আজকাল ওয়েবডেস্ক: ওড়িশায় সম্প্রতি ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে৷ কোরাপুট জেলার দুধুমা জলপ্রপাতে রিলস শুট করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছেন এক জনপ্রিয় ইউটিউবার। খবর মারফত জানা গিয়েছে, নিখোঁজ ব্যক্তির নাম সাগর টুডু। বয়স আনুমানিক ২২। তিনি গঞ্জাম জেলার বেরহামপুরের বাসিন্দা। সাগর তাঁর ইউটিউব চ্যানেলের জন্য বিভিন্ন পর্যটনস্থানের ভিডিও ঘুরে ঘুরে ধারণ করেন। সেদিনও তাঁর এক বন্ধু অভিজিৎ বেহেরার সঙ্গে কোরাপুট ভ্রমণে গিয়েছিলেন।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, এই দুর্ঘটনাটি ঘটে দুপুর নাগাদ। ইউটিউবার সাগর একটি ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে ভিডিও ধারণ করছিলেন। তিনি একটি পাথরের উপর দাঁড়িয়ে ছিলেন। আচমকা সেই সময় মাচাকুন্দা বাঁধ কর্তৃপক্ষ, পূর্ব সতর্কতা হিসেবে নিচু এলাকায় বসবাসরত বাসিন্দাদের জানিয়ে, অতিবৃষ্টির কারণে বাঁধ থেকে জল ছেড়ে দেয়। এহেন হঠাৎ জলপ্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় সাগর পাথরে আটকে পড়েন এবং কোনওভাবে ভারসাম্য রাখতে না পেরে সজোরে জলপ্রবাহে ভেসে যান। ঘটনাস্থলে উপস্থিত কিছু পর্যটক ও স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন। তবে তাঁরা শেষমেশ ব্যর্থ হন।
এই দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পর মাচাকুন্দা থানার পুলিশ ও অগ্নিনির্বাপক বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে তারা। তবে দীর্ঘ খোঁজাখুঁজির পরও তাঁকে এখনও পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এহেন ভয়াবহ ঘটনার আগেও একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে ওড়িশায়। ঘটনাটি সাম্বলপুর জেলার জুজুমুরা এলাকার দেওঝরণ জলপ্রপাতে ঘটে। খবর অনুযায়ী, সেখানে ভিএসএস ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড রিসার্চ (VIMSAR)-এর ছয়জন ফাইনাল ইয়ার এমবিবিএস ছাত্রছাত্রী ভ্রমণে গিয়েছিলেন। সেখানেই দুইজন ছাত্রছাত্রী জলে ডুবে মারা যান। পুলিশ জানিয়েছে মৃতদের নাম মনিকা মীনা, যিনি রাজস্থান থেকে এসেছিলেন, এবং সন্দীপ পুরী, যিনি দিল্লির বাসিন্দা।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও তাঁরা জলপ্রপাতের উপর দিকে উঠে যান, এমনকী স্নান করতে নামেন তাঁরা। স্নানের সময় হঠাৎ পা পিছলে দু’জন গভীর জলে পড়ে যান। তাঁদের কেউই সাঁতার জানতেন না বলে জানান তাঁদের সহযাত্রীরা। ঘটনার জেরে মনিকা মাথায় গুরুতর আঘাত পান এবং উভয়েই স্রোতের টানে ভেসে যান।
স্থানীয় পর্যটক ও তাঁদের সঙ্গী ছাত্ররা দ্রুত পুলিশ ও অগ্নিনির্বাপক বাহিনীকে খবর দেন। খবর পেয়ে উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর মৃতদেহ দুটি উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন: বাসন না মেজে তাতে প্রস্রাব করছেন পরিচারিকা! ধরা পড়তেই হুলুস্থুল
প্রসঙ্গত, মধ্যপ্রদেশে এমনই এক ঘটনা ঘটে পাঁচ বন্ধুর পিকনিকে গিয়ে। বর্ষার মাঝেই তুমুল হুল্লোড়ে মেতেছিলেন তাঁরা। নদীর ধারে চলছিল খাওয়াদাওয়া। নাচ, গান। সেই আনন্দের আবহে মুহূর্তের মধ্যে ছড়াল বিষাদ। পাঁচ বন্ধুর মধ্যে একজন ভেসে গেলেন নদীর জলের তোড়ে। বাকিরা উদ্ধারের জন্য হাত বাড়ালেও, শেষরক্ষা হল না।
কীভাবে দুর্ঘটনা ঘটল? তা আরও মর্মান্তিক। জানা গিয়েছে, ওই তরুণ নদীর জলে হাত, মুখ ধুতে গিয়েছিলেন। হঠাৎ তাঁর পায়ের চটি খুলে, নদীর জলে পড়ে যায়। সেই চটি তুলতে গিয়েই প্রাণ গেল তরুণের। চটিটি উদ্ধার করতে গিয়েই নদীর জলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যান। সেই জলে স্রোতে তলিয়ে যান তিনি।
সাময়িকভাবে চিৎকার করেছিলেন। সেই চিৎকারের শব্দ শুনেই ছুটে আসেন বাকি বন্ধুরা। তাঁকে উদ্ধারের জন্য সকলেই হাত বাড়িয়ে দেন। কিন্তু জলের তুমুল স্রোতে আর রক্ষা করা যায়নি। একদিন পর অদূরে এক জায়গা থেকে তরুণের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘিরে শোকের ছায়া গোটা এলাকায়।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের সিওনি জেলায়। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি ঘটে সিওনি জেলার পারেয়া খোহ এলাকায়। জায়গাটি পিকনিকের জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয়। বছরভর প্রায়ই স্থানীয়দের আনাগোনা থাকে এই এলাকায়। সেখানেই এহেন ভয়াবহ দু্র্ঘটনায় তোলপাড় চারিদিক।
