আজকাল ওয়েবডেস্ক: তামিলনাড়ুতে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এসছে। ধর্মপুরি জেলায় মাভেরিপট্টি প্রাইমারি স্কুলে এই চাঞ্চল্যকর ও উদ্বেগজনক ঘটনাটি সামনে এসেছে। অভিযোগ উঠেছে, স্কুলের প্রধান শিক্ষক কালাইবাণীর বিরুদ্ধে৷ খবর অনুযায়ী, তিনি শ্রেণিকক্ষে টেবিলের ওপর শুয়ে পড়েন এবং ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে তাঁর পা টেপাতে বলেন। এই ঘটনার একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিও প্রকাশ পাওয়ার পর তা ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। ভিডিওতে স্পষ্টভাবে দেখা গিয়েছে, কালাইবাণী শুয়ে রয়েছেন এবং কয়েকজন ছাত্রছাত্রী তাঁর পা টিপে দিচ্ছে।

এই ঘটনার পর স্থানীয় শিক্ষা প্রশাসনের তরফ থেকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তদন্ত শেষ হওয়ার পর অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিশুদের এহেন কাজে ব্যবহার করা শুধুমাত্র অনৈতিক নয়, এটি শিশু অধিকার লঙ্ঘনেরও শামিল বলে মনে করছেন অনেকে। ঘটনার জেরে ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। 

তবে এই ঘটনা এই প্রথমবার নয়। এর আগেও তামিলনাড়ুতে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। খবর মারফত, গত বছর সালেম জেলার থালাইবাসাল এলাকার কামাক্কাপালায়ম নামক স্থানে একটি সরকারি স্কুলে গণিত শিক্ষক জে জয়প্রকাশের বিরুদ্ধেও একই ধরনের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি ক্লাস চলাকালীন বারবার ঘুমিয়ে পড়তেন। শুধু তাই নয়, এমনকী ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে তাঁর পা টেপাতে বলতেন। 

আরও পড়ুনঃ ইন্সটাগ্রাম ফিল্টার ব্যবহার করে বয়স কমাতেন প্রেমিকা! সামনাসামনি দেখে সহ্য করতে পারেননি যুবক, অন্ধকারে ডেকে নৃশংস কাণ্ড ঘটালেন 

এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়৷ এর জেরে তৎকালীন শিক্ষা মন্ত্রী অনবিল মাহেশ পয়্যামোঝির নির্দেশে শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সালেম জেলার শিক্ষা বিভাগ তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার পরেই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

আরও পড়ুনঃ ওমা এরা কারা? বর-কনের সঙ্গে অতিথি হিসেবে ছবি তুলছে একদল বেওয়ারিশ কুকুর! ভিডিও প্রকাশ পেতেই হইহই...

সেই সময়ে জয়প্রকাশকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ছাত্রছাত্রীরা সরব হয়ে ওঠে। পূর্ব রাজাপালায়ম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রায় ৫০ জন ছাত্রছাত্রী রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানায়। তারা একটি তামিলনাড়ু রাজ্য পরিবহন নিগমের (TNSTC) বাস আটকে দেয় এবং স্কুলের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে।

আরও পড়ুনঃ বিজেপিশাসিত মধ্যপ্রদেশে বেহাল স্বাস্থ্য পরিষেবা, সরকারি হাসপাতালে নবজাতকের দেহ খুবলে খেল ইঁদুর!...

ছাত্রদের দাবি ছিল, ওই শিক্ষক দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে স্কুলে শিক্ষকতা করছেন এবং তাঁর অপসারণে তাদের পড়াশোনার ক্ষতি হবে। তারা শিক্ষককে পুনর্বহালের দাবি তোলে।
তবে এহেন ঘটনার প্রেক্ষিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা, পেশাদারিত্ব এবং শিশুদের অধিকার রক্ষার প্রশ্ন তুলছে। একজন শিক্ষকের দায়িত্ব শুধু পাঠদান নয়, শিক্ষার্থীদের প্রতি আচরণেও তাকে আদর্শ হতে হয়। ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে ব্যক্তিগত সেবা নেওয়া শিক্ষকতার নৈতিকতা ও শিক্ষার পরিবেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এমন ঘটনায় দ্রুত ও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া না হলে ভবিষ্যতে এর পুনরাবৃত্তি ঠেকানো কঠিন হয়ে পড়বে বলেই মনে করছেন অনেকে।