আবু হায়াত বিশ্বাস, দিল্লি: নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। প্রার্থী বাছাইয়ের কাজে নেমে পড়েছে শাসক-‌বিরোধী শিবির। উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য এনডিএ প্রার্থী চলতি সপ্তাহেই ঘোষণা হয়ে যাবে বলে খবর। পিছিয়ে নেই বিরোধীরা। কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছে, উপরাষ্ট্রপতি পদ প্রার্থী নিয়ে ইতিমধ্যেই ইন্ডিয়া দলগুলির শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা-‌বার্তা শুরু হয়েছে। আগামী ১৭‌-‌১৮ আগস্ট নাগাদ বিরোধী শিবিরের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হয়ে যাবে। জানা গিয়েছে, উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী নিয়ে কংগ্রেস বা কোনও বিরোধী দলের সঙ্গে সরকারের তরফে কোনও আলোচনা হয়নি। উল্লেখ্য, ২১ আগস্ট পর্যন্ত উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন জমা দেওয়া যাবে। নির্বাচন কমিশন আগেই জানিয়েছে, মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৫ আগস্ট। যদি সর্বসম্মতিক্রমে কেউ উপরাষ্ট্রপতি হন, তা হলে নির্বাচনের প্রয়োজন পড়বে না। তবে বিরোধী শিবির আগেই জানিয়েছে, উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী দেবে।  


সম্প্রতি সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজু জানিয়েছেন, এনডিএ, তাদের জোটের উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী নির্বাচনের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও রাজ্যসভার দলনেতা জে পি নাড্ডাকে মনোনীত করেছে। তিনি জানান, সংসদ ভবন চত্বরে আয়োজিত এক বৈঠকে এ ব্যাপারে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর গৃহীত সিদ্ধান্ত এনডিএ জোটের সব দল মেনে নেবে বলে জানিয়েছিলেন রিজিজু। এনডিএ শিবির কাকে প্রার্থী করবে, তা নিয়ে নানা জল্পনা চলছে। শোনা যাচ্ছে, আরিফ মহম্মদ খানের নাম। কেরলের রাজ্যপাল ছিলেন আরিফ মহম্মদ খান। বর্তমানে বিহারে রাজ্যপাল তিনি। মুসলমান বা মহিলা মুখকে বিজেপি উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী করতে পারে বলেও জল্পনা চলছে।

আরও পড়ুন: মোদির কেন্দ্রেই ভোটে ব্যাপক কারচুপি! ৫০ জনের বাবার নাম এক, আরও সব বিস্ফোরক গোলমাল

প্রসঙ্গত,  জগদীপ ধনকড়ের উত্তরসূরি খোঁজার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। ১৭তম উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। আগামী ৭ আগস্ট নির্বাচন সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করবে কমিশন। নির্বাচন আগামী ৯ সেপ্টেম্বর।  জাতীয় নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ২১ আগস্ট। সেই মনোনয়নের স্ক্রুটিনি হবে ২২ আগস্ট। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৫ আগস্ট। নির্বাচন আগামী মাসের ৯ তারিখ। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট দিতে পারবেন সাংসদরা। 

 

প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড় আচমকা ইস্তফা দেওয়ার পর মাঝপথেই রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বাছতে নির্বাচন করতে হচ্ছে। ভারতের ইতিহাসে এই নিয়ে তৃতীয়বার নির্দিষ্ট মেয়াদকাল শেষ হওয়ার আগে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন করা হচ্ছে। দেশের সংবিধান অনুযায়ী, উপরাষ্ট্রপতি পদ ফাঁকা হলে ৬ মাসের মধ্যে এই পদে নির্বাচন করাতে হয়। নির্বাচন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত যিনি ডেপুটি চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন তাঁকেই উপরাষ্ট্রপতি ও রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব সামাল দিতে হয়। সেই মোতাবেক দায়িত্ব সামলাচ্ছেন হরিবংশ।  

 

উল্লেখ্য, গত ২১ জুলাই রাতে আচমকা উপরাষ্ট্রপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন জগদীপ ধনকড়। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে লেখা চিঠিতে তিনি জানিয়েছিলেন, চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো এবং শারীরিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সংবিধানের ৬৭(ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী দেশের উপরাষ্ট্রপতির পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি, তাঁকে সমর্থন এবং তাঁর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদও জানিয়েছে ছিলেন তিনি।