আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারত পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে (পিওকে) ‘অপারেশন সিদুঁর’ অভিযান চালিয়ে সফলভাবে নয়টি জঙ্গি শিবির ধ্বংস করেছে এবং ১০০ জনেরও বেশি জঙ্গিকে নির্মূল করেছে। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর তিনটি শাখা- সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনী এই অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। 

সেনার তরফ থেকে জানানো হয়েছে গত ৮ এবং ৯ মে মধ্যরাতে পাকিস্তানি ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্রগুলি ভারতীয় আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছিল। জবাবে, ভারত পশ্চিম সীমান্তে এবং জম্মু ও কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর পাকিস্তানের হামলা প্রতিহত করার জন্য এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ সিস্টেম, বারাক-৪ এবং আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র এবং DRDO-এর ড্রোন-বিরোধী প্রযুক্তি-সহ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম সক্রিয় করে দেয়।

'সুদর্শন চক্র' এস-৪০০ (রাশিয়া)

মাটি থেকেই আকাশে নিক্ষেপযোগ্য দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র। আকাশে বিভিন্ন ধরণের লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করার ক্ষমতা রয়েছে এটির। যার মধ্যে রয়েছে স্টেলথ ফাইটার জেট, বোমারু বিমান, ক্রুজ এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং এমনকি ড্রোনকেও ধ্বংস করতে সক্ষম। এতে দু'টি ব়্যাডার সিস্টেম রয়েছে। যা আকাশে ৬০০ কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত এবং একসঙ্গে ৮০টি লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করতে পারে। যে কোনও স্থানে নিয়ে গিয়ে মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে সিস্টেমটিকে চূড়ান্ত রূপ দেওয়া যায়। মাত্র তিন মিনিটের মধ্যে সেটি ব্যবহারের জন্য তৈরি হয়ে যায়। লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করার জন্য এতে একটি জ্যামার-রোধী প্যানোরামিক ব়্যাডার সিস্টেম রয়েছে। বিভিন্ন ধরণের ক্ষেপণাস্ত্র সহ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের জন্য ৪টি ব্যারেল বা স্টেশন রয়েছে এটিতে। ভারত ও রাশিয়ার পাশাপাশি, চীন, তুরস্ক এবং বেলারুশও এই সিস্টেমটি ব্যবহার করে।

থাড (থার্মাল হাই অল্টিটিইড এরিয়া ডিফেন্স) (আমেরিকা)

আমেরিকায় তৈরি এই সিস্টেম গতিশক্তিকে ব্যবহার করে মিসাইল প্রতিহত করার ক্ষমতা রয়েছে। ২০০ কিলেমিটার দূরত্ব এবং ১৫০ কিলোমিটার উচ্চতায় লক্ষ্যবস্তুকে শণাক্ত করতে সক্ষম। টার্মিনাল পর্যায়ে ক্ষেপণাস্ত্র বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদানে সক্ষম। গতিবেগ মাক-৮। এরফলে উচ্চগতির লক্ষ্যবস্তুকে শণাক্ত করতে পারে সহজেই। আমেরিকা, আরব আমিরশাহী এবং দক্ষিণ কোরিয়া এই সিস্টেম ব্যবহার করে।

ডেভিড'স স্লিং (ইজরায়েল/আমেরিকা)

ম্যাজিক ওয়ান্ড নামে পরিচিত। মাঝারি থেকে দূরপাল্লার এই মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমটি ইজরায়েল এবং আমেরিকা মিলে যৌথ ভাবে তৈরি করেছে। ২০১৭ সাল থেকে এটি ব্যবহার করা শুরু হয়েছে। ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার অন্যতম অঙ্গ এটি। এই ব্যবস্থাটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন এবং শত্রু বিমান-সহ আকাশপথে বিভিন্ন ধরণের হুমকি প্রতিহত করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।

প্যাট্রিয়ট পিএসি-৩ (আমেরিকা)

মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দ্বারা তৈরি প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পাল্লা ১৬০-১৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত। ২৪ কিলোমিটার উচ্চতায় লক্ষ্যবস্তু শণাক্ত করতে সক্ষম। এই ব্যবস্থাটি ইরাক যুদ্ধ, উপসাগরীয় যুদ্ধ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ-সহ একাধিক সংঘাতে ব্যবহার হয়েছে। বিমান, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং ট্যাকটিক্যাল ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রকে নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম এই প্যাট্রিয়ট সিস্টেম আধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষার মূল খুঁটি। বর্তমানে বিশ্বের ১৭টিরও বেশি দেশে এটি ব্যবহার করা হচ্ছে।

এস-৩০০ভিএম/আন্তে-২৫০০ (রাশিয়া)

দূরপাল্লার আকাশ এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা যা আকাশপথে বিভিন্ন ধরণের হুমকি মোকাবেলা করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। ২৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত আঘাত হানতে সক্ষম এবং ৩০ কিলোমিটার উচ্চতায় লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। সিস্টেমটি একই সঙ্গে বিমান, ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং বিশেষ করে স্বল্প থেকে মধ্যবর্তী পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র-সহ একাধিক লক্ষ্যবস্তু ট্র্যাক এবং আক্রমণ করতে পারে। এটি রাশিয়া ব্যবহার করে। ভেনেজুয়েলা এবং মিশরের মতো দেশে এটি রপ্তানি করা হয়েছে।