আজকাল ওয়েবডেস্ক: ১৭ বছর পর, মুক্তি। আদালত জানিয়ে দিয়েছে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় কোনও তার নেই তাঁর। তিনি নির্দোষ। তার পরেই প্রকাশ্যে এসেছে বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ প্রজ্ঞা ঠাকুরের প্রতিক্রিয়া। কী বলছেন তিনি? বলছেন তিনি, এই কঠিন পরিস্থিতিতেও বেঁচে রয়েছেন, বা ছিলেন, কারণ তিনি একজন সন্ন্যাসী বলেই। সংবাদ সংস্থা এএনআই সাধ্বীর প্রতিক্রিয়া হিসেবে তুলে ধরেছে কিছু বক্তব্য। কী বলছেন তিনি? বলছেন, ‘আমি শুরু থেকেই বলে আসছি যে যাদের তদন্তের জন্য ডাকা হচ্ছে তাদের পেছনে অবশ্যই কোনও ভিত্তি থাকা উচিত। আমাকে তদন্তের জন্য ডেকেছিল এবং গ্রেপ্তার করে নির্যাতন করা হয়েছিল। এতে আমার পুরো জীবন নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। আমি একজন সন্ন্যাসীর জীবনযাপন করছিলাম, কিন্তু আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল, এবং কেউ স্বেচ্ছায় আমাদের পাশে দাঁড়াতে রাজি ছিল না। আমি বেঁচে আছি কারণ আমি একজন সন্ন্যাসী। তারা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ভগবানকে অপমান করেছে। আজ, ভগবান জয়ী হয়েছেন, এবং হিন্দুত্ব জয়ী হয়েছে, এবং ঈশ্বর তাদের শাস্তি দেবেন যারা দোষী। তবে, যারা ভারত এবং ভগবানকে অপমান করেছে তারা আপনার দ্বারা ভুল প্রমাণিত হয়নি।‘

২০০৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর। মালেগাঁওয়ের ভিক্ষু চকে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। প্রাণ গিয়েছিল ছ' জনের। আহত হন বহু। মূল অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিলেন ভোপালের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ সাধ্বী প্রজ্ঞা এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল প্রসাদ পুরোহিত। সতেরো বছর পর ওই মামলায়  রায় ঘোষণা হল বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই। এনআইএ বিশেষ আদালত, ওই মামলায় সাধ্বী প্রজ্ঞা-সহ সাতজনকেই বেকসুর খালাস ঘোষণা করেছে। 

আরও পড়ুন: বিস্ফোরণ-হাহাকার-মৃত্যু, সতেরো বছর আগের মালেগাঁও মামলায় বেকসুর খালাস সাধ্বী-সহ সাত
 
২০০৮-এর বিস্ফোরণের ঘটনার পর, মহারাষ্ট্র পুলিশের সন্ত্রাসদমন শাখা মূল অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করেছিল সাধ্বী প্রজ্ঞা এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল প্রসাদ পুরোহিতকে। অভিযোগ ছিল, মসজিদের পাশে থাকা  যে মোটরবাইক বিস্ফোরণে ব্যবহৃত হয়েছিল, পরিকল্পনা করেই দুটি বোমা মজুত রাখা হয়েছিল তাতে, তা সাধ্বীর নামেই ছিল। প্রসাদ পুরোহিত সাধ্বীকে গোটা ঘটনায় সাহায্য করেছিলেন বলে অভিযোগ ছিল। 
 
এর আগে, এপ্রিল মাসে জানা যায়,  ২০০৮ সালের মালেগাঁও বোমা বিস্ফোরণ মামলায় সাত অভিযুক্তের সকলের বিরুদ্ধেই বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের (ইউএপিএ) ধারা ১৬-এর অধীনে মৃত্যুদণ্ড-সহ সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদানের জন্য মুম্বইয়ের একটি বিশেষ আদালতের কাছে আবেদন জানায় জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ)। এপ্রিল মাসে,  মামলা সংক্রান্ত প্রায় ১৪০০ পাতার বিস্তারিত রিপোর্ট জমা পড়ে বিশেষ এনআইএ আদালতে। এর আগে এনআইএ পর্যাপ্ত প্রমাণের অভাবে সাধ্বী প্রজ্ঞাকে এই মামলা থেকে অব্যহতি দিয়েছিল। তদন্ত চলাকালীন ৩২৩ জন সাক্ষীর বয়ান নেওয়া হয়েছিল। পরে ৩৪ জন নিজেদের বয়ান পাল্টে ফেলেন বলেও জানা যায়।


সাধ্বী এবং প্রসাদ পুরোহিত ছাড়াও এই মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন, সুধাকর দিবেদী, অবসরপ্রাপ্ত মেজর রমেশ উপাধ্যায়, অজয় রাহিরকর, সুধাকর চতুর্বেদী এবং সমীর কুলকার্নি।সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার আদালত জানিয়েছে, কেবল সন্দেহের বশে এই ধরনের এক মামলা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় না। একইসঙ্গে বৃহস্পতিবার আদালত জানিয়েছে, বিস্ফোরণে ব্যবহৃত মোটরসাইকেল যে প্রজ্ঞার, তা প্রমাণিত হয়নি ফরেন্সিক পরীক্ষায়।