আজকাল ওয়েবডেস্ক: চটি পরে একদিন স্কুলে গিয়েছিল কিশোরী। এই ছিল তার 'মস্ত ভুল'! ভুলের শাস্তি এমন ছিল, যা ভুলতে পারেনি দিনের পর দিন। অবশেষে অবসাদেই চরম পরিণতি হল তার। সহপাঠীদের সামনেই চড় মেরেছিলেন প্রিন্সিপাল। এই ঘটনার একমাস পর হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে হার মানল ওই ছাত্রী। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খণ্ডে। মঙ্গলবার পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটেছে গাড়োয়া জেলায়। এক মাস আগে এই জেলার এক স্কুলে চটি পরে এসেছিল এক ছাত্রী। যা দেখেই রাগের মাথায় তাকে বেধড়ক মারধর করেন স্কুলের প্রিন্সিপাল। কষিয়ে থাপ্পড় মারে ছাত্রীকে। মঙ্গলবার হাসপাতালে ওই ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। 

 

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর দিব্যা কুমারী নামের ওই ছাত্রী স্কুলের বিশেষ অনুষ্ঠানে জুতোর বদলে চটি পরে এসেছিল। সেটি খেয়াল করেছিলেন স্কুলের প্রিন্সিপাল ইন চার্জ দ্রৌপদী মিনজ। সহপাঠীদের সামনেই তুমুল বকাঝকা করে, তাঁকে কষিয়ে চড় মারেন প্রিন্সিপাল। 

 

চড়ের আঘাতে আহত না হলেও, মনে আঘাত পেয়েছিল দিব্যা। প্রথম কয়েকদিন চুপচাপ ছিল। দিন কয়েক পরেই অবসাদে ভুগতে শুরু করে। ডাল্টনগঞ্জে তার চিকিৎসা শুরু হয়। এরপর রাঁচির রাজেন্দ্র ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। মঙ্গলবার সেখানেই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে সে। 

 

কিশোরীর মৃত্যুর পরেই থানায় প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করেছে পরিবার। পাশাপাশি গ্রামবাসীরাও মূল রাস্তা আটকে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিক্ষোভে সামিল হন। ছাত্রীকে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলে প্রিন্সিপালের গ্রেপ্তারির দাবিতে সরব হয়েছেন সকলে। তিন ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল বিক্ষোভের জেরে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ছাত্রীর মৃত্যুর পরেও এই ঘটনায় মন্তব্য করতে নারাজ ওই প্রিন্সিপাল। 

 

আরও পড়ুন: বর্ষা বিদায় নিলেও বৃষ্টি থামছে না, এই জেলাগুলিতে ফের বর্ষণের পূর্বাভাস, আগেভাগেই বড় আপডেট দিল হাওয়া অফিস

 

প্রসঙ্গত, কয়েক মাস আগে মাথায় তেল না দেওয়ার জন্য ভয়ঙ্কর শাস্তি দেওয়া হয়েছিল এক পড়ুয়াকে। চুলে তেল না দিয়ে স্কুলে আসার কড়া শাস্তি! রাগের মাথায় ছাত্রীর চুল কেটে নিলেন শিক্ষিকা। ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগের তরফে ওই শিক্ষিকাকে সাসপেন্ড করলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাটে। জামনগরের স্বামীনারায়ণ গুরুকুল স্কুলে ঘটনাটি ঘটেছে। মঙ্গলবার সকালেই ওই স্কুলের এক ছাত্রীর চুল ব্লেড দিয়ে কেটে দেন এক শিক্ষিকা। কারণ? ওই ছাত্রী চুলে তেল না দিয়ে স্কুলে এসেছিল। 

 

স্কুল থেকে বাড়ি ফিরেই শিক্ষিকার কীর্তির কথা পরিবারকে জানিয়েছিল ওই ছাত্রী। এরপর ওই পরিবার জেলা শিক্ষা আধিকারিকের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি খতিয়ে দেখার পরেই শিক্ষিকাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। 

 

ওই ছাত্রীর পরিবারের অভিযোগ, অতীতে আরও একাধিক পড়ুয়াকে কড়া শাস্তি দেওয়া হয়েছে এই স্কুলে। ভুলবশত কোনও পড়ুয়া যদি বই আনতে ভুলে যেত, তাকে ১০০ বার কান ধরে উঠবস করানো হত।