আজকাল ওয়েবডেস্ক: মহারাষ্ট্রে সম্প্রতি ঘটে গেল মর্মান্তিক এক ঘটনা৷ ওয়াশিম জেলার একটি হাসপাতালে একজন গর্ভবতী যুবতী আসেন তাঁর ডেলিভারি করানোর জন্য। ঘটনাটি তাঁর সদ্যজাত সন্তানের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে, হাসপাতালের চিকিৎসক ও কর্মীদের চরম গাফিলতির কারণে নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার এই ঘটনার কথা জানানো হয়েছে সরকারি সূত্রে। ঘটনা জানাজানি হতেই শোরগোল হাসপাতাল ঘিরে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, যুবতীর নাম শিবানী বৈভব গাভানে। পালসাখেদের বাসিন্দা তিনি। জানা গিয়েছে চলতি মাসের ২ অগাস্ট ওই গর্ভবতী যুবতীকে ভোর ৩ টে নাগাদ ওয়াশিম জেলা মহিলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, যুবতীর সব রিপোর্ট স্বাভাবিক ছিল। এবং সকাল ১০টার মধ্যে প্রসব সম্পন্ন হবে বলেও জানান তাঁরা। কিন্তু পরিবারের অভিযোগ, রাতে তীব্র প্রসববেদনা শুরু হয় যুবতীর। তৎক্ষণাৎ তাঁরা হাসপাতালের নার্স ও চিকিৎসকদের বিষয়টি জানান। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা জানান কোনও ধরনের সাহায্য বা পরীক্ষা সেদিন রাতে যুবতীর হয়নি।
পরিবারের সদস্যদের দাবি, সকাল ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত একটিও পরীক্ষা করা হয়নি যুবতীর। একাধিকবার অনুরোধ সত্ত্বেও কেউ এগিয়ে আসেনি। বিকেল ৫টার দিকে যুবতীর অবস্থার ভয়াবহ অবনতি হলে অবশেষে একটি পরীক্ষা করা হয়। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছিল।
পুলিশের কাছে পরিবারের অভিযোগ, শিবানীকে প্রসবের সময় অমানবিক আচরণের শিকার হতে হয়েছে। তাঁর গালে চড় মারা হয়েছে। এমনকি জোর করে পেটে চাপ দেওয়া হয়েছে। এসবকিছুই অযোগ্য কর্মীদের দ্বারা পরীক্ষা করা হয়েছে।
সূত্রে জানা গিয়েছে, বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে যুবতীর প্রসব সম্পন্ন হয়। কিন্তু সেই সময় সদ্য জন্ম নেওয়া নবজাতকের হৃদস্পন্দন ছিল না। চিকিৎসকরা শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুনঃ ঘুরতে গিয়ে প্রাণ হারাল বিহারের যুবক, নেপালের বাগমতীতে মৃতদেহ ঘিরে তীব্র শোরগোল, জানুন...
এই মর্মান্তিক ঘটনার জন্য হাসপাতালের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছে শিবানীর পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা এই ঘটনাকে 'অমানবিকতা ও চরম গাফিলতির উদাহরণ' বলে বর্ণনা করেছেন। একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের অভিযোগ তুলে কঠোর তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
শিবানীর শাশুড়ি লতা গাভানে বলেন, 'ডাক্তার ও নার্সদের গাফিলতির কারণেই আমাদের সন্তান মারা গিয়েছে। আমাদের পুত্রবধূকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যন্ত্রণার মধ্যে ফেলে রাখা হয়েছিল।' শ্বশুর জ্ঞানেশ্বর গাভানে বলেন, 'সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমরা বারবার অনুরোধ করেছি, কেঁদেছি, কিন্তু কেউ শোনেনি। দোষীদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে।'
আরও পড়ুনঃ বাবার চিকিৎসায় অসন্তোষ! ডাক্তারকে পিটিয়ে সেই হাসপাতালেই ভর্তি! অভিযুক্ত দুই
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক এই ঘটনার পর গোটা এলাকায় ভয়াবহ শোক ও ক্ষোভের ছায়া নেমে এসেছে। পরিবারের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দায়িত্বজ্ঞানহীনতার অভিযোগ তুলে ভারতীয় সংবিধানের ৩০৪ ধারায় (অবহেলার মাধ্যমে হত্যার অভিযোগ) মামলা দায়েরের দাবি জানানো হয়েছে। বর্তমানে পুরো ঘটনার তদন্ত জারি রয়েছে৷
