একজন অভিজ্ঞ ফ্লাইট অ্যাটেন্ডেন্ট জানিয়েছেন, যাত্রীরা এই বিষয়টি খুবই হালকাভাবে নেন, কিন্তু বাস্তবে এটি সময় নষ্ট করে, কর্মক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে এবং অনেক সময় যাত্রীদের জন্য অপ্রত্যাশিত অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করে।
শুধু টয়লেট ব্যবহার নয়, বিমানে যাত্রীদের নানা ধরণের অসাবধানতা ক্রুদের বিরক্তির কারণ হচ্ছে। কেউ কেউ লাগেজ নির্দিষ্ট জায়গায় না রেখে লুকিয়ে রাখছেন, আবার অনেক যাত্রী ল্যান্ডিংয়ের আগে আসন সোজা করার নিয়ম মানছেন না। অনলাইনে অনেক আলোচনায় উঠে এসেছে যে এখনকার দিনে নিয়মকানুনে যাত্রী ও ক্রু উভয়েরই শিথিলতা দেখা যাচ্ছে।
প্রতিবেদনে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যাত্রীদের উচিত টয়লেট ব্যবহারের সময় দরজা ভালোভাবে লক করা এবং বিমানের মৌলিক শিষ্টাচার মানা। অন্যদিকে, এয়ারলাইন কর্তৃপক্ষকেও যাত্রীদের সচেতন করতে নিয়মিত নির্দেশনা দেওয়া এবং নিরাপত্তা ঘোষণায় এ ধরনের বিষয় স্পষ্টভাবে জানানো প্রয়োজন।
বিমানে অশালীন আচরণের ঘটনা ক্রমশই বাড়ছে, যা শুধু ফ্লাইট অ্যাটেন্ডেন্টদের নয়, অন্যান্য যাত্রীদেরও বিপাকে ফেলে দিচ্ছে। অনেক সময় যাত্রীরা টয়লেট ব্যবহারকালে দরজা লক না করার পাশাপাশি অশোভন আচরণও করেন—যেমন টয়লেট অপরিষ্কার রেখে আসা, দীর্ঘ সময় ধরে ভিতরে বসে থাকা কিংবা ধূমপান করার চেষ্টা করা। এগুলো শুধু নিয়মবহির্ভূতই নয়, অন্যদের জন্য মারাত্মক অসুবিধারও কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
অশালীনতার মধ্যে আরও দেখা যায়—যাত্রীদের চিৎকার, মদ্যপ অবস্থায় বেয়াদবি করা, কেবিন ক্রুর নির্দেশ অমান্য করা কিংবা আসনের শালীন ব্যবহার না করা। কেউ পা তুলে অন্য আসনে ছড়িয়ে দেন, আবার কেউ উচ্চস্বরে গান শোনেন বা ফোনে কথা বলেন। সম্প্রতি একাধিক ঘটনায় দেখা গেছে, যাত্রীরা ক্রুদের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ছেন, এমনকি শারীরিক আক্রমণের ঘটনাও ঘটেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘ ভ্রমণ, দেরি, ক্লান্তি বা অতিরিক্ত মদ্যপান অনেক সময় যাত্রীদের এই ধরণের আচরণের দিকে ঠেলে দেয়। তবে বিমান ভ্রমণ একটি শেয়ার্ড স্পেস—এখানে শতাধিক মানুষ একসঙ্গে সীমিত জায়গায় যাত্রা করেন। তাই প্রত্যেকের দায়িত্ব হলো শালীনতা বজায় রাখা এবং মৌলিক নিয়মগুলো মেনে চলা। নাহলে অল্প কয়েকজনের অশালীনতার কারণে সবার ভ্রমণ অভিজ্ঞতা নষ্ট হয়ে যায়।
এয়ারলাইন কর্তৃপক্ষ এখন এসব সমস্যা রোধে কড়া নিয়ম চালু করছে। প্রয়োজন হলে অশালীন যাত্রীদের ফ্লাইট শেষে ব্ল্যাকলিস্টে রাখা হচ্ছে, যাতে ভবিষ্যতে তারা সহজে আর টিকিট বুক করতে না পারেন।
