আজকাল ওয়েবডেস্ক: দিন কয়েক আগের ঘটনা। সরকার অনুমোদিত ভিসায় পাকিস্তান ভ্রমণকারী ভারতীয় তীর্থযাত্রীরা গিয়েছিলেন। অথচ তাঁদেরই কয়েকজনকে চরম হেনস্থা করে পাক সরকার। তা নিয়ে তীব্র আলোচনা হয়েছিল সেই সময়। সেসবের মাঝেই, ফের আলোচনা। তথ্য, এক ভারতীয় মহিলা সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাপ হওয়া এক মুসলিম যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার পর, তাঁকে বিয়ে করেন। ওই মহিলা নিজের ধর্ম বদলে, নিজেও মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
সর্বভারতীয় সুংবাদ মাধ্যম সূত্রে তথ্য, মঙ্গলবার, পাকিস্তানের আদালত, ওই ভারতীয় মহিলাকে হয়রানিতে নিষেধ করেছে। গুরু নানকের জন্মবার্ষিকী সম্পর্কিত উৎসবে যোগ দিতে এই মাসের শুরুতে ভারত থেকে ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানে প্রবেশকারী ২০০০ শিখ তীর্থযাত্রীর মধ্যে ৪৮ বছর বয়সী সরবজিৎ কৌরও ছিলেন। ১৩ নভেম্বর তীর্থযাত্রীরা বাড়ি ফিরে আসেন, কিন্তু কৌরের আর খোঁজ পাওয়া যায়নি।
লাহোরের একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা পরে জানান যে, ৪ নভেম্বর পাকিস্তানে পৌঁছনোর একদিন পর, লাহোর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে শেখুপুরা জেলার নাসির হুসেনের সঙ্গে কৌরের বিয়ে হয়। যখন তীর্থযাত্রীরা একই দিনে নানকানা সাহিবে যান, তখন কৌর সমাবেশ এড়িয়ে যান এবং হুসেনের সঙ্গে শেখুপুরা পৌঁছন। মঙ্গলবার, কৌর এবং হুসেন লাহোর হাইকোর্টে একটি আবেদন দায়ের করেন যে, পুলিশ শেখুপুরার ফারুকাবাদে তাঁদের বাড়িতে অবৈধ অভিযান চালিয়েছে এবং বিয়ে ভেঙে দেওয়ার জন্য তাদের উপর চাপ প্রয়োগ করেছে।
লাহোর হাইকোর্টের বিচারপতি ফারুক হায়দার পুলিশকে আবেদনকারীদের হয়রানি বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন। আবেদনে কৌর বলেন, একজন পুলিশ অফিসার দম্পতির প্রতি অযথা হয়রানি করেছেন এবং তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ করতে বাধ্য করেছেন। কৌর এও জানান, তাঁর স্বামী পাকিস্তানের নাগরিক, এবং তিনি নিজের ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর এবং পাকিস্তানি নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য ভারতীয় মিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত একটি ভিডিও ক্লিপে তিনি বলেছেন যে, ফেসবুকের মাধ্যমে গত ন'বছর ধরে হুসেনকে চেনেন। বক্তব্য, 'আমি একজন বিবাহবিচ্ছেদপ্রাপ্ত এবং হুসেনকে বিয়ে করতে চেয়েছিলাম; তাই, আমি এখানে এসেছি।' তাঁর অভিযোগ, পুলিশ এবং অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তাকে এবং তার স্বামীকে হয়রানি করছে।
এই ভ্রমণ নিয়েও সামগ্রিকভাবে জলঘোলা হয়েছিল তীব্র। পাকিস্তান হাই কমিশন জানিয়েছিল, তারা গুরু নানকের জন্মবার্ষিকী উদযাপনের আগে ভারত থেকে আসা ২,১০০ টিরও বেশি শিখ তীর্থযাত্রীকে ভিসা দিয়েছে। তবে, ওয়াঘা সীমান্তে, একটি বৃহত্তর শিখ প্রতিনিধিদলের সঙ্গে পাকিস্তানে প্রবেশকারী হিন্দুদের একটি দলকে হঠাৎ করেই এগিয়ে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। ঘটনার সূত্রপাত সেখান থেকেই। অভিযোগ, সেখানে ভারতীয় হিন্দু তীর্থযাত্রীরা চরম হেনস্থার শিকার হন। অথচ তাঁদের কাছে সেই সময় প্রয়োজনীয় সমস্ত নথি ছিল বলে জানা গিয়েছে। তাঁরা কেউ এ দেশের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব কিংবা অন্য কোনও খাতেও জনপ্রিয় কোনও ব্যক্তি ছিলেন না। তাঁরা প্রত্যেকেই সাধারণ নাগরিক ছিলেন। তীর্থযাত্রীরা দাবি করেছেন যে, তাঁদের সমস্ত কাগজপত্র ঠিক থাকা সত্ত্বেও, কর্মকর্তারা তাদের নানকানা সাহেব গুরুদ্বারে যেতে দেয়নি।
