আজকাল ওয়েবডেস্ক: বদলা নেওয়া কি আর থামছে না ট্রাম্পের? একের পর এক সিদ্ধান্ত। বারবার নিশানায় চীন। এবার চীন বলল, ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত, ট্রাম্প নিজে সবই দু' মুখো। ডবল স্ট্যান্ডার্ড। শনিবারের ট্রাম্পের ঘোষণার পর থেকেই নজর ছিল চীনের প্রতিক্রিয়ার দিকে। রবিবার সামনে এল তা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, মার্কিন মুলুক এবং ট্রাম্প, তাঁদের কার্যকলাপ, সিদ্ধান্ত সব আসলে ডবল স্ট্যান্ডার্ড। দ্বিচারিতা করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
শনিবারেই জানা গিয়েছিল, মার্কিন-চীন বাণিজ্য সংঘাত আরও বাড়ল। ১লা নভেম্বর থেকে সমস্ত চীনা পণ্যের উপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের শুল্ক বৃদ্ধি এবং সফ্টওয়্যার রপ্তানি নিয়ন্ত্রণের ঘোষণাটি চিনের বিরল মাটির খনিজ পদার্থের উপর রপ্তানি সীমা আরোপের সিদ্ধান্তের পাল্টা প্রতিক্রিয়া। পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সতর্ক করে বলেছেন যে, বেজিং অতিরিক্ত পদক্ষেপ করলে বাড়তি শুল্ক আরও দ্রুত কার্যকর হতে পারে।
বর্তমানে চিনের উপর মার্কিন শুল্কের পরিমাণ ৩০ শতাংশ। আবার, মার্কিন পণ্যের উপর চিন নেয় ১০ শতাংশ শুল্ক। ট্রাম্পের শনিবারের ঘোষণার পর চিনা পণ্যে মার্কিন শুল্কের পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ১৩০ শতাংশে। মার্কিন আধিকারিকরা বলছেন যে, চীনের রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ দক্ষিণ কোরিয়ায় APEC শীর্ষ সম্মেলনের আগে লাভ অর্জনের জন্য একটি ইচ্ছাকৃত পদক্ষেপ। যেখানে ট্রাম্প এবং চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাক্ষাতের কথা ছিল। সেই বৈঠকটি এখনও অনিশ্চিৎ। ট্রাম্প বলেছেন যে, তিনি চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করার কোনও কারণ দেখছেন না। যদিও তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ওই বৈঠকটি বাতিল করেননি।
আরও পড়ুন: আর কয়েক ঘণ্টা, বর্ষার ভোগান্তি শেষ! আগামী সপ্তাহেই বাংলায় শীতের আমেজ? রইল আবহাওয়ার মেগা আপডেট
তাহলে কেন এই হঠাৎ শুল্ক বৃদ্ধি? মনে করা হচ্ছে যে এটা প্রতিশোধমূলক। চীনের বিরল মাটির খনিজ পদার্থের উপর রফতানি সীমা আরোপের সিদ্ধান্ত, আমেরিকার শিল্প ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রকে আঘাত করেছে। আমেরিকা বিরল খনিজ এমপি ম্যাটেরিয়ালসে ৪০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা তৈরির চেষ্টা করেছে। কিন্তু এখনওতা পর্যাপ্ত নয়, ওয়াশিংটন চীনা সরবরাহের উপর নির্ভরশীল। অন্যদিকে ট্রাম্পের পদক্ষেপ রাজনৈতিকও। ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই নিজেকে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কঠোর হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। বাজার অস্থির থাকা সত্ত্বেও, তিনি তাঁর ইঙ্গিত দিচ্ছেন যে- আমেরিকাকে হুমকির মুখে ফেলা যাবে না। এছাড়াও ট্রাম্পের পদক্ষেপের নেপথ্যে রয়েছে কৌশলগত দিকও। ট্রাম্প শুল্ককে লিভারেজ হিসেবে ব্যবহার করেন, প্রতিদ্বন্দ্বীদের আলোচনায় চাপ দেওয়ার জন্য এই ধরণের ঘোষণা করেন। এই সিদ্ধান্তের নেপথ্য়ে, শুল্ক আদায়ের বিষয়ে কম, বরং ওয়াশিংটনের শর্তে চীনকে ফের আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা হতে পারে।
একই সঙ্গে উল্লেখ্য, অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের সঙ্গেই, তিনি এ মাসের শেষের দিকে চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সাথে নির্ধারিত বৈঠক বাতিল করারও হুমকি দিয়েছেন বলেও জানা গিয়েছে। রবিবার, বেইজিং অভিযোগ করেছে যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেপ্টেম্বর থেকে চীনের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা জোরদার করছে। তাদের দাবি, এইসব সিদ্ধান্ত মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে চীনের স্বার্থকে এবং এবং দুই পক্ষের মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য আলোচনার পরিবেশকে।
