নিতাই দে, আগরতলা: সাইবার অপরাধ মোকাবিলায় মানুষকে আরও সচেতন করতে হবে। ইন্টারনেটকে ব্যবহার করে অপরাধমূলক কার্যকলাপ রোধ করতে হবে। অপরাধের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পুলিশি ব্যবস্থাকে আরও উন্নত ও শক্তিশালী করতে হবে। আর ত্রিপুরা পুলিশের কাজের সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে হবে। শনিবার রাজধানী আগরতলার এডিনগর ড্রপ গেইট এলাকায় সাইবার ক্রাইম পুলিশ স্টেশন থানার উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা: মানিক সাহা।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ সাহা বলেন, 'আজ আমাদের জন্য একটা আনন্দের দিন। আজ থেকে সাইবার ক্রাইম বা অপরাধ মোকাবিলায় সাইবার ক্রাইম থানার পথচলা শুরু হল। আগেই ডিজিটাল অ্যারেস্ট সম্পর্কে আমাদের অবহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এবিষয়টি নিয়ে আমরাও তেমনভাবে অবগত ছিলাম না। দেখা গেল সভ্যতার অগ্রগতি ও বিজ্ঞানের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে ডিজিটাল মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে নানা ধরনের অপরাধ সংঘটিত করা হচ্ছে। মূলত, ইন্টারনেটকে ব্যবহার করে কম্পিউটার, মোবাইল ইত্যাদি মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে মানুষের সঙ্গে আর্থিক প্রতারণা সহ নানা অপরাধ করা হচ্ছে। কারও কাছে ফোন করে ওটিপি চাওয়া হচ্ছে। আবার কারও কাছ থেকে ব্যাঙ্কিং সংক্রান্ত নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চাওয়া হচ্ছে। যা একটা বিপজ্জনক অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই এসব অপরাধ মোকাবিলায় এবং মানুষের সহায়তায় রাজ্য পুলিশের পক্ষ থেকে ১১২ নম্বরের ২৪ ঘণ্টার একটা হেল্পলাইন খোলা হয়েছে।'
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'পুলিশি ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করা প্রয়োজন। সাইবার অপরাধ মোকাবিলায় এসপি ও ডেপুটি এসপি র্যাঙ্কের অফিসারদেরও রাখা হয়েছে। সাইবার সেলে কাজ করা অফিসার ও কর্মীদের যথাযথ প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। ইতিমধ্যে অনেক অফিসারকে ট্রেনিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে। সাইবার অপরাধ রুখতে জাতীয় স্তরেও ১৯৩০ নম্বরের একটি হেল্পলাইন চালু রয়েছে। সাইবার অপরাধ এমন এক জায়গায় রয়েছে যেন ছায়ার সঙ্গে যুদ্ধ করা। এজন্য টেকনিক্যালি আরও দক্ষ হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। এর পাশাপাশি সাইবার অপরাধ সম্পর্কে মানুষকে আরও সচেতন ও সতর্ক করতে হবে। আমাদের রাজ্যের তিনদিকে সীমান্ত এলাকা রয়েছে। এই সুযোগে কেউ যাতে অপরাধ করতে না পারে সেদিকে সজাগ নজর রাখতে হবে।' রাজ্যকে যাতে মাদক পাচারকারীরা করিডোর হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে সেদিকে পুলিশকে নজর রাখতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, 'প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে এখন অনেক কিছু করা যায়। অপারেশন সিঁদুরের সময় প্রযুক্তির ব্যবহার আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। প্রযুক্তির সঙ্গে সাযুজ্য রেখে আমাদেরও সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। আর সাইবার ক্রাইমও এখন সন্ত্রাসবাদের পর্যায়ে চলে এসেছে। এর বিরুদ্ধে লড়াই জারি রাখতে হবে। সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। সেই সঙ্গে ভাইরাস ও হ্যাকারদের বিরুদ্ধেও সতর্ক থাকতে হবে।'
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি আশা করি এই সাইবার ক্রাইম থানা তাদের দক্ষতার পরিচয় দেবে ও মানুষের আস্থা অর্জন করবে। অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং, রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক অনুরাগ, এডিজিপি (ট্রেনিং) এম রাজা মুরাগন, এডিজিপি (আর্মড পুলিশ) জি এস রাও সহ অন্যান্য উচ্চপদস্থ আধিকারিক ও এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ।
