আজকাল ওয়েবডেস্ক: ২০২৪ সাল ছিল মনুষ্য ইতিহাসে উষ্ণতম বছর। মানুষ যে দিন থেকে তাপমাত্রার হিসেব রাখা শুরু করেছে অর্থাৎ সেই ১৯২১ সাল থেকে আজ অবধি, ২০২৪ সালে গরম ছিল সবচেয়ে বেশি। গত বছর মে মাসে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় তাপমাত্রা ছিল আকাশছোঁয়া। তাপপ্রবাহে নাজেহাল হতে হয়েছিল সাধারণ মানুষকে। প্রভাব পড়েছিল কৃষিকাজে। কিন্তু ২০২৫ সালের মে মাসের আবহাওয়া সম্পূর্ণ উল্টো। এ বছর তাপমাত্রা এখনও মাথাচাড়া দিতে পারেনি এখনও।
গত বছর মে এবং জুন মাসে অবিরাম তাপপ্রবাহ দেখা গিয়েছিল। এর ফলে অনেক অঞ্চলের তাপমাত্রা রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছিল। দেশ জুড়ে খরা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। বিদ্যুতের ঘাঁটতি ও জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছিল দেশের বিভিন্ন অংশে। তবে, ২০২৫ সালের মে মাসে গ্রীষ্মের তাপপ্রবাহের পরিবর্তে, ভারতের বেশিরভাগ অংশে তুলনামূলকভাবে তাপমাত্রা কম। কারণ, অসময়ে বৃষ্টিপাত এবং বজ্রপাত।
আবহাওয়াবিদদের পর্যবেক্ষণ, বায়ুমণ্ডলীয় সঞ্চালনের পরিবর্তনের ফলে ভারতে গ্রীষ্ম তুলনামূলক দুর্বল হয়ে গিয়েছে। এর ফলে বছরের সবচেয়ে উষ্ণতম সময়কাল অকালে শেষ হয়ে গিয়েছে। এছাড়াও, মৌসুমি বায়ুর গতির পরিবর্তন, যার মধ্যে রয়েছে প্রাথমিক আর্দ্রতা এবং পরিবর্তিত বাতাসের ধরণে পরিবর্তন, এর ফলে স্বাভাবিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়নি। কিছু অঞ্চলে মেঘের আবরণ বৃদ্ধি এবং বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাত তাপমাত্রাকে আরও সহনীয় করে তুলেছে।
তাপমাত্রা মাথাচাড়া না দেওয়ায় তাপপ্রবাহ দেখা যায়নি তেমন দেশজুড়ে। এর ফলে গরমের রোগ কম হয়েছে, বিদ্যুতের ঘাঁটতি হয়নি তেমন। এর খারাপ দিকও আছে। তাপমাত্রার পরিবর্তনে চাষবাসে সমস্যা দেখা দিয়েছে। যে সব শস্য চাষ করতে বেশি তাপমাত্রার প্রয়োজন সেই সব শস্য চাষে সমস্যা হচ্ছে। কৃষিবিজ্ঞানীরা আবহাওয়ার উপর ভিত্তি করে চাষের ধরণে পরিবর্তনের পরামর্শ দিচ্ছেন।
জলবায়ু বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ধরনের আকস্মিক পরিবর্তন এই অঞ্চলে আবহাওয়ার ধরণে অনিশ্চয়তার ইঙ্গিত দিচ্ছে। মৌসম ভবনের বিশেষজ্ঞরা বিষয়টির উপর নজর রাখছেন। ২০২৫ সালে গ্রীষ্মকাল তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেলেও ভারতের বদলাতে থাকা আবহাওয়ার সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা প্রয়োজন।
