আজকাল ওয়েবডেস্ক: 'বন্ধু' পুতিনকে ভারতে স্বাগত জানালেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। রাশিয়ার রাষ্ট্রনেতা ভারতের বিমানবন্দরে নামতেই, করমর্দন করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী, জড়িয়ে ধরলেন 'মিত্র' দেশের প্রেসিডেন্টকে। অভ্যর্থনায় আপ্লুত রুশ প্রেসিডেন্ট। নিজের সঙ্গে আনা অরাস সেনেটে  না চড়ে তাই মোদির ফরচুনা গাড়িতেই রওনা দিলেন গন্তব্যর উদ্দেশ্যে!

বিদেশ সফরে পুতিনের জন্য থাকে বিশেষ নিরাপত্তা কনভয়। বিশ্বের সবচেয়ে অভিজাত ও সুরক্ষিত যানবাহনগুলির মধ্যে একটি অরাস সেনাট। দেশ হোক বা বিদেশ, এই গাড়িতেই যাতায়াত করেন রুশ প্রেসিডেন্ট। অরাস সেনাট হল রাশিয়ার বিলাসবহুল লিমুজিন, যা প্রেসিডেন্টের ব্যবহারের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। এই গাড়ি প্রায়শই "রাশিয়ান রোলস-রয়েস" নামে পরিচিত। সাঁজোয়া শেল, ব্ল্যাকআউট জানালা এবং একটি বিলাসবহুল, উচ্চ প্রযুক্তির অভ্যন্তরের কারণে এই গাড়ি বিশ্ববাসীর কাছে খুবই আকর্ষণীয়। 

তবে ভারতে এসে শুরুতেই চমকে দিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। গত সেপ্টেম্বরে চীনের তিয়ানজিনে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার (এসসিও) শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক সেরেছিলেন পুতিন-মোদি। তখন দেখা গিয়েছিল, প্রেসিডেন্ট্রের অরাস সেনাটের সওয়ারী হয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।

কিন্তু এবার ঠিক উল্টো ছবি। এবার মোদির ফরচুনায় চড়লেন ভ্লাদিমির পুতিন। পিছনে পিছনে চললো অরাস সেনেট। 

দু' দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে এসেছেন পুতিন। ২০২১ সালের পরে এই প্রথম তাঁর ভারত সফর। শুধু তাই নয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পরও এই প্রথম ভারতে পুতিন। একই সঙ্গে এবারের বৈঠক ভারত-রাশিয়ার কৌশলগত অংশীদারত্বের ২৫ বছর এবং দুই দেশের ২৩তম বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনেরও স্মারক মুহূর্ত।

দুই নেতার শেষ দেখা হয়েছিল ১ সেপ্টেম্বর তিয়ানজিনে এসসিও সম্মেলনে। এ বছর মোট পাঁচ বার ফোনে কথা বলেছেন মোদী ও পুতিন।

রুশ প্রেসিডেন্ট্রের সঙ্গে বারতে এসেছেন- ডিফেন্স মিনিস্টার আন্দ্রে বেলাউসোভ, ফিনান্স মিনিস্টার আন্তন সিলুয়ানোভ, অ্যাগ্রিকালচার মিনিস্টার অক্সানা লুত, ইকনমিক ডেভেলপমেন্ট মিনিস্টার মাক্সিম রেশেতনিকভ, হেলথ মিনিস্টার মিখাইল মুরাশকো, ইন্টিরিয়র মিনিস্টার ভ্লাদিমির কোলোকোলসেভ এবং ট্রান্সপোর্ট মিনিস্টার রোমান নিকিতিন।

সফরকালে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

পুতিনের সফরসূচি:
পুতিনের সরকারি কর্মসূচি শুরু হবে রাষ্ট্রীয় অভ্যর্থনার মাধ্যমে। এর পরে তিনি রাজঘাটে গিয়ে মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানাবেন - ভারত সফরে বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানদের জন্য এটি প্রায় বাধ্যতামূলক কর্মসূচি হয়ে উঠেছে। এর পর হায়দরাবাদ হাউসে হবে ২৩তম ভারত–রাশিয়া বার্ষিক শীর্ষ বৈঠক। সেখানেই অনুষ্ঠিত হবে দুই দেশের প্রতিনিধিদলের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক এবং কাজের মধ্যাহ্নভোজ। প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য, ভূ-কৌশল—সব ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ আলাপ-আলোচনা হবে বলে সূত্রের খবর।