আজকাল ওয়েবডেস্ক: এ যুগেও নজিরবিহীন লিঙ্গ বৈষম্য বিহারে। দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ড পরীক্ষায় দারুন ফলাফল করেছিলেন খুশবু কুমারী। তাঁর ইচ্ছে ছিল চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে পড়ালেখা করার। কিন্তু, তা হয়নি! শেষমেষ কলা বিভাগে ভর্তি হতে হয় তাঁকে। হতাশায় ভেঙে পড়েছিলেন ছাত্রীটি। অবশ্য ঈশ্বর সহায় হয়েছেন। খুশবুর দুঃখের কাহিনী সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। যা চোখে পড়েছিল কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের। মূলত তাঁর উদ্য়োগেই খুশবু ফের বিজ্ঞান শাখায় কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। ছাত্রীটিকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বিহার সরকারও।
সর্বভারতীয় এক বৈদ্যুতিন সংবাদ মাধ্যমে খুশবু কুমারীকে বর্ণনা করতে দেখা গিয়েছে যে, কীভাবে বাবা-মায়ের শর্তে হেরে তাঁর বিজ্ঞান পড়ার স্বপ্ন ভেস্তে গিয়েছিল। তাঁর বাড়িতে লিঙ্গ বৈষম্য সম্পর্কে বলতে গিয়ে খুশবু কাঁদতে কাঁদতে ওই ভিডিওতে বলেছিলেন, "আজও, বাড়িতে আমার এবং আমার ভাইদের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য করা হয়। ভাইদের পড়াশোনার সম্পূর্ণ স্বাধীনতা আছে, কিন্তু বোনদের নেই। আমাদের পড়াশোনার জন্য একটিও ফোনও দেওয়া হয় না। আমার মা বলেছিলেন যে, যদি তুমি ৪০০ নম্বরের বেশি নম্বর পাও, তাহলে তুমি বিজ্ঞান পড়তে পারো, অন্যথায় নয়। আমি ৩৯৯ নম্বর পেয়েছি। এজন্যই আজ আমি কলা পড়ছি।"
Danapur, Bihar: Khushbu Kumari, who dreamt of becoming a doctor, had to opt for arts due to financial constraints. Union Education Minister Dharmendra Pradhan intervened, ensuring her admission in the Science stream. Her family expressed joy as the Patna DM and SDM assured full… pic.twitter.com/4TCO8pHrnM
— IANS (@ians_india)Tweet by @ians_india
খুশবুর বাবা-মাও এই শর্তটি উত্থাপন করেছিলেন কারণ তাঁরা একাদশ শ্রেণীতে বিজ্ঞান বিভাগে মেয়ের পড়াশোনার খরচ বহন করতে পারছিলেন না। মেয়েটির বাবা উপেন্দ্র রাই সংবাদ সংস্থা আইএএনএসকে বলেছিলেন, "আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে, আমরা মেয়েকে কলা বিভাগে ভর্তি করিয়েছিলাম। একে যদি বিজ্ঞান বিভাগ বেছে নিতে বলা হত, তাহলে আরও বেশি অর্থের প্রয়োজন হত।"
Danapur, Bihar: Khushbu's father, Upendra Rai, says, "Due to financial constraints, we enrolled her in the arts stream. If we had chosen the science stream, it would have required more money" https://t.co/qr7nXSw8Gm pic.twitter.com/adExWMATig
— IANS (@ians_india)Tweet by @ians_india
ওই ভিডিওটি দ্রুত ভাইরাল হয়, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান খুশবু কুমারীকে একটি ভালো কলেজে ভর্তির জন্য পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস দেন।
পাটনার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আয়োজনে খুশবুর সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। মন্ত্রী, খুশবুকে ভালোভাবে পড়াশোনা করতে এবং তাঁর বাবা-মায়ের প্রতি কোনও ক্ষোভ না পোষণ করতে বলেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী খুশবুকে "আমার সন্তান" বলে সম্বোধন করে বলেন, "চিন্তা করো না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার তোমার শিক্ষার ব্যবস্থা করবেন। তুমি ভালোভাবে পড়াশোনা করো এবং দয়া করে তোমার বাবা-মায়ের প্রতি কোনও অভিযোগ করো না। তাঁরা তাঁদের সর্বোচ্চ সাধ্যমতো তোমাকে সহায়তা করার চেষ্টা করেছিলেন।" মন্ত্রীর কাছে খুশবু কুমারী বিজ্ঞান নিয়ে কলেজে ভর্তি হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
পাটনার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট চন্দ্রশেখর সিংয়ের নির্দেশ ছিল, ২০২৫-২৭ শিক্ষাবর্ষে বায়োলজিতে অনার্স নিয়ে খুশবু কুমারী একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হবে।
