আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাশিয়া-ইউক্রেন এবং ইরান-ইজরায়েল সংঘাতের পর চীন এবং জার্মানির মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই উত্তেজনার কারণ, লেজার অস্ত্র একটি জার্মান বিমানে ব্যবহার করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। কয়েক দিন আগে লোহিত সাগরে ঘটে যাওয়া এই ঘটনার পর থেকে ক্ষুব্ধ বার্লিন। তবে, চীন জার্মান বিমানে লেজার ব্যবহারের সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করছে। জার্মান যাত্রীদের বহনকারী একটি অসামরিক বিমান যখন জানতে পারে যে সেটিকে লেজার দ্বারা নিশানা করা হয়েছে তখন ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে।
লেজারের আওতায় আসার সঙ্গে সঙ্গেই পাইলট জিবৌটিতে অবস্থিত ইউরোপীয় ঘাঁটিতে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী কোথা থেকে এই লেজার রশ্মি নিক্ষেপ করা হয়েছিল তা নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করেন। তদন্তে জানা গিয়েছে, লেজার রশ্মির উৎস ছিল একটি চীনা যুদ্ধজাহাজ যা এডেন উপসাগরের কাছে আরব সাগরে উপস্থিত ছিল। জার্মান সরকার এই ঘটনাকে একটি গুরুতর নিরাপত্তাজনিত হুমকি বলে অভিহিত করে তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।
The Chinese military employed a laser targeting a German aircraft in the EU operation #ASPIDES. Endangering German personnel & disrupting the operation is entirely unacceptable. The Chinese ambassador was summoned to the Federal Foreign Office today.
— GermanForeignOffice (@GermanyDiplo)Tweet by @GermanyDiplo
জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বার্লিনে চীনা রাষ্ট্রদূতকে তলব করে এই অভিযোগের উত্তর জানতে চেয়েছে। সমনের তারিখ ঘোষণা করে মন্ত্রকের তরফ থেকে এক্স হ্যান্ডলে লেখা হয়েছে, "জার্মান কর্মীদের বিপদে ফেলা এবং অভিযানে ব্যাঘাত ঘটানো কোনও ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।“
জার্মান গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নজরদারি বিমানটি বিশেষভাবে তৈরি বিচক্রাফ্ট কিং এয়ার ৩৫০। জিবৌটি থেকে উড়েছিল। ২ জুলাই ইয়েমেনের উপকূলে অভিযান চালানোর সময় যখন বিমানটিকে নিশানা করা হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। তখন অসামরিক বিমান ক্রুদের পাশাপাশি জার্মান সশস্ত্র বাহিনীর চারজন সদস্যও বিমানটিতে ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।

বিদেশী বিমানের বিরুদ্ধে লেজার ব্যবহারের অভিযোগ চীনের বিরুদ্ধে এই প্রথম নয়। তবে বেজিং সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এই ঘটনা আবারও লেজার অস্ত্রের প্রতিযোগিতা নিয়ে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিশ্বজুড়ে সেনাবাহিনী এবং প্রতিরক্ষা পরীক্ষাগারগুলি একটি নতুন শ্রেণীর শক্তিশালী লেজার রশ্মি তৈরিতে নিযুক্ত রয়েছে যা মাঝআকাশে কোনও লক্ষ্যবস্তুগুলিকে নিষ্ক্রিয় করার ক্ষমতা রাখে।
লেজার প্রযুক্তি ব্যবহার করে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করা যেতে পারে। শক্তিশালী লেজার যুদ্ধবিমান চালকদের অন্ধ করে দিতে পারে অথবা বিমানের ক্ষতি করতে পারে। রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত থেকে শুরু করে ১২ দিনের ইজরায়েল-ইরান যুদ্ধ এবং ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে অপারেশন সিন্দুরে ব্যাপকভাবে ড্রোন করা হয়েছে। তবে লেজারগুলি ড্রোন-বিরোধী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন: ওষুধের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে, এই ১৭টি ওষুধ এখনই কোমডে ফ্লাশ করুন, নইলে সমূহ বিপদ
অপারেশন সিঁদুরের সময় ভারতীয় সেনা ভারতে তৈরি ডি-৪ অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেম ব্যবহার করেছিল। যা ২ কিলোওয়াট ক্ষমতার বিম সহ প্রায় এক কিলোমিটার দূরত্বে ড্রোনগুলিকে গুলি করে নামাতে পারে। ভারতে সম্প্রতি ৩০ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন লেজার বিম সফলভাবে পরীক্ষা করেছে।
আরও পড়ুন: রতন টাটার সংস্থা কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি করবে কবে? বড় ঘোষণা করলেন টিসিএস-এর আধিকারিক
আমেরিকা তার যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস প্রেবল-এ হিলিয়স (হাই এনার্জি লেজার অ্যান্ড অপটিক্যাল ড্যাজলার অ্যান্ড সার্ভেইলেন্স) বসিয়েছে। এর ক্ষমতা ৭০ কিলোওয়াট। রাশিয়ার হাতে রয়েছে পেরেসভেট। ক্ষমতা ১০০ কিলোওয়াট। অন্যদিকে, ব্রিটেন ড্রাগন ফায়ার লেজার ডাইরেক্টেড এনার্জি ওয়েপন (LDEW) তৈরি করছে। এটি এক কিলোমিটার দূর থেকে এক পাউন্ডের মুদ্রাকে নিশানা করতে পারবে সহজেই।
