আজকাল ওয়েবডেস্ক: অযোধ্যায় ধ্বজা উত্তোলন অনুষ্ঠান। অভিজিৎ মুহূর্তে রাম মন্দিরের চূড়ায় পতাকা উত্তোলন করলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই বিশেষ কাজ সম্পন্ন করার জন্য, সকালেই রামমন্দির প্রাঙ্গনে পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি। অনুষ্ঠান পর্বে এদিন মোদির সঙ্গেই উপস্থিত ছিলেন, আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত, উত্তর প্রদেশের রাজ্যপাল আনন্দীবেন প্যাটেল এবং মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
দু'বছর আগে, এক জানুয়ারিতেই খুলে গিয়েছিল রামমন্দিরের দরজা। তবে তখনও সমগ্র মন্দির নির্মান সম্পন্ন হয়নি। প্রায় দু'বছর পর সম্পন্ন হল তা। মঙ্গলের অনুষ্ঠানকে অনেকেই দ্বিতীয় প্রাণপ্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠান, অনেকেই আবার সমাপ্তি অনুষ্ঠান বলে চিহ্নিত করেছেন।
মঙ্গলবার, বেলা ১১টা ৫০ মিনিট নাগাদ শুরু হয় ধ্বজারোহণের অনুষ্ঠান। তবে অনুষ্ঠানের একটি বিশেষ অংশ নিয়ে এখন আলোচন বিস্তর। কী সেই বিশেষ অংশ? সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, রামমন্দিরে ধর্ম ধ্বজা উত্তোলনের সময় প্রধানমন্ত্রী দড়ি ব্যবহার করেননি। আবার কোনও সুইচও ব্যবহার করেননি, যার মাধ্যমে পতাকা ধীরে ধীরে নীচ থেকে উঠেছে উপরে। তাহলে? মাধ্যম কী?
পুরোহিতরা বৈদিক রীতিনীতি পালন করার পর, প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং মোহন ভাগবত ভাঁজ করা পতাকার পাশে রাখা 'নমস্কার' চিহ্নের দিকে যান। ওই হাতজোড় করে নমস্কার ভঙ্গিতে থাকা অংশটিকে পতাকার দিকে ঘুরিয়ে দিতেই, ধীরে ধীরে শুরু হয় পতাকা উত্তোলন পর্ব।
ধ্বজা উত্তোলন শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'এই ধর্মধ্বজ কেবল একটি পতাকা নয়। এটি ভারতীয় সভ্যতার পুনরুজ্জীবনের পতাকা। গেরুয়া রঙ, সূর্যবংশের প্রতীক, 'ওম' শব্দ এবং কোভিদার গাছ রাম রাজ্যের গৌরবের প্রতিচ্ছবি। এই পতাকা একটি সংকল্প, একটি সাফল্য, সৃষ্টির সংগ্রামের একটি গল্প। আগামী হাজার হাজার শতাব্দী ধরে, এই পতাকা ভগবান রামের মূল্যবোধ ঘোষণা করবে।' প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেন, 'শতাব্দীপ্রাচীন ক্ষত আজ জুড়ে গেল। বহু শতকের যন্ত্রণার অবসান হল।'

সূত্রের তথ্য, গেরুয়া পতাকাটির মাপ ২২ ফুট বাই ১১ ফুট এবং এটি প্যারাসুট-গ্রেড কাপড় দিয়ে তৈরি, সঙ্গে উত্তোলনের জন্য রয়েছে মোটা নাইলন দড়ি। এটি এখন মন্দিরের ১৬১ ফুট উঁচু চূড়ার উপরে উড়ছে।
পতাকাটিতে প্রতীক রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে সূর্য, 'ওঁ' এবং রাম রাজ্যের রাজ্যবৃক্ষ হিসেবে বর্ণিত কোভিদার গাছ।
এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট তার ঐতিহাসিক রায়ে ২.৭৭ একর বিতর্কিত জমি মন্দির নির্মাণের জন্য বরাদ্দ করার পর এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন কার্যকর হয়। ২০২০ সালের আগস্টে প্রধানমন্ত্রী মোদী ভূমি পূজা করার পর রাম মন্দিরের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে খুলে যায় রামমন্দিরের দরজা। তবে সমগ্র মন্দির নির্মান সম্পন্ন হয়নি এতদিন। এবার মন্দির নির্মান প্রক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে সম্পন্ন হয়েছে।
