আজকাল ওয়েবডেস্ক: বৃহস্পতিবার ভোরে একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা রণথম্বর জাতীয় উদ্যানে।   রণথম্ভোর জঙ্গল সাফারিরত পরজটকরা এক রোমাঞ্চকর দৃশ্য চাক্ষুষ করলেন। ভ্রমণকারীরা যখন জঙ্গলের নিস্তব্ধতার মাঝে গাইডের সাথে গভীর জঙ্গলে ঢুকছিলেন, তখন আকস্মিকভাবে দেখা মেলে নতুন বাঘের পায়ের ছাপ। স্বভাবতই উত্তেজনা তুঙ্গে ওঠে। সবাই চারপাশ পর্যবেক্ষণ করতে থাকে, আর ঠিক তখনই গাছপালার ফাঁক দিয়ে দেখা যায় এক রাজকীয় বাঘিনী 'ঋদ্ধি'কে।

ডোরাকাটা রঙের শরীরে ঋদ্ধি ধীরে ধীরে সামনে চলে আসে। তার সৌন্দর্য, শক্তি, ও মাধুর্য সবাইকে মোহিত করে। এমন দুর্লভ মুহূর্ত জঙ্গলপ্রেমীদের স্মৃতিতে চিরস্থায়ী হয়ে থাকবে। রোমাঞ্চপ্রিয় ভ্রমণকারীদের জন্য এটি ছিল এক অনন্য অভিজ্ঞতা। 

এখানেই শেষ নয়। আরো রোমাঞ্চ বাকি ছিল গল্পের। গভীর বনে এক বিরল দৃশ্যের সাক্ষী থাকলেন বন্যপ্রাণীপ্রেমীরা। রিদ্ধি, জঙ্গলের রাজত্বকারী বাঘিনী, তার দুই ছানা—একটি ছেলে ও একটি মেয়ে—প্রথমবারের মতো মুখোমুখি হল লড়াইয়ে। শৈশবের সারল্য ঝেড়ে, তারা প্রবেশ করল জীবনের প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রথম ধাপে।

বটগাছের ছায়াযর নিচে শাবক দুটি শক্তি ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে আসে একে অপরের দিকে। অন্যদিকে বোন শাবকটি তার বুদ্ধি খাটিয়ে ধীরে ধীরে তার ভাইকে ঘিরে ফেলে। চোখের পলকে শুরু হয় সংঘর্ষ—উভয়েই লাফিয়ে ওঠে, তাদের গর্জন জঙ্গলের নিস্তব্ধতাকে হকচকিয়ে দেয়।

পাহাড়ের পাথুরে চূড়ায় দাঁড়িয়ে রিদ্ধি নিরবে এই লড়াই দেখছিল এবং সম্ভবত ভাবছিল আর খেলা নয়, বরং জঙ্গলে বেঁচে থাকার কঠোর নিয়মের প্রথম পাঠে হাতেখড়ি নিচ্ছে তার দুই ছানা।

লড়াই শেষে ভাইটি জয়ী হয়, তার জোড়ালো ধাক্কায় বোনটি ছিটকে যায়। কিন্তু বোনের তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে পরাজয়ের কোনও গ্লানি নেই—বরং প্রতিশ্রুতি আছে আরও একটি লড়াইয়ের।

লড়াই শেষে, যেন কিছুই ঘটেনি, শাবক দুটি ক্রমশ মিশে যায় দীর্ঘ ঘাসের আড়ালে। রণথম্বোরের এই গভীর জঙ্গলে ভবিষ্যতের রাজত্বের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে দুই ব্যাঘ্র শাবক।