আজকাল ওয়েবডেস্ক: লা নিনা এবার চিরতরে বিদায় নিয়ে নিল। তার জায়গায় ধীরে ধীরে ফিরে আসছে এল নিনো। মাঝে মাঝে হাল্কা বৃষ্টি হলেও এবার যে গরমের দাপট শুরু হতে চলেছে সেটা সকলেই মেনে নিয়েছে। এবার গরম হতে পারে অন্যবারের তুলনায় অনেক বেশি ভয়ানক।


আবহাওয়ার দিক থেকে দেখতে হলে লা নিনা এবং এল নিনো দুটি একে অপরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। এরা অপরকে ছাড়া থাকতে পারে না। এই দুটি মহাসাগরের জল থেকে তৈরি হয়ে থাকে। তবে তাদের মধ্যে পার্থক্য হল একজন গরম হাওয়া নিয়ে আসে আর অন্যজন শীত। প্রশান্ত মহাসাগর থেকে দুজনেই তৈরি হয়। ফলে এই জায়গা তাদের নিজের ঘরে বলে বলা যেতেই পারে।

 


একদিকে যেখানে গরম হাওয়া নিজের ডানা মেলে ধরে ঠিক তেমনভাবেই তাকে রোখার চেষ্টা করে শীতল বাতাস। এই দুয়ের মিলনে তৈরি হয়ে থাকে সক্রিয় দুটি বাতাস। ২০২৪ ইতিহাসের উষ্ণতম বছরের তকমা পেয়েছিল আগেই। পরিবেশবিজ্ঞানীরা সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন, ২০২৫ যদি উষ্ণতম বছর হিসেবে গণ্য না–ও হয়, তা হলেও ইতিহাসের সবচেয়ে গরম তিনটি বছরের মধ্যে থাকার সম্ভাবনা প্রবল। 

 


নতুন বছরের প্রথম মাসটি কাটার পর পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আবহাওয়ার যে রিপোর্ট আসতে শুরু করেছে, তাতে দুশ্চিন্তা বাড়ছে। রিপোর্ট বলছে, ২০২৫–এর জানুয়ারি হল ইতিহাসের উষ্ণতম জানুয়ারি। শিল্প বিপ্লবের আগে অর্থাৎ ১৮৫০–এর আগে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা যত ছিল, এ বছর জানুয়ারির গড় তাপমাত্রা তার চেয়ে ১.৭৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি।


প্রশান্ত মহাসাগরের পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছিল গত জুলাই থেকে। মহাসাগরের জলের উপরিতলের তাপমাত্রা তার আগে পর্যন্ত স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি গরম ছিল। এই অবস্থাকে আবহবিদরা ‘এল নিনো’ বলেন। ‘এল নিনো’ পরিস্থিতি তৈরি হলে দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে।


এমন অবস্থায় গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে নীচে নেমে যায়। জুলাই থেকে সমুদ্র ঠান্ডা হতে শুরু করলেও ‘ঠিকঠাক’ ভাবে ‘লা নিনা’ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল ডিসেম্বরে। তারপর আবহবিদরা মনে করতে শুরু করেছিলেন, ভারতে শীতের প্রাবল্য বাড়বে, শীত দীর্ঘায়িত হবে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। ‘লা নিনা’ নিজের সুনাম রক্ষা করতে পারেনি।