আজকাল ওয়েবডেস্ক: সম্প্রতি বিভিন্ন জায়গায় খাবার নিয়ে নানা ধরণের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে স্কুলের খাবার ও মেসে খাবারের মধ্যে পোকামাকড় পাওয়ার ঘটনা জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপকভাবে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এর মধ্যেই আরও একটি ন্যক্কারজনক ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনাটি উত্তর প্রদেশের কানপুরের জিটি রোড এলাকায় ঘটেছে৷ সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার একটি স্থানীয় ধাবা থেকে একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটিতে দেখা গিয়েছে তন্দুরি রুটির মধ্যে সম্পূর্ণ একটি বাচ্চা গেছো টিকটিকি (ছিপকালী) রান্না হয়ে মিশে গিয়েছে। এহেন ঘটনার ভিডিও দেখে নেটিজেনদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে৷
ভিডিওতে দেখা যায়, এক গ্রাহক রুটি মোড়ানো অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল খুলে দেখাচ্ছেন। তিনি দেখাচ্ছেন যে রুটির মধ্যে একটি মরা টিকটিকির মাথা বেরিয়ে আছে। তিনি রুটি ধরে ক্যামেরার সামনে দেখিয়ে বলেন, 'ছিপকলী কা পুরা বাচ্চা হ্যায়। ছোটি-মোটি চিজ নহি হ্যায় জো দিখাই না পড়ি হো, বহুত বড়ি চিজ হ্যায় ইয়ে।' তিনি আরও বলেন, এই দূষিত রুটি খেয়ে তাঁর পরিবারের সদস্যরা বমি করেছেন।
ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার পরপরই, এটি নেটপাড়ায় ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করে। ঘটনার জেরে অনেকে ধাবাটির বিরুদ্ধে কড়া সমালোচনা করেন। পাশাপাশি খাদ্য নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। একজন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'এটা খুবই নিন্দনীয় এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ।' আরেকজন মন্তব্য করে বলেন, 'এই ধরনের রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে দেওয়া উচিৎ।' কেউ কেউ বলেন, 'ধাবাটির বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই এফআইআর করা উচিৎ।' একজন বিদ্রুপ করে লেখেন, 'এই ধাবাকে এখুনি বয়কট করুন।'
তবে দেখা গিয়েছে কিছু নেটিজেন আবার ধাবাটিকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছেন। একজন মন্তব্য করেছেন, 'ভাই, এটা খুব ভালো ধাবা। সবার ভুল হয়, এটা ভুলবশত হয়ে থাকতে পারে।' আরেকজন ঘটনার প্রেক্ষিতে বলেন, 'তাদের কাছে শুধু টাকাই গুরুত্বপূর্ণ।'
এই ঘটনার পর, সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, কানপুর ফুড সেফটি ডিপার্টমেন্ট ধাবাটি পরিদর্শনে যায়। ফুড সেফটি ইন্সপেক্টর সঞ্জয় কুমার সিং জানান, তাঁদের দুই সদস্যের একটি দল ধাবায় গিয়ে প্রচুর ময়লা দেখতে পান। এমনকি তাঁরা তন্দুরি পনির এবং সবজির নমুনা সংগ্রহ করেন পরীক্ষা করে দেখার জন্য। পরবর্তীতে ধাবাটি সিল করে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
এহেন ঘটনার জেরে স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত তাদের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ আসেনি। তারা ভিডিওটি দেখেছেন। তবে কোনওরকম আনুষ্ঠানিক অভিযোগ না আসা পর্যন্ত কোনও আইনি পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে পুলি কর্মকর্তা। সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী জানা গিয়েছে ধাবাটি সোনু বাজপেয়ী নামে এক ব্যক্তির মালিকানাধীন। তারা এখনও পর্যন্ত ঘটনা নিয়ে কোনও বিবৃতি প্রকাশ করেনি। গ্রাহকদের পরিচয় এবং ঘটনার সঠিক তারিখ এখনও অজানা।
অপরদিকে চলতি বছরের জুন মাসে মুম্বই শহরের আরেক বিখ্যাত রেস্তোরাঁ ‘জিমি বয়’ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।রেস্তোরাঁটি ফোর্ট এলাকার হর্নিমান সার্কেল চত্বরে অবস্থিত। শতবর্ষ পূর্তির ঠিক আগে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। খবর অনুযায়ী, মূলত যেই ‘বিকাশ বিল্ডিং’ এ এই রেস্টুরেন্টটি ছিল, তার অবকাঠামো অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়ে। এর জেরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভবনের নিরাপত্তা বিবেচনার ক্ষেত্রে রেস্তোরাঁটি বন্ধ করে দেয়। জিমি বয় মুম্বইয় শহরে পারসি খাবারের জন্য বরাবর বিখ্যাত ছিল বলে জানা গিয়েছে৷ বহু পুরনো ইতিহাস বহন করত রেস্তোরাঁটি। এই দুই ঘটনাই শহরের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানগুলির খাবার নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে নতুন করে আলোচনার সৃষ্টি করেছে।
বর্তমানে ঘটনার প্রেক্ষিতে পূর্ণ তদন্ত জারি রয়েছে বলে জানান হয়েছে৷ এমন ঘটনা যাতে বারংবার না হয় তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে৷
