আজকাল ওয়েবডেস্ক: ঘর থেকে মিলল মহিলাদের হাড়গোড়, দাঁত, রক্ত, পোশাক, ব্যাগ। বাড়ির এককোণে রয়েছে পুকুর। খুনের পর থেকে সেই পুকুরেই ফেলে দেওয়া হত দেহগুলি? সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে রাজ্যেই তিনি নিখোঁজ মহিলার মামলার তদন্ত নতুন করে শুরু করল পুলিশ। ঘটনার সূত্রপাত ২০০৬ সাল থেকে। সেই সময় থেকেই একাধিক মহিলা নিখোঁজ হন রাজ্যে। প্রতিটি ঘটনাতেই পুলিশের সন্দেহের তালিকায় ছিল ওই ব্যক্তি। তদন্তে কিনারা শেষমেশ আর হয়নি। অবশেষে তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েই চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের। পুলিশের আশঙ্কা, সন্দেহভাজন ধৃত ব্যক্তি সিরিয়াল কিলার হতে পারে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, কেরলের আলাপ্পুঝা থেকে ৬৫ বছরের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। এক নিখোঁজ মহিলার তল্লাশিতে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই মহিলাকে খুন করা হয়েছে। ৬৫ বছরের ওই সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত কয়েক বছরে আরও একাধিক নিখোঁজ মহিলার তদন্ত নতুন করে শুরু করেছে পুলিশ। তাঁদের খুন করা হয়েছে কিনা খতিয়ে দেখছে তারা। সেই ঘটনাতেও এই ব্যক্তির ভূমিকা রয়েছে কিনা, তদন্ত করছে পুলিশ।
সম্প্রতি ঘটনাস্থল থেকে এক অগ্নিদগ্ধ মহিলার দেহের টুকরো উদ্ধার করে পুলিশ। ২০টির বেশি হাড়ের টুকরো, দাঁত, মহিলার পোশাক উদ্ধার করা হয়েছে। আলাপ্পুঝার পল্লিপুরমে ওই ব্যক্তির বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। পাশাপাশি ফরেন্সিক ল্যাবে ওই দগ্ধ মহিলার হাড়গোড় পাঠানো হয়েছে পরীক্ষার জন্য।
পুলিশ জানিয়েছে, ৬৫ বছর বয়সি ব্যক্তির নাম সেবাস্টিয়ান সিএম। তিনি পেশায় রিয়েল এস্টেট ডিলার। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে জৈনাম্মা নামের এক মহিলা নিখোঁজ হয়েছেন। তিনি কোট্টায়াম জেলার বাসিন্দা ছিলেন। গত সপ্তাহে সেবাস্টিয়ানের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ। সেই বাড়ি থেকেই এক মহিলার দেহের টুকরো, রক্ত, দাঁত, পোশাক, ব্যাগ পেয়েছে তারা। যেগুলো ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠিয়ে ইতিমধ্যেই পরীক্ষানিরীক্ষা শুরু হয়েছে।
অন্যদিকে পুলিশ জানতে পারে, গত কয়েক বছরে আরও একাধিক মহিলার নিখোঁজের পিছনেও সেবাস্টিয়ান স্ক্যানারে ছিল। ২০০৬ সালে বিন্ধু পদ্মনভন এবং ২০১২ সালে আয়েশা নামের দুই মহিলা নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল। এখনও পর্যন্ত তাঁদের খোঁজ মেলেনি। বিন্দু জমি বিক্রির বিষয়ে সেবাস্টিয়ান জড়িত ছিল বলেও জানা গেছে। পরিবারের সঙ্গে থাকতেন না বিন্ধু। তিনি একাই থাকতেন। নিখোঁজ হওয়ার কয়েক মাস পরেই তাঁর ভাইয়ের সন্দেহ হয়। অবশেষে থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন ওই মহিলার ভাই।
বিন্ধুর জমির নথির বিষয়টি খতিয়ে দেখার সময় কিছু ভুয়ো নথি পুলিশের চোখে পড়ে। তখনই সেবাস্টিয়ানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনি বলেছিলেন, ভুয়ো নথির বিষয়ে তিনি জানতেন না। ২০২০ সালে আয়েশার নিখোঁজ হওয়ার পরেও পুলিশি জেরার মুখে পড়েছিলেন সেবাস্টিয়ান। কিন্তু ঘটনার তদন্ত আর এগোয়নি।
পুলিশের সন্দেহ, যে সকল মহিলারা অবিবাহিত এবং পরিবারের থেকে দূরে থাকেন, তাঁদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতেন সেবাস্টিয়ান। এরপর তাঁদের সম্পত্তি, নগদ টাকা, সোনার গয়না চুরি করে খুন করতেন। একাধিক সোনার দোকান, বেসরকারি ব্যাঙ্কে লেনদেন খতিয়ে দেখে সেবাস্টিয়ানের কানেকশন খতিয়ে দেখছে পুলিশ। সেবাস্টিয়ানের বাড়ির মধ্যে ছোট্ট একটি পুকুর রয়েছে। যেখান ক্যাট ফিশের থাকার আশঙ্কা করছে পুলিশ। পরপর নিখোঁজ মহিলার তদন্তের জন্য সিট গঠন করতে পারে পুলিশ।
