আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিহারের নওয়াদা জেলায় রাতে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা। গভীর রাতে তিন ব্যক্তি ও এক মহিলা মিলে একটি স্ট্রেচার ঠেলে নিয়ে যাচ্ছিলেন। জানা গিয়েছে, স্ট্রেচারে গোলাপী চাদরে মোড়া তাঁদের মায়ের মৃতদেহ ছিল। অভিযোগ, সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মায়ের মৃত্যুর পর দেহ বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি অ্যাম্বুল্যান্সের অনুরোধ করা হলেও তা মেলেনি। বাধ্য হয়ে ছেলেটিকে প্রায় দু'কিলোমিটার রাস্তা মায়ের দেহ স্ট্রেচারে চাপিয়ে টেনে নিয়ে যেতে হয়।

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত রবিবার রাতে। অজয় সাউয়ের মা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে আকবরপুরের প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। অজয় তখন মায়ের দেহ শেষবারের মতো বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি অ্যাম্বুল্যান্স চান। অভিযোগ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীরা সাফ জানিয়ে দেন, মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁদের অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়ার নিয়ম নেই।

অ্যাম্বুল্যান্স তো দূর, স্ট্রেচার পেতেও কম ভোগান্তি হয়নি। কর্তৃপক্ষ শর্ত দেয়- যতক্ষণ না স্ট্রেচারটি ফিরিয়ে আনা হচ্ছে, ততক্ষণ জামিনদার হিসেবে অজয়ের স্ত্রী ও ছেলেকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই থাকতে হবে। অজয়ের আত্মীয়রা জানান, রাত বেশি হওয়ায় অন্য গাড়ি ভাড়া করা যাচ্ছিল না। তাঁরা অনেক অনুরোধ করেন একটি অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়ার জন্য। এক আত্মীয় বলেন, "আমরা বারবার কাকুতিমিনতি করছিলাম। ওরা জানাল নিয়ম নেই। অথচ চোখের সামনেই অ্যাম্বুল্যান্স দাঁড়িয়ে ছিল।"

তিনি আরও বলেন, "স্ট্রেচারও অনেক বলার পর দিল। তবে শর্ত দিল, আমাদের দু'জনকে জামিনদার হিসেবে এখানে থাকতে হবে।" অজয় সাউয়ের স্ত্রী বলেন, "আমি মানবিকতার দোহাই দিয়ে স্ট্রেচারটা চাইলাম। বললাম, আমার ছেলে আর আমি স্ট্রেচার ফেরত না আসা পর্যন্ত এখানেই থাকব। তারপরই ওরা স্ট্রেচার নিয়ে যেতে দিল।" এই অমানবিক ঘটনার প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেনি বলে খবর৷ অন্যদিকে, পরিবার এহেন ঘটনার জন্য দায়ী কর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে।