আজকাল ওয়েবডেস্ক: বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দু’দিনের সফরে ভারতে পা রাখতে চলেছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তাঁর আতিথেয়তায় কোনও খামতি রাখতে রাজি নয় মোদি সরকার। তাঁকে স্বাগত জানাতে উদগ্রীব ভারতবাসীও। এর আগে বারাণসীর এক অস্বাভাবিক দৃশ্য ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে। রাশিয়ান নেতার আগমনের আগে সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা আরতি পরিবেশন করেন। তাঁকে স্বাগত জানাতে একটি মিছিলও বার করেন। তাঁদের কীর্তি দেখে অনেক নেটিজেন বেশ আনন্দিত হয়েছেন। অনেকে আবার ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছেন। ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সমাজমাধ্যমে।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, একটি বোর্ডে রুশ প্রেসিডেন্টের একটি ছবি লাগানো রয়েছে। সেটিকে ঘিরে পুরুষ এবং মহিলা মিলে জনা বিশেক মানুষ দাঁড়িয়ে রয়েছেন। ছবিটির সামনে কয়েকজন মহিলা মিলে একটি থালা ধরে রয়েছেন যার মধ্যে রয়েছে একটি জ্বলন্ত প্রদীপ এবং কিছু ফুল। পুতিনের ছবিটিকে আরতি করছেন তাঁরা। পিছনে বেশ কয়েক জন ব্যক্তিকে জাতীয় পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। এখানেই শেষ নয়। একটি বিশেষ গানও বাজতে শোনা যাচ্ছে এই কার্যকলাপের সময়।
ভিডিওটি ভাইরাল হতেই কমেন্টের বন্যা বয়ে গিয়েছে। একজন ক্ষুব্ধ হয়ে লিখেছেন, “কেউ এই সব বয়স্ক মানুষদের সামাজিক জীবন থেকে দূরে সরিয়ে রাখুন। এদের বুদ্ধি এত কম।” একজন পুতিনের একটি ছবিতে কারসাজি করে সেটি পোস্ট করেছেন এবং নাম দিয়েছেন ‘বরাহমিত্র পুতিন’। একজন মনে করিয়ে দিয়েছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত সফরের সময়ও বারাণসীতে একদল মানুষে তাঁর ছবিকে পুজো করেছিলেন এবং আরতি করেছিলেন। লিখেছেন, “ভক্তরা শিখবেন কবে?”
২০২১ সালের পর পুতিনের প্রথম ভারত সফর এবং ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর প্রথম ভারত সফর। ভারত-রাশিয়া কৌশলগত অংশীদারিত্বের ২৫তম বার্ষিকী এবং ২৩তম দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষে তিনি সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাসভবনে একটি ব্যক্তিগত নৈশভোজে যোগ দেবেন। শুক্রবার, রাজঘাটে শ্রদ্ধা জানানোর আগে এবং হায়দ্রাবাদ হাউসে আনুষ্ঠানিক আলোচনা করার আগে তাঁকে রাষ্ট্রপতি ভবনে স্বাগত জানানো হবে।
প্রতিরক্ষা, অর্থ, কৃষি, পরিবহন এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক মন্ত্রীসহ বেশ কয়েকজন রাশিয়ান মন্ত্রী পুতিনের প্রতিনিধিদলের সদস্য। কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের গভর্নর এলভিরা নাবিউলিনাও তাঁর সঙ্গে রয়েছেন।
সূত্রের দাবি, দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে নিরাপত্তা সহযোগিতা, অর্থনীতি, পরিবহন, প্রযুক্তি, শিক্ষা এবং সংস্কৃতি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। একটি মূল লক্ষ্য হবে ক্রমবর্ধমান দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য। ২০২৪ সালে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ৬৩.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। উভয় পক্ষই ২০৩০ সালের জন্য গভীর অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততার জন্য একটি রোডম্যাপ তৈরির কাজ করছে, যার পাশাপাশি জ্বালানি, কৃষি, স্বাস্থ্য এবং মিডিয়াতে চুক্তিও রয়েছে।
প্রতিরক্ষা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। আপগ্রেড করা ব্রহ্মোস ভেরিয়েন্ট, হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র, দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র এবং অতিরিক্ত এস ৪০০ সিস্টেম নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। দুই নেতা রাষ্ট্রপুঞ্জ, এসসিও, জি২০ এবং ব্রিকসে সহযোগিতা সহ বৈশ্বিক বিষয়গুলি নিয়েও মতবিনিময় করবেন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ভোজসভায় যোগদানের আগে পুতিন এবং মোদি ভারত মণ্ডপে ভারত রাশিয়া বিজনেস ফোরামে ভাষণ দেবেন। রুশ রাষ্ট্রপতি এর কিছুক্ষণ পরেই চলে যাবেন।
