আজকাল ওয়েবডেস্ক: শিক্ষা দপ্তরে কোনওদিনই চাকরি করেননি। এমন একজন মহিলাকে মা সাজিয়ে তাঁর মৃত্যুর ভুয়ো শংসাপত্র জমা দিয়ে সরকারি চাকরির আবেদন করেন যুবক। পেয়েও গিয়েছিলেন পিওনের চাকরি, তবে শেষপর্যন্ত দুর্নীতি ধরা পড়ে গিয়েছে। মধ্যপ্রদেশের রেওয়া জেলার শিক্ষা দপ্তরের এই দুর্নীতির খবরে শোরগোল পড়েছে।
পরাসিয়া গ্রামের বাসিন্দা ব্রিজেশ কোল রেওয়ার তেওনথার। এই যুবকের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিয়োগ। ওই যুবক দাবি করেছিলেন, তাঁর মা বেলা কোল একটি সরকারি স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা ছিলেন। কর্মরত অবস্থায় শারিরীক অসুস্থতার কারণে হেলা কোলে-এর মৃত্যু হয়। এরপরই ওই যুবক মায়ের মৃত্যুর ভুয়ো শংসাপত্র জমা দেন স্কুল শিক্ষা দপ্তরে। এরপরই ওই স্কুলেই পিয়নের চাকরি দেওয়া হয় ব্রিজেশ কোল রেওয়ার তেওনথাকে।
সব ঠিকই চলছিল। তবে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক বেতনের হিসাব করতে গিয়ে গড়মিল খুঁজে পান। একটু খোঁজ খবর নিতেই দুর্নীতি খোলসা হয়। জানা যায়, বেলা কোল বলে কেউ এই স্কুলে চাকরিই করত না। এমনকী ব্রিজেশের সঙ্গে বেলার কোনও সম্পর্কও নেই। তদন্তের ফলে ব্রিজেশের নিয়োগ বাতিল করা হয়।
এরপরই পুরো ঘটনা জানানো হয় জেলা শিক্ষা আধিকারিক সুধামা গুপ্তকে। তাঁর নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। তদন্তে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে। জানা যায় ব্রিজেশ একা নন। বিভিন্ন জায়গায় মোট পাঁচজন এভাবে কাজ করছেন। প্রত্যেকেই জাল নথি ব্যবহার করে সরকারি চাকরি করছেন।
দুর্নীতিগ্রস্তদের তালিকায় রয়েছেন- ওম প্রকাশ কোল, সুষমা কোল, বিনয় রাওয়াত, হিরামণি রাওয়াত এবং রমা দ্বিভদি। তিঘরা, বিদা, আতারিয়া, সেমারিয়া এবং গাঙ্গেভের মতো বিভিন্ন ব্লকে করা এই নিয়োগগুলি সবই জাল নথির উপর ভিত্তি করে করা হয়েছিল।
এই ঘটনা নিয়ে জেলাশাসক প্রতিভা পাল জানান, প্রাথমিক ভাবে এই নথি গুলি জাল বলে মনে হয়নি। সবকিছুই একদম ঠিক ছিল। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে জানা যায় জালিয়াতি ধরা পড়ে। ইতিমধ্যেই দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিইও) সুদামা গুপ্ত জানান, গত বছরে ৩৬ জনকে সহানুভূতির ভিত্তিতে নিয়োগ করা হয়েছিল। নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে দশজন তাদের নথি উপস্থাপনের জন্য সরকারি নোটিশের জবাব দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। আরও তদন্তের পর, তাদের মধ্যে পাঁচজন জাল কাগজপত্র ব্যবহার করেছেন বলে জানা গিয়েছে। এই নিয়োগ প্রক্রিয়াকরণের জন্য দায়ী কেরানি-সহ এখন ছয়জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।
রেওয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরতি সিং বলেন, "সিভিল লাইনস থানায় প্রতারণা এবং জালিয়াতির ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। জালিয়াতি নিয়োগগুলি ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের এপ্রিলের মধ্যে হয়েছিল।"
