আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্ত্রী নিখোঁজ। থানায় জানিয়েছিল স্বামী। কিন্তু নিখোঁজ ডায়েরি করার পরেই ফোন সুইচড অফ ছিল তার। তখনই সন্দেহ গাঢ় হয় পুলিশের। বাড়িতে সোজা পৌঁছে যায় পুলিশ। বাড়ির উঠোনের একপাশে কিছু ন্যাপথলিন চোখে পড়ে তাদের। সেই ন্যাপথলিন দেখেই ভয়ঙ্কর খুনের কিনারা করল পুলিশ। উদ্ধার হল যুবতীর দেহ। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের ওয়ার্ধায়। পুলিশ সূত্রে খবর, দিন কয়েক আগেই স্ত্রীর নিখোঁজ ডায়েরি করেছিল তাঁর স্বামী। এরপর সেই যুবকও নিখোঁজ হয়ে যায়। যুবতীর খোঁজে তাঁর বাড়িতে পৌঁছয় পুলিশ। তল্লাশি অভিযান চালাতে গিয়ে বাড়ির পাশেই মাটি খুঁড়ে যুবতীর দেহ উদ্ধার করে তারা। এই দেহ উদ্ধারের ঘটনায় কয়েক টুকরো ন্যাপথলিনের পুলিশি তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। 

 

এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, দিন কয়েক আগেই এক যুবক থানায় এসে জানান, তার স্ত্রী নিখোঁজ। স্ত্রীর নিখোঁজ ডায়েরি করে সে। তদন্তের জন্য কয়েক ঘণ্টা পরেই যুবককে ফোন করে পুলিশ। কিন্তু তখন থেকেই তার ফোন বন্ধ ছিল। এরপরই পুলিশের সন্দেহ হয়। যুবতীর খোঁজ করতে ওয়ার্ধায় হিংগনঘাটের বাড়িতে পৌঁছয় পুলিশ। 

 

ঘটনাস্থলে পৌঁছেই পচা দুর্গন্ধ পান তদন্তকারীরা। তল্লাশি চালাতে চালাতেই দেখতে পান, বাড়ির উঠোনে একপাশে কয়েক টুকরো ন্যাপথলিন পড়ে আছে। সেই জায়গার মাটিও খোঁড়া হয়েছে, দেখতে পায় তারা। তখনই তড়িঘড়ি করে ওই এলাকার মাটি খোঁড়া শুরু করে পুলিশ। কিছুক্ষণ পরেই ওই মাটির তলা থেকে বস্তাবন্দি মহিলার দেহ উদ্ধার করে তারা। দেহটি দ্রুত ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। যুবকের খোঁজে নতুন করে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। ঘটনায় খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। 

 

আরও পড়ুন: বন্ধ স্কুলের দরজা, আটকে পড়েছিল ৮ বছরের ছাত্রী, পালাতে গিয়ে গরাদেই আটকে গেল মাথা! সারারাত ওই অবস্থায় কাটানোর পর যা হল

 

প্রসঙ্গত, প্রসঙ্গত, গত জুলাই মাসে আরও একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটেছে মহারাষ্ট্রে। জানা গেছে, এক বিবাহিত তরুণীর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিল তাঁর চেয়ে বয়সে ছোট এক তরুণ।‌ বারবার তাঁকে বিয়ের প্রস্তাব দিচ্ছিল। কিন্তু তরুণী প্রতিবার সেই বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করেন। অবশেষে অপমানিত হয়ে, রাগের মাথায় চরম প্রতিশোধ নিল ওই তরুণ।‌ বিবাহিত তরুণীকে নয়, প্রেমের পথের কাঁটা তাঁর স্বামীকেই খুন করল সে। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের নভি মুম্বইয়ে। পুলিশ জানিয়েছে, নভি মুম্বইয়ের ভাসির বাসিন্দা ২৫ বছরের তরুণী ফাতিমা মণ্ডল ও তাঁর স্বামী আবুবাকার সুহাদলি মণ্ডল। ফাতিমার থেকে বয়সে দশ বছরের বড় ছিলেন তিনি। সুখের সংসারে কোনও অশান্তি ছিল না। তা সত্ত্বেও ঘটে গেল মর্মান্তিক ঘটনা।

 

পুলিশ জানিয়েছে, ফাতিমার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিলেন ২১ বছর বয়সি আমিনুর আলি আহমেদ। তিনিও ওই এলাকার বাসিন্দা। ফাতিমা বিবাহিত জানা সত্ত্বেও নিত্যদিন তাঁকে উত্যক্ত করত আমিনুর। কখনও ফোনে, কখনও রাস্তায় মুখোমুখি হয়েই ফাতিমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিত সে। আর প্রতিবার আমিনুরের দেওয়া বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করতেন ফাতিমা। 

 

আমিনুরের বিয়ের স্বপ্নের পথে কাঁটা ছিলেন ফাতিমার স্বামী আবুবাকার। সেই পথের কাঁটা সরাতেই খুনের পরিকল্পনা করেন তিনি। সোমবার রাতে যুবককে খুন করে বস্তায় দেহ ভরে আমিনুর। এরপর সেই বস্তাবন্দি দেহটি ভাসির খালে ফেলে দেন। প্রমাণ লোপাটের জন্য আবুবাকারের জামাকাপড় পানভেল- সিওন রোডের ধারে একটি ড্রেনের মধ্যে ফেলে দেয় সে। 

 

সোমবার রাতে অফিস থেকে আর বাড়ি না ফেরায়, থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন ফাতিমা। পাশাপাশি আমিনুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান, তিনি বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করে। সম্ভবত এর পিছনে তার কোনও ভূমিকা রয়েছে। এরপরই আমিনুরকে আটক করে পুলিশ। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর খুনের ঘটনাটি স্বীকার করে নেয় সে। 

 

আমিনুর দেহটির সন্ধান দিতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। সেখানে পৌঁছে বস্তা থেকে নিথর দেহটি উদ্ধার করে তারা। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। আমিনুরের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত এখনও জারি রয়েছে। আমিনুর বর্তমানে পুলিশি হেফাজতে রয়েছে।