আজকাল ওয়েবডেস্ক: শুল্ক না চাপালে ঘুম আসছে না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। সোমবার ফের শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করলেন তিনি। এ বার নিশানা আমেরিকার বাইরে তৈরি সিনেমা। আমেরিকার বাইরে তৈরি সিনেমার উপর ১০০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করলেন ট্রাম্প। নিজের সোশ্যাল মিডিয়া ট্রুথ সোশ্যালে তিনি লিখেছেন, “আমাদের সিনেমার ব্যবসা আমেরিকার থেকে অন্য দেশ চুরি করে নিয়েছে। যেমনটা হয় বাচ্চার থেকে লজেন্স নিয়ে নেওয়া।” রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প মে মাসের শুরুতে এই ধরনের শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন কিন্তু খুব কম তথ্য প্রদান করেছিলেন, যার ফলে বিনোদন শিল্পে বিভ্রান্তি দেখা দেয়।
বিদেশের মাটিতে ভারতীয় সিনেমার আয়ের ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশ আসে আমেরিকার থেকেই। অর্থাৎ আমেরিকার বাজার বলিউড এবং অন্যান্য আঞ্চলিক সিনেমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বাজার। শুল্ক বৃদ্ধির ফলে টিকিটের দাম এবং বিতরণ খরচ দ্বিগুণ হতে পারে। যা অনেক ভারতীয় চলচ্চিত্র মুক্তির পথে বাধার সৃষ্টি করবে। ছোট এবং মাঝারি বাজেটের প্রযোজনা সংস্থাগুলি সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে। কারণ, সেগুলির লাভের হার খুবই কম হয়।

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাম্প জানুয়ারিতে হলিউডের প্রবীণ অভিনেতা জন ভয়েট, সিলভেস্টার স্ট্যালোন এবং মেল গিবসনকে শিল্পকে ‘আগের চেয়েও বড়, উন্নত এবং শক্তিশালী’ অবস্থানে ফিরিয়ে আনার জন্য নিযুক্ত করেছিলেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, মে মাসে হলিউডের পুনরুজ্জীবনের জন্য একটি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করতে ভয়েট এবং তাঁর ব্যবসায়িক সহযোগী স্টিভেন পল এবং স্কট ক্যারল ফ্লোরিডার পাম বিচে ট্রাম্পের মার-এ-লাগো এস্টেটে গিয়েছিলেন।
ভয়েট বলেছেন, “ঈশ্বরের কৃপায় প্রেসিডেন্ট হলিউড এবং সিনেমার প্রতি যত্নশীল। হলিউডের প্রতি তাঁর প্রচণ্ড ভালবাসা। আমাদের পুরোদমে দায়িত্ব নিতে হবে। আমরা ডেট্রয়েটের মতো এটিকে নষ্ট হতে দিতে পারি না।”
আরও পড়ুন: অবিশ্বাস্য! ভুল পথে দৌড়েও প্রথম ৯ বছরের বালক, মায়ের দুশ্চিন্তা মুহূর্তে বদলে গেল বিস্ময়ে
একটি পৃথক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে, ভয়েট এবং তাঁর সহযোগীরা ১০ থেকে ২০ শতাংশ ফেডারেল ট্যাক্স ক্রেডিটের প্রস্তাবও করেছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, যদি কোনও মার্কিন প্রযোজক বিদেশে শুটিং করতে চান, তাহলে তাদের উপর প্রাপ্ত বিদেশী কর ছাড়ের মূল্যের ১২০ শতাংশ সমপরিমাণ শুল্ক আরোপ করা হবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ভারতীয় প্রবাসীদের সংখ্যা আনুমানিক ৫২ লক্ষেরও বেশি। এর অর্থ সিনেমা হলে আগতদের সংখ্যা ক্রমশ কমবে কারণ টিকিটের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে। ফলস্বরূপ, ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলিতে দর্শকরা ঝুঁকতে শুরু করবেন। সিনেমা হলে সিনেমা দেখার স্ট্রিমিং পছন্দ করবেন।
চলচ্চিত্র শিল্পের উপর শুল্ক কীভাবে কার্যকর হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়। মে মাসে, যখন ট্রাম্প শিল্পের উপর শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন, তখনও তিনি বলেননি যে স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মের পাশাপাশি সিনেমা হলে মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রগুলিতেও এই শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছেন কি না।
উৎপাদন খরচ না কি বক্স অফিসের রাজস্বের উপর নির্ভর করে শুল্ক আরোপ করা হবে তাও নির্দিষ্ট করা হয়নি। মে মাসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দ্য গার্ডিয়ান আরও বলেছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশের মধ্যে বিভক্ত প্রযোজনাগুলি ছাড় পাবে কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়।
