আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারত এবং রাশিয়া একযোগে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করবে। শুক্রবার যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। যেভাবে ভারত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে তাকে বরাবরই সমর্থন করেছে মস্কো। তাই সেখান থেকে পিছিয়ে আসার কোনও প্রশ্ন নেই। কাশ্মীরের পহেলগাঁওতে জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দা এদিন শোনা যায় পুতিনের গলায়। তিনি বলেন, যেভাবে জঙ্গি সংগঠন জৈশ ই মহম্মদ ভারতের নীরিহ নাগরিকদের ওপর হামলা করেছে তারপর ভারত যে তাদেরকে উচিত শিক্ষা দিয়েছে সেটা একেবারে সঠিক।


পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়ে ভারত যে অপারেশন সিন্দুর সফলভাবে করেছে তারও প্রশংসা এদিন শোনা যায় পুতিনের মুখে। পাক অধিকৃত কাশ্মীর যে পাকিস্তান জোর করে ধরে রেখেছে সেটাও বলতে তিনি ভোলেননি।


এদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, বিগত আট দশক ধরে বিশ্বে নানা ধরণের উত্থান-পতন হয়েছে। মানবতা যথেষ্ট সমস্যার মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। তবে সেখান থেকে ফের সকলেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ভারত বরাবরই রাশিয়াকে নিজের মিত্র হিসেবে পেয়েছে। সেখান থেকে দেখতে হলে আগামীদিনে ভারত-রাশিয়া সম্পর্ক যে নতুন উচ্চতায় যাবে সেকথা বলাই যায়। 


শুক্রবার এই যৌথ সাংবাদিক বৈঠক হয় দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে। সেখানে দুই দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি বানিজ্যিক এবং অর্থনৈতিক চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়। এর মধ্যে জাহাজ শিল্পে দুই দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে বলেই খবর। 


মার্কিন বাধার পর ভারত আগামীদিনে রাশির কাছ থেকে তেল কিনবে সেকথা এদিনের যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিন তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে নিজের কথা রাখার জন্য ধন্যবাদ দেন। আগামীদিনে শক্তি এবং নিরাপত্তা নিয়ে দুই দেশ একে অপরের পাশে থাকবে বলেও এদিন জোর গলায় জানিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। 


দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক লেনদেনের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক চুক্তি করা হয়েছে যেখানে কোনও কর থাকবে না। পাশাপাশি ভারত বা রাশিয়ার মধ্যে যে চাকরিক্ষেত্রে যাতে আগামীদিনে আরও অগ্রগতি হয় সেদিকটিও দেখা হয়েছে। পুতিন বলেন, দুই দেশের মধ্যে যাতে বার্ষিক ১০০ বিলিয়র ডলারের কাজ হয় সেদিকটি তিনি দেখবেন।


পুতিন আরও জানিয়ে দেন ভারত-রাশিয়া বিশ্বের দরবারে দুই শক্তিধর দেশ হিসেবে আগামীদিনে উঠে আসবে। এদিন রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কথাও বিভিন্ন দিক থেকে উঠে আসে। দুই দেশের মধ্যে আগামীদিনে খনিজ সম্পদ নিয়েও আদানপ্রদান করা হবে বলেও এদিন জানিয়ে দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট।


প্রসঙ্গত, ভারত-রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্ক বরাবরই ভাল। সেখান থেকে দেখতে হলে এই দুই দেশ একে অপরের পাশে থেকেছে। ভারতের সুদর্শনের প্রধান কারিগর যে রাশিয়া সেকথাও জানে বিশ্বের বাকি দেশগুলি। আগামীদিনে দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা খাতে আরও শক্তির আদানপ্রদান করা হবে বলেও জানিয়ে দেন মোদি-পুতিন।


বৃহস্পতিবারই ভারতের মাটিতে পা দিয়েছেন পুতিন। তারপর থেকে ভারতের আতিথ্য গ্রহণ করেছেন তিনি। শুক্রবার সকাল থেকেই ছিল তার ঠাসা কর্মসূচি। এরপর যৌথ সাংবাদিক বৈঠক থেকে প্রতিটি সময়ে ভারতের পাশে থাকার বার্তাই দিয়ে গেলেন তিনি। এবার আগামীদিনে এই সম্পর্কের ফলে প্রতিবেশী দেশগুলির গলার কাঁটা হয়ে উঠতে পারে বলেই মনে করছেন রাজনীতির কারবারিরা।