আজকাল ওয়েবডেস্ক: একের পর এক দেশ, বেছে বেছে শুল্ক-বাণ দিচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। স্রেফ জানিয়ে দিচ্ছেন, কোন কোন দেশকে কতটা শুল্ক দিতে হবে। জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, বসনিয়া, তাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, সার্বিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তিউনিশিয়া, মায়ানমার, লাওস, দক্ষিণ আফ্রিকা, কাজাখস্তান এবং মালয়েশিয়া, ব্রাজিল, সব পেরিয়ে ট্রাম্পের নিশানায় কানাডা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বৃহস্পতিবার জানিয়ে দিয়েছেন, এবার থেকে কানাডাকে ৩৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। শুধু এইটুকুই নয়। সিদ্ধান্তের সঙ্গেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। জানিয়েছেন, যদি কানাডা এর কোনও প্রতিশোধ দেওয়ার চেষ্টা করে, তাহলে বিপদ আরও বাড়বে কার্নের দেশের।

ব্রাজিল থেকে আমদানিকৃত দ্রব্যের উপর আগেই ৫০ শতাংশ কর চাপিয়েছে আমেরিকা। তারপরেই নিশানায় কানাডা। বৃহস্পতিবার ট্রাম্প জানিয়েছেন, কানাডার সমস্ত পণ্যের উপর এবার থেকে ৩৫ শতাংশ শুল্ক। নয়া শুল্ক নীতি যেদিন থেকে লাগু হবে, অর্থাৎ আগামী ১ আগস্ট থেকেই, কানাডার শুল্ক নীতিও চালু হয়ে যাবে। অটোয়ায় আজ অর্থাৎ শুক্রবারেই চিঠি পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। 

আরও পড়ুন: পদ্মাপারের মহিলা পদাধিকারীরা আর ‘স্যার’ নন! হাসিনা-জমানার ‘সম্বোধন’ নিয়মও রাখতে চাইছেন না ইউনূস

তবে কেন কানাডার উপর এতটা চটেছেন ট্রাম্প? ট্রাম্প-কার্নের মাঝে এই সমস্যার মূল কারণ বলে মনে করা হচ্ছে একটি ওষুধকে। ফেন্টানাইল। আমেরিকার অভিযোগ, মরফিনের থেকেও শক্তিশালী এই ওষুধ ব্যাথার উপশম হিসেবে ব্যবহার করা হয় বলা হলেও, আমেরিকায় তা আসে কানাডা থেকে, মুলত মাদক হিসেবে। ফেন্টানাইল নিয়েই কেবল বিবাদ! তেমনটাও নয়। দুই দেশের মাঝে রয়েছে বাণিজ্য ঘাটতি সংক্রান্ত মন কষাকষিও। কানাডা আমেরিকার নিষেধ কোনও রকমে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে, পরিণতি কী হতে পারে তা যেমন জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট, তেমনই কোন নিয়ম মানলে কানাডা কিছুটা ছাড় পেতে পারে, জানিয়েছেন তাও। 

ক্ষমতায় ফেরার পর থেকেই, একের পর এক শুল্ক-সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এসবের পর,  ব্রিকস সম্মেলন চলার মাঝেই রবিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট  জানান, ব্রিকসের "আমেরিকা-বিরোধী নীতি"-র সঙ্গে নিজেদের সামিল করা দেশগুলির উপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। মঙ্গলবারেই জানা গিয়েছিল, বাংলাদেশ-সহ ১৪টি দেশকে শুল্ক-চিঠি পাঠিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সোমবার রাতে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, বসনিয়া, তাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, সার্বিয়া, ইন্দোনেশিয়া, তিউনিশিয়া, মায়ানমার, লাওস, দক্ষিণ আফ্রিকা, কাজাখস্তান এবং মালয়েশিয়ায় চিঠি পাঠিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

বুধবারেই জানা যায়, আরও সাত দেশ অতি সত্বর মার্কিন মুলুকের শুল্ক-চিঠি পেতে চলেছে। বুধবার খোদ ট্রাম্প জানান একথা। জানিয়েছেন, পরেরদিন সকালের মধ্যে সাত দেশ আনুষ্ঠানিক শুল্ক-চিঠি পেয়ে যাবে। দুপুরের মধ্যে আরও কিছু দেশের কাছে চিঠি যেতে পারে, সেই ইঙ্গিতও দিয়েছেন। নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই বার্তা দিয়েছেন। সূত্রের খবর, লিবিয়া, ইরাক এবং আলজেরিয়া সহ বেশ কয়েকটি দেশের উপর ৩০% পর্যন্ত নতুন শুল্ক আরোপ করতে চলেছে মার্কিন মুলুক। 


উল্লেখ্য, এর আগেই ভারত প্রসঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট সাফ জানিয়েছেন, ভারতের সঙ্গে চুক্তির বিষয়টি অগ্রসর হচ্ছে। বেশকিছু প্রসঙ্গে একমত না হওয়ার জন্যই চুক্তিতে বিলম্ব হচ্ছে, সূত্রের খবর তেমনটাই। সোমবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প জানান, ‘আমরা ব্রিটেনের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছি, আমরা চীনের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছি, আমরা একটি চুক্তি করেছি, আমরা ভারতের সঙ্গে একটি চুক্তি করার কাছাকাছি।‘ যাদের সঙ্গে চুক্তি সম্ভব নয় বলে মনে করেছেন, সেইসব দেশগুলির কাছে চিঠি যাচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন ট্রাম্প।