আজকাল ওয়েবডেস্ক: অফিসে এলেও, কাজে মন থাকত না। নিজের ডেস্কেও সবসময় পাওয়া যেত না। কোথায় সময় কাটাতেন কর্মী? জানা গেছে, অফিসের ওয়াশরুমে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতেন। কমপক্ষে চার ঘণ্টা অফিসের ওয়াশরুমেই সময় কাটাতেন। কর্মীর এহেন কীর্তিতে শেষমেশ কড়া পদক্ষেপ বসের। শেষমেশ চাকরি থেকে ছাঁটাই করলেন ওই কর্মীকে। 

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে চীনে। জানা গেছে, পূর্ব চীনের জিয়াংসু প্রদেশে এই ঘটনাটি ঘটেছে। ওই যুবকের নাম, লি। পেশায় তিনি একজন ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অফিসে কাজ বাদ দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ওয়াশরুমে সময় কাটাতেন তিনি। 

অফিসের তরফে আরও জানানো হয়েছে, ২০২৪ সালে এপ্রিল থেকে মে মাসের মধ্যে ১৪ বার এমন নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে লিয়ের বিরুদ্ধে। সর্বোচ্চ চার ঘণ্টা ওয়াশরুমে কাটিয়েছেন তিনি‌। জানা গেছে, লি কঠিন অসুখে ভুগছিলেন। পাইলস অর্থাৎ অর্শের সমস্যায় ভুগছিলেন। সেই কারণেই ঘনঘন ওয়াশরুমে যেতে হত তাঁকে। 

অফিসের তরফে ছাঁটাইয়ের নোটিশ পেতেই পাল্টা মামলা রুজু করেছিলেন লি। সম্প্রতি সাংহাই ফেডারেশন অফ ট্রেড ইউনিয়ন লি ও তাঁর অফিসের ঝামেলার বিষয়টি প্রকাশ্যে আনে। লি মেডিক্যাল সার্টিফিকেট দেখিয়েছেন। গত বছর মে, জুন মাসে অর্শের ওষুধ কেনা, জানুয়ারিতে অস্ত্রোপচারের প্রমাণ দেখিয়েছেন তিনি‌। ছাঁটাইয়ের জেরে অফিসের বিরুদ্ধে আর্থিক ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে মামলা রুজু করেছেন তিনি। 

অন্যদিকে ওই অফিস জানিয়েছে, ২০১০ সালে লি কাজ শুরু করেন। ২০১৪ সালে নতুন কন্ট্র্যাক্ট পান। কোম্পানির নিয়ম অনুযায়ী, ১৮০ দিনের মধ্যে বিনা অনুমতিতে তিনদিন ছুটি নিলেই, কর্মীকে ছাঁটাই করা হবে। সেই নিয়মেই লিকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। পাশাপাশি সিসিটিভি ফুটেজেও দেখা গেছে, চার ঘণ্টা অফিসের ওয়াশরুমেই সময় কাটিয়েছেন তিনি। 

অন্যদিকে সময়ের আগেভাগে অফিসে আসার জন্য এক মহিলা কর্মীকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছেন বস। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে স্পেনে। ২২ বছর বয়সি এক তরুণী নির্ধারিত সময়ের ৪০ মিনিট আগে অফিসে পৌঁছতেন। তাও আবার রোজ। অফিস শুরু হত সাড়ে সাতটা থেকে। এদিকে রোজ পৌনে সাতটা থেকে সাতটার মধ্যে অফিসে পৌঁছতেন ওই তরুণী। ২০২৩ সাল থেকে তরুণীর এহেন কীর্তি নিয়ে অফিসে ঝামেলা শুরু হয়। 

জানা গেছে, অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বস একাধিকবার তরুণীকে সময় মেনে অফিসে প্রবেশ করার কথা বলেছিলেন। যে সময় অফিস শুরু হয়, তার আগে আসতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু সেই নির্দেশ অমান্য করে, দিনের পর দিন ৪০ মিনিট আগেই অফিসে পৌঁছে যেতেন তিনি। 

ওই অফিসের ম্যানেজার জানিয়েছেন, সময়ের আগে অফিসে আসলেও, কোনও কাজ করতেন না তিনি। কারণ, তখন অফিসে কোনও কাজ থাকে না। সময়ের আগেভাগে পৌঁছে কোনও লাভ হত না‌। তাও ওই কর্মী নির্দেশ অমান্য করে আগেভাগেই চলে আসতেন অফিসে। কয়েক মাস সতর্ক করার পর, অবশেষে তরুণীকে বরখাস্ত করে ওই অফিস। 

তরুণী এরপর মামলা রুজু করে আদালতে বিষয়টি পেশ করেন। তাঁর দাবি, কোনও নিয়ম না মেনে অফিস তাঁকে বরখাস্ত করেছে। এদিকে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, অফিসের একাধিক নির্দেশ, চিঠি মারফত সতর্কতার পরেও তা অমান্য করেন তরুণী। তাড়াতাড়ি না আসার নির্দেশ দেওয়ার পরেও, আরও ১৯ দিন একই কাজ করেন তিনি। এমনকী অফিসে পৌঁছনোর আগেই অ্যাপের মাধ্যমে লগ ইন করার চেষ্টা করতেন। 

তরণীর সহকর্মীরা জানিয়েছেন, তিনি অফিসের আরও একাধিক নিয়ম ভেঙেছেন। অফিসকে না জানিয়ে, অফিসের গাড়ির ব্যবহৃত ব্যাটারি বিক্রি করে দিয়েছিলেন। বিচারপতি জানিয়েছেন, সময়ের মধ্যে বা খানিকক্ষণ আগে অফিসে পৌঁছনো দোষের নয়। কিন্তু বারবার অফিসের নিয়ম ভঙ্গ করার অন্যায়। 

ঘটনাটি ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্ক ছড়িয়েছে। একাংশের বক্তব্য, অফিসে সময়ের আগেভাগে পৌঁছনো দোষের নয়। এমনকী তা ঘিরে অফিসের বস আপত্তিও তুলতে পারেন না। কয়েকজনের বক্তব্য, প্রতিটি অফিসে একগুচ্ছ নিয়ম থাকে। সতর্ক করার পরেও একাধিকবার নিয়ম ভাঙলে, অফিস কড়া পদক্ষেপ করতেই পারে।