আজকাল ওয়েবডেস্ক: ৭ আগস্ট, সকালবেলা। হাড়হিম কাণ্ড কর্ণাটকের গ্রামে। দিনের শুরুতেই গ্রামের মধ্যে তুমুল শোরগোল। কারণ? একটি কুকুর এক মহিলার কাটা মুণ্ডু মুখে নিয়ে ঘোরাঘুরি করছিল। পথের মধ্যেই কুকুরের মুখে মানুষের মুণ্ডু দেখে শিউরে উঠেছিলেন সকলে। এর খানিকক্ষণ পর কয়েক কিলোমিটার দূরে একটি হাত দেখতে পান গ্রামবাসীরা। যা দেখে রীতিমতো আঁতকে ওঠেন সকলে।
এর কিছুক্ষণ পর আবারও হাড়হিম করা দৃশ্য দেখতে পান সকলে। সেই ঘটনাস্থল থেকে আরও খানিকটা দূরে সেই মহিলার দেহের আরও টুকরো এবং কাটা মুণ্ডুর খানিকটা অংশ পড়েছিল এক একপাশে। সেদিনই দশটি আলাদা আলাদা জায়গা থেকে সেই মহিলার দেহের টুকরো উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনাটি যে আর পাঁচটা সাধারণ ঘটনা নয়, তা প্রথমেই বুঝতে পেরেছিলেন গ্রামবাসীরা ও পুলিশ।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে কর্ণাটকের তুমাকুরু জেলায়। পুলিশ জানিয়েছে, কোরাতাগেরে গ্রামের মধ্যে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ঘটনাটি ঘিরে। যদিও খুনের নেপথ্যে কী কারণ, এবং কে বা কারা খুনে জড়িত, তা এখনও জানা যায়নি। জোরকদমে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। দোষীদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সকালে মূট্যালাম্মা মন্দিরের কাছে একটি ঝোঁপ থেকে মহিলার কাটা মুণ্ডু মুখে নিয়ে কুকুরটিকে বেরোতে দেখেছিলেন স্থানীয়রা। রাস্তা দিয়ে সেই কাটা মুণ্ডু নিয়ে যাচ্ছিল কুকুরটি। এর খানিকটা দূরে প্লাস্টিকের ব্যাগ থেকে মহিলার কাটা হাত পাওয়া যায়। সেদিন আরও কয়েক ঘণ্টার মধ্যে দশটি ভিন্ন ভিন্ন জায়গা থেকে মহিলার দেহের টুকরো উদ্ধার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: 'কী রোগা, খেতে দেয় না?', শরীর নিয়ে সারাক্ষণ খোঁটা! রাগের চোটে তরুণকে শেষ করে দিল দুই বন্ধু
লিঙ্গাপুরা রোড ব্রিজ থেকে নাড়িভুঁড়ি, বেনডোন নার্সারি থেকে পেট ও আরও কিছু দেহের টুকরো, যোনিঘারাহল্লি থেকে রক্ত মাখা একটি ব্যাগ থেকে পায়ের টুকরো উদ্ধার করেছে পুলিশ। নেগালাল ও সিদ্দারাবেট্টা এলাকা থেকে আরও দুটি ব্যাগ থেকে দেহের আরও কিছু টুকরো পেয়েছে তারা। কোরাতাগেরে ও কোলালা থানার অন্তর্গত মোট দশটি জায়গা থেকে মহিলার দেহের টুকরোগুলি পাওয়া গেছে।
দেহের টুকরোগুলি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। হাতের ট্যাটু দেখে দেহটি শনাক্ত করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ৪২ বছর বয়সি এক মহিলা। তাঁর নাম, লক্ষ্মীদেবাম্মা। তুমাকুরু তালুকের বেল্লাভি এলাকার বাসিন্দা ছিলেন তিনি। গত ৪ আগস্ট থেকে লক্ষ্মীদেবাম্মা নিখোঁজ ছিলেন। বেল্লাভি থানায় স্ত্রীর নিখোঁজ ডায়েরি করেছিলেন তাঁর স্বামী। তিনি জানিয়েছিলেন, গত ৩ আগস্ট মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন যুবতী। কিন্তু তারপর থেকে আর বাড়ি ফেরেননি। কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি তাঁর।
পুলিশের অনুমান, সেই রাতেই যুবতীকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। এরপর দেহেটি টুকরো টুকরো করে দশটি ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেয় খুনি। প্রমাণ লোপাটের জন্যেই দেহের টুকরো বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দিয়েছিল কেউ বা কারা। খুনের নেপথ্যে কী কারণ থাকতে পারে, কে বা কারা জড়িত, তা খতিয়ে দেখা শুরু করেছে পুলিশ। নৃশংস হত্যাকাণ্ডটি ঘিরে মামলা রুজু করে তদন্ত জারি রেখেছে তারা।
